ইসলামে কিছু বিষয় গোপন রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে হাদীস ও আলেমদের মতে উল্লেখ আছে। নিচে ইসলামে গোপন রাখার জন্য নির্দেশিত ৮টি বিষয় তুলে ধরা হলো...

🕋 নিজের দান-সদকা (সত্কর্ম)

কুরআন:

“যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান কর, তবে তা ভালো; আর যদি গোপনে দাও এবং দরিদ্রদের দাও, তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম।”

— (সূরা আল-বাকারা ২:২৭১)

👉 দান গোপনে করলে রিয়া (দেখানো) থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।

💍 ২. বৈবাহিক সম্পর্ক ও দাম্পত্যের গোপন কথা

হাদীস:

“কিয়ামতের দিনে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সেই, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে এবং তারপর সেই গোপন বিষয় প্রকাশ করে।”

- (সহিহ মুসলিম, হাদীস ১৪৩৭)

👉 স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবন অন্যের কাছে প্রকাশ করা হারাম।

💡 ৩. নিজের স্বপ্ন (বিশেষ করে ভালো স্বপ্ন)

হাদীস:

“যে কেউ ভালো স্বপ্ন দেখে, সে যেন কেবল যাকে ভালোবাসে তার কাছেই তা বর্ণনা করে।”

— (সহিহ বুখারি, হাদীস ৬৯৮৫)

👉 ভালো স্বপ্নে কখনো আল্লাহর বার্তা থাকতে পারে; সবাইকে বললে হিংসা বা বদনজর লাগতে পারে।

💬 ৪. কাউকে দেওয়া পরামর্শ বা ব্যক্তিগত আলোচনা

👉 যদি কেউ গোপনে পরামর্শ বা কথা বলে, তা অন্যকে বলা বিশ্বাসঘাতকতা।

হাদীস:

“যখন কেউ তোমার সঙ্গে কথা বলে এবং চারপাশে কেউ না থাকে, তা হলে তা আমানত (গোপনীয় বিষয়)।”

-(আবু দাউদ, হাদীস ৪৮৬৮)

💰 ৫. নিজের সম্পদ ও রিজিক

👉 নিজের ধন-সম্পদের পরিমাণ বা উৎস অহংকারবশত প্রকাশ করা উচিত নয়। এতে হিংসা, বদনজর ও ফেতনা সৃষ্টি হতে পারে।

হাদীস:

“তোমাদের প্রয়োজন পূরণ করো গোপনে, কারণ প্রত্যেক নেয়ামতের প্রতি হিংসুক থাকে।”

- (তাবারানি, আল-মুজাম আল-কবীর)

🕊️ ৬. অন্যের দোষ বা পাপ

👉 মুসলমানের দোষ গোপন রাখা একটি সওয়াবের কাজ।

হাদীস:

“যে মুসলমানের দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ কিয়ামতের দিনে তার দোষ গোপন রাখবেন।”

-(সহিহ মুসলিম, হাদীস ২৫৯০)

🙏 ৭. নিজের দোয়া ও ইবাদতের গভীরতা

👉 ইখলাস বজায় রাখতে দোয়া, নামাজ বা নফল ইবাদত গোপনে করা শ্রেয়।

হাদীস:

“গোপনে করা দান প্রকাশ্য দানের চেয়ে উত্তম, আর গোপনে করা নামাজ প্রকাশ্য নামাজের চেয়ে উত্তম।”

- (বায়হাকি, শু‘আবুল ঈমান)

🕰️ ৮. ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও উদ্যোগ

👉 পরিকল্পনা বা লক্ষ্য প্রকাশ করলে বাধা বা হিংসা সৃষ্টি হতে পারে।

হাদীস:

“তোমাদের প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করো গোপনে, কারণ প্রত্যেক নেয়ামতের প্রতি হিংসুক থাকে।”

-(তাবারানি, হাদীস ৯২৫৭)