গাজা উপত্যকায় সম্ভাব্য ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল সম্মতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, “এই যুদ্ধবিরতির সময় আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে।” তবে ইসরায়েল কোন কোন শর্তে সম্মতি দিয়েছে—সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ট্রাম্প জানান, যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণে কাতার ও মিসর মধ্যস্থতা করছে। তিনি বলেন, “আমি আশা করি হামাস এ প্রস্তাবে সাড়া দেবে। কারণ, এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব তারা আর পাবে না। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয়। ওই ঘটনার পর গাজায় বড় পরিসরে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৬ হাজার ৬০০ জনের বেশি।
আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
এদিকে, ইসরায়েলের কৌশলগত মন্ত্রী রন ডারমার যুক্তরাষ্ট্রে বৈঠক করেছেন মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে। বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
অন্যদিকে, বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক শীর্ষ নেতা জানান, মধ্যস্থতাকারীদের নতুন প্রচেষ্টা চললেও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা এখনও অচলাবস্থায় রয়েছে। হামাস দীর্ঘদিন ধরে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে।
বর্তমানে গাজায় প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যেই সোমবার গাজা সিটির একটি সমুদ্রতীরবর্তী ক্যাফেতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এর পাশাপাশি উত্তর গাজা থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল, যেটিকে তারা বড় ধরনের সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি বলেই আখ্যা দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাস একটি তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছিল। তবে তা প্রথম ধাপের পরই ভেঙে পড়ে। দ্বিতীয় ধাপে ছিল জীবিত জিম্মি বিনিময়, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা।