পথিক মোস্তফা

০৪.

কবি নয়ন আহমেদ ভোরের প্রতীক্ষা করেন। তিনি ধ্বংসের মধ্যে নতুনের হাতছানি দেখেন। বিশ্বে আজ যেখানেই মুসলমানরা মার খাচ্ছে, যেখানে বিধর্মীরা বিনষ্ট করছে ইসলামের ঐতিহ্য সেখান থেকেই নতুন করে উদ্দীপ্ত হয়ে প্রজন্মকে জেগে ওঠার আহ্বান জানান কবি। চরম মানবিক আবেদন ফুটে ওঠে কবির কণ্ঠ জুড়ে। কবির কলমে প্রকাশিত হয় হতাশা নয়, আশার বাণী। বিশ্বের অনেক দেশেই চলছে পশ্চিমাদের পেশিশক্তি আর সামরিক আগ্রাসন। মুসলমানদেরকে নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য পাঁয়তারা করছে ইহুদি-নাসারার দল। তাইতো কবি তাঁর কবিতায় জোগান সাহস, প্রদান করেন প্রেরণার আলো। আফগান ক্ষুধার্ত ও আহত দুই শিশু যাদেরকে খাদ্যের বদলে ছোড়া হয়েছিলো বোমা, সেই ভাই-বোন ‘পারমিনা’ আর ‘সাথ’ কে নিয়ে কবি লেখেন আমেরিকাবাহিনীর এক অকথ্য নির্যাতনের দলিল; আর বোন পারমিনাকে শোক ভুলে জাগ্রত হতে বলেন, শক্তি আর সাহস নিয়ে। এদেরই গড়তে হবে মুসলিম-বিশ্ব। কবির ভাষ্যÑ

ওÑপারমিনা, তোমার ভাই সাদ কোথায়? ওকে ডাকো। ওর ক্ষত ভালো হয়েছে? বিনোদনের মতো ঘুড়ি ওড়াতে পারে? তোমার আব্বা তো রোদ আনতে গিয়ে আর ফিরে এলো না! শোক ওড়নায় বেঁধো না, মা-মনি। ব্যথা হবে। দাঁড়াতে পারবে না। সুঁই আর সুতো নিয়ে এসো! ছেঁড়া আফগানের মতো পৃথিবীটা সেলাই করতে হবে। আবার আবেগ বানাবে না?

ভোর হয়েছে। ওড়নায় ইতিহাসের অগ্নিপিণ্ড বেঁধে নাও। মা-মনি, এবার ঝিকমিক করবে পাকা ধানের মতোন মানুষের স্বপ্ন-সম্ভাবনা।

কবির কবিতায় ইসলামী মূল্যবোধের আরো কিছু উজ্জ্বল দৃষ্টান্তÑ

হ্যাঁ, সে একটা দু-কামরার ঘর।

হ্যাঁ, সে একটি ঢাকনাযুক্ত বিস্ময়।

আর আমি তখন হেরাগুহার মতোন সৌন্দর্য ও চুম্বনের আরাধনা করি।

.........................

হঠাৎ একদিন একটা শোকসংবাদে বিমর্ষ হয়ে যাই আমরা। পাশের ভাড়াটে রহমান সাহেব

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন।

আমরা তখোন পাঠ করিÑইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনÑ

নিশ্চয়ই আমরা প্রেমময় আল্লাহর কাছ থেকে

এসেছি, আবার তাঁর কাছেই ফিরে যাবো।

.................................

না, আমি কিছুই হারাতে চাই না।

আমার এই ভাড়াবাড়ির মতো দুনিয়াদারিÑ অনুমোদন করো, প্রভু।

এইÑ এইখানে সিগনেচার করো।

বার্জারের মতো রকরা এরাই আমারÑ আহাল; পরিজন।

প্রভু, এই কাঁচা রঙ স্থায়ী করো।

একজন বিশ্বাসী মানুষের আনন্দ, ভালোবাসা তার বিশ্বাসকে ঘিরে। মহান রবের প্রতি আস্থাই তাকে সর্বাবস্থায় সুখের সন্ধান দেয়। তিনি কখনো হতাশ হন না। কারণ তিনি জানেন, জীবনের ভালো-মন্দ সবকিছুরই দাতা একমাত্র মহান আল্লাহ। তাইতো সর্বদাই তার আনন্দ, তার সুখ। (চলবে)