সিরিয়ার সঙ্গে নতুন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে তুরস্ক। এই চুক্তির আওতায় দেশটিকে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম ও লজিস্টিক সহায়তা দেবে আঙ্কারা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এ তথ্য জানান তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এর আগে, সামরিক প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেন তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসের গুলের এবং সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা। এর পরপরই এই সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
গত মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও সেই সুযোগে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপের পর নিজ দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তুরস্কের সহায়তা চেয়েছিল সিরিয়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুরস্কের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানান, চুক্তির আওতায় সিরিয়ার সঙ্গে নিজেদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভাগ করবে আঙ্কারা। সেই সঙ্গে সিরিয়ার সক্ষমতা জোরদারে সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্র ব্যবস্থা ও লজিস্টিক উপকরণ সরবরাহ করে সহায়তা করবে তুরস্ক।
গত ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সরকার গঠিত হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ চলা দেশটি পরিচালনা করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে শুরু করে সরকার।
সম্প্রতি দেশটির দক্ষিণ প্রদেশের সোয়েইদাতে একদিকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বেদুইন জাতিগোষ্ঠীর সংঘর্ষ, অন্যদিকে দ্রুজ সংখ্যালঘুর যোদ্ধাদের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হন।
শুরু থেকে সিরিয়ার নতুন প্রশাসনকে সমর্থন করে আসছিল তুরস্ক। এমনকি বুধবার (১৩ আগস্ট) সিরিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট না করতে ইসরায়েল ও কুর্দি যোদ্ধাদের সতর্ক করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। পাশাপাশি দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটি পুনর্প্রতিষ্ঠা করতে তুরস্কের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আঙ্কারায় সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিদান আরও বলেন, মার্চে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত হওয়ার কথা থাকলেও মার্কিন মিত্র ও কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) সেই চুক্তির বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা করছে।
এদিকে, এসডিএফের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর হাসাকেতে একটি সম্মেলন আয়োজন করেন সিরিয়ার বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সেখানে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও নৃগোষ্ঠীগত বহুমতকে নিশ্চিত করে একটি বিকেন্দ্রীভূত দেশ গঠন করে নতুন সংবিধান প্রণয়ণের আহ্বান জানানো হয়।
তবে এই সম্মেলনের নিন্দা জানিয়েছে দামেস্ক। এমনকি বহুদিন ধরে নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও জুলাইয়ের শেষের দিকে এসডিএফের সঙ্গে প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকও বাতিল করে সিরিয়া সরকার।