দক্ষিণ চীন সাগরে সৃষ্ট সুপার টাইফুন রাগাসা ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে তাইওয়ানে। প্রবল ঝড় ও বৃষ্টির তাণ্ডবে মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ পর্যন্ত সেখানে ১৪ জন নিহত, অন্তত ১৮ জন আহত এবং ১২৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস।
হুয়ালিয়েন প্রশাসনের কর্মকর্তা লি কুয়ান-তিং সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঝড়ে জেলার বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের দমকল বাহিনীর হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ১৪, আহত ১৮। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক ডজন।” পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে নিখোঁজের সংখ্যা ১২৪ বলে জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, প্রবল বর্ষণের কারণে জেলার একটি হ্রদের বাঁধ ভেঙে শহরের বিশাল অংশ পানিতে ডুবে গেছে। অনেক এলাকায় পানির উচ্চতা দুইতলা ভবনের সমান হয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, রাগাসার প্রভাবে তাইওয়ান ছাড়াও হংকং ও দক্ষিণ চীন সাগরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রবল ঝড়ো হাওয়া এবং ভারী বর্ষণ হয়েছে। সোমবার থেকেই হংকংয়ে ১০ নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। সেখানে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে, ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল প্রায় ১৩ ফুট। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যান এক মা ও তার পাঁচ বছরের শিশু সন্তান।
সুপার টাইফুনে রূপ নেওয়া রাগাসা প্রথমে ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় কাগায়ান প্রদেশের বাতানিজ দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানে। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৩টার দিকে স্থলভাগে প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৩০ কিলোমিটার। এই দ্বীপপুঞ্জ থেকে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলের দূরত্ব প্রায় ৭১০ কিলোমিটার।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ চীন সাগরের একটি নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত এই ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফিলিপাইন, চীন ও তাইওয়ানের বিশেষজ্ঞরা এর শক্তিকে ‘সুপার টাইফুন’ আখ্যা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ডে এটি ক্যাটাগরি–৫ মাত্রার হারিকেনের সমান ধরা হচ্ছে।
ফিলিপাইন, তাইওয়ান, হংকং এবং চীনের গুয়াংডং প্রদেশে রোববার থেকেই ঝড়-বৃষ্টি চলমান। তবে তাইওয়ান ছাড়া এখনো ফিলিপাইন বা অন্য কোথাও নিহত বা নিখোঁজের আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকাজে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাগুলো কাজ করছে।