ওমর বিশ্বাস
এদিকে এলিয়েনরা শহরে যাওয়ার চিন্তা করছে। কিভাবে মানুষের ভিড়ে মিশে যাওয়া যায় তার জন্য অল্প অল্প করে এগুতে হবে। এটা তাদের এসাইনমেন্টের অংশ। এলিয়েনরা মানুষের মতো দেখতে হলেও শরীরের মাংসপেশীগুলো মানুষের মতো তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাদের সাথে মানুষের একটা পার্থক্য থেকেই যাচ্ছে। যদিও কেউ হুট করে টেরই পাবে না। এই পার্থক্য বুঝতে একটু সময় লাগবে। অন্যদিকে এলিয়েনদের কথায় কিছুটা টান আছে, এটা বুঝতে মানুষের একটু সময় লাগবে। মানুষও হুট করে বুঝতে পারবে না। পৃথিবীর মানুষ ওদের মতো এভাবে কথা বলে না। টানটা কৃত্রিম ধরনের। বুঝতে পালে শুনে মনে হবে যন্ত্রের ভিতর থেকে আসছে। তারা যখন কথা বলে মুখ হা করে কথা বলে ঠিকই তবে মানুষের মুখ দিয়ে কথা বলার সময় যেমন হাওয়া বের হয় সেভাবে তাদের মুখ দিয়ে হাওয়া বের হয় না।
এরকম কয়েটা বিষয় নিয়ে তাদের সমস্যা আছে। এসব নিয়ে তাদের ভিতর গবেষণা হচ্ছে। চিন্তা হচ্ছে। এখনো শহরের ভিতর গেলে তারা এসব বিষয় কিভাবে মোকাবিলা করবে তার সমাধান বের করতে পারেনি। এর পিছনে বহু সময় দিয়েছে। এদিকে তাদের অভিযানে নামার দরকার। অনেক সময় নিয়ে নিয়েছে তারা বিভিন্ন কাজের জন্য। তাই মনুষ্যরূপ ঠিক রেখে দুই একটা সমস্যা নিয়ে কাজ চলছে ঠিকই। কিন্তু অভিযানে নামতে হয়েছে ওসব নিয়েই। তাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে প্রতিদিন এইসব নিয়ে অবিরাম গবেষণা চলছে। তারা নিজেদের আরো পরিবর্তন করতে চায়। সাথে সাথে পৃথিবীর মানুষদেরকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়।
আসিফ ভেবে পায় না তাকে ওরা কেন ধরবে? সে তো এমন কোনো কাজ করেনি যা অন্যের জন্য কষ্টকর। কারোর কোনো ক্ষতি করেনি। কারোর সাথে ঝামেলায় যায় না। কি এমন করেছে যে তাকে ওভাবে ঘিরে ফেলা হয়েছে? হতে পারে এটা মনের ভুল। ভুল যদি না হয় তাহলে? তাদেরকে আবার শহরের ভিতর দেখা গেছে। এরা মানুষের মতো দেখতে। সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনোভাবেই এদের দেখে সন্দেহজনক কিছু বোঝা অসম্ভব। ইদানিং এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছে তাদের এলাকায়, বাজারে অচেনা মানুষ দেখা গেছে। এভাবে এখানে আগে এতো অচেনা মানুষ দেখা যায়নি। কিছু কিছু মানুষের কথা বলার ঢং দেখে কারো কারো খটকা লাগে। এই স্টাইলে কথাবার্তা আগে কখনো শোনেনি। এরা বেশিক্ষণ এক জায়গায় থাকে না। কারোর সাথে সেভাবে তেমন গল্প করে না। এরা কোন অঞ্চলের মানুষ? সে প্রশ্ন করার সময় তারা দেয় না। আসিফ ভাবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটা বিষয় নিয়ে। নিশ্চয় কোনো না কোনো ঘটনা ঘটছে। হতে পারে তাদের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নাই। এসব ওর নিজের ধারণা ছাড়া অন্য কিছু না। আবার ভাবে, থাকতে পারে। কোনো মানুষের হয়তো কোথাও কোনো স্বার্থের ব্যাঘাত হয়েছে।
সে ঠিক করেছে ঠান্ডা মাথায় বিষয়টা দেখতে হবে। সাবধান থাকতে হবে। নিজে সাবধানে চলাফেরা করবে। বন্ধুদের সাথে কথা বললে তারা একই পরামর্শ দিয়েছে। ঠিক হয় সবাই যাই করুক একসাথে করবে। একসাথে সিদ্ধান্ত নেবে। একা একা পারতপক্ষে দূরে কোথাও যাবে না। সবশেষে সিদ্ধান্ত হয়, এর পিছনে কোনো রহস্য আছে কি না যেভাবে হোক খুঁজে দেখবে তারা। এর জন্য কয়েকটা বিষয়ে সমাধানে পৌঁছাতে হবে। মোবাইল সেট ব্যবহার করে প্রত্যেকে বাসায় দেখার চেষ্টা করবে আসিফ যা দেখেছে সে রকম কিছু ঘটে কিনা। (চলবে)