ওমর বিশ্বাস

এদের সম্পর্কে আসিফদের কোনোরকম ধারণা নাই। তারা জানে না ওর ভিতরে কি আছে? কারা আছে। নিজেরা আলাপ-আলোচনার সময় ওদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করছিল। নানারকম কথা বলছিল। তবে নিজেদের প্রশ্নের জবাবগুলো তাদের বের করতে হবে। এর জন্য লেগে থাকতে হবে। কাজ করতে হবে। তারা ঠিক করেছে যদি কোনোকিছু তাদের সামনে আসে তাহলে বিষয়টি সিরিয়াস হিসেবে নেবে।

তারা ভাবে এরা এলিয়েন না তো!

এলিয়েনদের ধারণা পৃথিবীর মানুষ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। সামনে এদের ভবিষ্যৎ খুব খারাপ। মানবিক বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের নামে এদের এখানে এসে কাজ শুরু করার এটাই উপযুক্ত সময়। এখনই যদি এখানকার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না যায় তাহলে তাদের উদ্দেশ্য পরে বাস্তবায়ন করা কঠিন হতে পারে। সব মানুষ যখন জেনে যাবে তখন তারা ঝামেলা করতে পারে। এদের তখন নিজেদের মতো লাইনে আনা কঠিন হবে।

তারা মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য সফল করতে চায়। মানুষের ভিতর এই ধারণা সৃষ্টি করতে হবে যে তারা খুব বিপদের মধ্যে আছে। তাই তারা ঠিক করেছে এই কাজ করার এটাই উত্তম সময়। এলিয়েনরা এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছে। যদিও তারা সফল হবে কিনা এ ব্যাপারে কোনো সমাধানে এখনো পৌঁছাতে পারেনি। এটা নিয়ে তাদের একটু দ্বিধা আছে। একটু সমস্যা হচ্ছে সময় নিয়ে। এখনকার মানুষদের নিয়ে তাদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তাই নির্দিষ্ট করে তারা এর জন্য সময় বেঁধে দিতে পারেনি। তারা যতদিন লাগে এই কাজে লেগে থাকবে। তাদের কোনো অর্থবিত্তের সমস্যা নাই। যখন যা লাগছে তাই খরচ করছে।

তবু তারা ধরে নিয়েছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিকল্পনা মতো কাজ করতে পারলে অর্ধেক কাজ শেষ করতে পারবে।

পৃথিবীর মানুষকে মানবিক বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করতে হলে তাদের ভিতর থেকে সাহায্য করার লোক লাগবে। এখানকার মানুষ যেন এদের সহযোগিতা করে সেভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই পৃথিবীর মানুষই মানুষদের রক্ত, রগ, হাড়, গোস্ত সবই ভালো করে চেনে। তাই তাদের একদল লোক বাছাই করে নিতে হবে এদের ভিতর থেকে। নিজেদের মতো করে গড়ে নিতে হবে তাদের। এর ফলে এরা নিজেরাই এক সময় নিজেদের লোকদের নিয়ে পরবর্তীতে কাজ করতে পারবে এলিয়েনদের মনমতো।

কোনো অবস্থাতেই কখনোই মূল উদ্দেশ্য প্রকাশ করা যাবে না।

এই কাজগুলোর জন্য মানুষকে বোঝানো খুব জরুরি। তাদের হাত করতে হবে। দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে হবে যেভাবেই হোক। এ ধারণা তাদের মাথায় ঢোকাতে হবে যে তোমাদের বিপর্যয়ের কারণ তোমরাই। আর তোমরাই পারো তোমাদের পৃথিবীকে উদ্ধার করতে।

প্রথমে মানবিক করার নামে নিজেদের বিষয়গুলোকে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। তারা দখল করতে থাকবে একটার পর একটা জায়গায়। মানুষের ভিতর মিশে গিয়ে মানুষকে কাজে লাগিয়ে তাদের উদ্দেশ্য সফল করবে।

তাদের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য শুধু হাইকমান্ডই জানে।

পৃথিবীর মানুষ আজ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি এটাই তাদের বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি।

প্রথমবারের মতো ওই রাতে যখন তারা নেমে আসে পৃথিবীতে তখন কিছু প্রাথমিক কাজ সেরে নেয়। কয়েকটা কাজ ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একদল জঙ্গলের ভিতর দিয়ে উত্তর দিকে দুই কিলোমিটার ভিতরে চলে যায়। আরেকদল দক্ষিণ দিকে যায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত। এমন করে বাকি দুই দল পূর্ব-পশ্চিমে গিয়ে সবাই মিলে চার কিলোমিটার ব্যাসের সার্কেল তৈরি করে আশপাশের বেশকিছু তথ্য সংগ্রহ করে। যেহেতু তাদের হাঁটা চলাও নিঃশব্দ, এরপর একসময় তারা লোকালয়ে সহজে ঢুকে যাবে। এ কাজ করতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। আর রাতের বেলায় বাইরে থেকে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কথা না। (চলবে)