সায়ীদ আবুবকর

বাঙালির স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা যত প্রবল, তেমনটি আর পৃথিবীর কোনো জাতির মধ্যে পরিলক্ষিত হয় না। পরাধীনতার গ্লানিই মূলত তাকে বারবার প্রলুব্ধ করেছে বিদ্রোহী হতে এবং স্বাধীনতার জন্য হাহাকার করতে। একটা জাতির সবচেয়ে সচেতন ও সংবেদনশীল মানুষ হলেন কবি-সাহিত্যিকরা। সঙ্গত কারণেই কবিদের লেখনিতে ফুটে উঠেছে স্বাধীনতার আকুতি। ভারতবর্ষে প্রথম স্বাধীনতার কবিতা লেখেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সেটি ছিলো অবশ্য ইংরেজিতে। নাম ‘কিং পুরু’। বাংলা কবিতায় মধুসূদনের স্বাধীনতার আওয়াজ তুলতে দেখা যায় তাঁর মেঘনাদ বধ কাব্যে-

জন্মভূমি রক্ষাহেতু কে ডরে মরিতে?

যে ডরে ভীরু সে মূঢ় শত ধিক্ তারে।

মধুসূদন মূলত রাবন-তনয়ের আত্মাহূতির মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমকেই ফুটিয়ে তুলেছেন। আর এখানে লংকা-আগ্রাসী রামের বাহিনী হলো মূলত ভারতের স্বাধীনতা হরণকারী ইংরেজ।

কবি রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায়ের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা দেখতে পাই বিস্ময়করভাবেÑ

স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়?

দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে, কে পরিবে পায়?

মজার ব্যাপার হলো, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮২৭-১৮৮৭)বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে জন্মগ্রহণ ও মৃত্যবরণ করলেও তিনি ইংরেজদের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার আকাক্সক্ষা করেননি, স্বাধীনতা পেতে চেয়েছেন পাঠান-যবনদের কাছ থেকে। কবির কথায়Ñ

এ কথা যখন হয় মানসে উদয় হে, মানসে উদয়।

পাঠানের দাস হবে ক্ষত্রিয়-তনয় হে, ক্ষত্রিয় তনয়।।

তখনি জ্বলিয়া উঠে হৃদয়-নিলয় হে, হৃদয়-নিলয়।

কবি কবিতার শেষাংশে বলছেন,

যদিও যবন মারি চিতোর না পাই হে, চিতোর না পাই।

স্বর্গসুখে সুখী হব, এস সব ভাই হে, এস সব ভাই।।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হারানো মুসলিমদের প্রতি রঙ্গলালের কেন এ আক্রোশ, তা বুঝা মুশকিল। তাঁর উগ্র সাম্প্রদায়িক চেতনা তাঁকে খাঁটি কবি হতে দেয়নি বঙ্কিমের মতো। এই রঙ্গলাল ছিলেন হুগলি হাজী মহসিন কলেজের ছাত্র। বঙ্কিমও এই মহসিন কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং হাজী মহসিন ফাণ্ডের বৃত্তির টাকায় লেখাপড়া করেন; পরে চরম মুসলিমবিদ্বেষী হন। রঙ্গলাল ও বঙ্কিম ছিলেন সমসাময়িক এবং ইংরেজ শাসনামলে বসবাস করে কেন তাঁরা মুসলিমবিদ্বেষী হলেন, সেটা বড়ই বিস্ময়কর।

স্বাধীনতার প্রকৃত কবি নজরুল। নজরুলের স্বাধীনতার ডাক কেবল স্বদেশের জন্য ছিলো না, এটা ছিলো সমুদয় শাসন, শোষণ, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে।

সত্য যে, নজরুলের কবিতার একটা বড় অংশ ইংরেজ খেদাও আন্দোলন দ্বারা প্রভাবিত, যদিও তিনি তা রূপকের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। নজরুল যখন বলেন ‘ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদচিহ্ন’ তখন ভগবান বলতে যে অত্যাচারী ব্রিটিশরাজকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে, তা বুঝা যায়। ‘শিকল পরা ছল মোদের এই শিকল পরা ছল/ শিকল পরেই শিকল তোদের করবো রে বিকল’ এখানে ‘তোদের’ বলতে যে ইংরেজদেরকে বুঝানো হয়েছে, বুঝা যায়। ‘কারার ঐ লৌহকপাট/ ভেঙে ফেল, কর রে লোপাট এখানে এ-কারা যে জুলুমবাজ ব্রিটিশরাজেরই কারাগার, তাও স্পষ্ট। নজরুল তাঁর প্রতিবাদের ভাষা প্রতীকী করায় এটা শাশ্বত ও কালজয়ী হয়ে উঠেছে।

পাকিস্তান আন্দোলন যখন হচ্ছিল, তখনও কবি-সাহিত্যিকরা কিন্তু আন্দোলিত হয়েছিল। কবি ফররুখ আহমদকে প্রায়শ অভিযুক্ত করা হয় পাকিস্তানের পক্ষে কবিতা লেখার কারণে। তখন তো দেশ ছিলো পাকিস্তান। স্বদেশের জন্য কবিতা লেখা একজন কবির জন্যে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। পাকিস্তানের পক্ষে তখন কলম ধরেননিই বা কে? যে সুফিয়া কামাল স্বাধীন বাংলাদেশে ইসলামবিরোধী আন্দোলনে কঠোর ভূমিকা পালন করেন, তিনিই ১৯৫৪ সালে কায়েদে আজম জিন্নাহর জন্মদিন উপলক্ষে ‘হে মহান নেতা’ শিরোনামে একটি কবিতা রচনা করেন। কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের সচিত্র বাংলা মাসিক পত্রিকা মাহে নও-এর সে বছরের ডিসেম্বর সংখ্যায়।

কায়েদে আজম! হে মহান নেতা সাড়া দাও, দাও সাড়া, / তোমারে ভোলেনি, আজিও ডাকিছে বঞ্চিত সর্বহারা / তোমারে হেরেনি, শুনেছিল শুধু তোমার কন্ঠবাণী; / জেনেছিল তারা, তুলেছে পতাকা তোমার বজ্রপাণি অবিচল ন্যায়ে, সত্যের আলো ইসলামী ছায়াতল বহু যুগান্ত আঁধার অন্তে আবার সমুজ্জ্বল হয়ে এল, নীল নভ হতে হাসে অর্ধচন্দ্র-তারা / শ্যামা বসুমতী বিছায়ে আঁচল নিশীথ তন্দ্রাহারা

খুবই দুর্বল একটি কবিতা। ‘সাড়া দাও, দাও সাড়া’ (৪+৪=৮)-এর সাথে ‘বঞ্চিত সর্বহারা’ মেলে না কারণ ‘বঞ্চিত সর্বহারা’ হলো ৪+৫=৯ মাত্রা; হতে হতো ৮ মাত্রা। অথচ সুফিয়া কামালের মতো দুর্বল কবিরা কি দাপটে পদদলিত করে গেছেন বাংলা ভাষার অত্যন্ত শক্তিশালী কবি ফররুখ আহমদকে, যাঁকে বলা যায় নজরুলের পরে বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় কবি।

মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কবিরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অজস্র কবিতা লিখেছেন। আধুনিক কালে বাংলা ভাষায় একজনও কবি-সাহিত্যিককে পাওয়া যাবে না, যিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দু-চরণ লেখেননি। বাস্তবিকই ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সাহিত্যে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পঞ্চাশের শামসুর রাহমান-আল মাহমুদ থেকে শুরু করে নব্বইয়ের দশকের কবি-সাহিত্যিকরা অমর সাহিত্য রচনা করে গেছেন ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে।

জাতির জীবনে আবার নেমে আসে বিপদের ঘনঘটা। লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা হারিয়ে যেতে বসে জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা আধুনিক কালের রামেসেস খ্যাত শেখ হাসিনার হাতে। গুম-খুন-নৈরাজ্যের এক নরকপুরীতে পরিণত হলো সারা দেশ। দ্বিতীয় স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বিপ্লবী ছাত্রসমাজ নেমে আসে রাজপথে। তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সাধারণ মানুষ। ফ্যাসিস্ট হাসিনা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে। শেষপর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় আধুনিক কালের নারী-ফেরাউন। দুই হাজার ছাত্র-জনতার শাহাদাতের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা।

৫ আগস্ট জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। জুলাই বিপ্লব তথা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা নিয়ে কবি-সাহিত্যিকরা যেভাবে সরব হয়েছেন সারা দেশে, তা সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার। পত্র-পত্রিকার উপর স্বৈরাচারী সরকারের প্রবল নিয়ন্ত্রণ থাকা সত্তেও বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকরা পত্রিকার পাতায় উগরে দেন তাঁদের প্রতিবাদ ও ক্ষোভ। যারা দেশ ও মানুষকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসে না, যারা ছিলো স্বৈরাচারের নির্লজ্জ দোসর, তারা ব্যতীত প্রায় সব কবি-সাহিত্যিকই জুলাই বিপ্লবের অংশ হয়ে যান। এঁদের মধ্যে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মাহবুব হাসান, আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর ফিরোজ, মুজতাহিদ ফারুকী, সোলায়মান আহসান, হাসান আলীম, মোশাররফ হোসেন খান, তমিজ উদদীন লোদী, জগলুল হায়দার, সায়ীদ আবুবকর, জাকির আবু জাফর, মনসুর আজিজ, সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব, নয়ন আহমেদ, বাছিত ইবনে হাবিব, মহিবুর রহিম, মাহফুজুর রহমান আখন্দ, সাজ্জাদ বিপ্লব, রেদওয়ানুল হক, ফজলুল হক তুহিন, আফসার নিজাম, তাজ ইসলাম, তাসনীম মাহমুদ, হাসান নাজমুল প্রমুখ।

দ্বিতীয় স্বাধীনতার অন্যতম সিপাহসালার কবি মাহবুব হাসান। বিপ্লবের শুরু থেকে বিজয়ের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত অগ্নিচুল্লির মতো দাউদাউ করে জ্বলেছেন তিনি। তাঁর কলম বর্ষণ করে গেছে অবিরাম প্রতিবাদের শব্দবোমা। তাঁর অসাধারণ একটি কবিতা ‘বোবা-কালা জনগণ’। শ্লেষাক্ত এ কবিতায় কবি বলেন-

জনগণ কি বোবা-কালা হয়ে গেছে?

আমি ভাবছি মানুষের সহ্য ক্ষমতা

বা প্রতিবাদের গৌরব কি মিথ?

চৌদিকে সন্ত্রাস ওঁৎ পেতে আছে চিতার চৌকিতে

রাজনৈতিক ছত্রপতির ছায়ার ভেতরে!...

তারা ভুলে গেছে

মিছিলের মানে, স্লোগানের মর্ম-ধর্ম,

প্রতিবাদের শব্দগুলো কি গ্রীষ্মের ছুটিতে বেড়াতে গেছে?

কবি আবদুল হাই শিকদার ‘শহীদ আবু সাইদ’ কবিতায় কবি বলেন-

সাইদ সাইদ বলে ডেকে ডেকে পাড়া মাত করি,

ও পুত্র, বাপ আমার, ফিরে আয় ফ্যাসিবাদ উৎখাত করি।

সমস্ত বাংলা আজ সাইদ সাইদ-

সাইদের রক্ত আনে রাহু মুক্ত ঈদ ।

প্রবাসী কবি তমিজ উদ্দীন লোদী সুদূর বিদেশবিভুঁই থেকে কলম দিয়ে যুদ্ধ করে গেছেন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। তাঁর ‘ফেটে পড়ুক আশার গরিমা’ কবিতায় তিনি বলেন,

ঝড়ের পর মানুষ ঊর্ধ্বমুখি

বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছে

অপেক্ষমান মানুষেরা

বৃষ্টির জন্য, বৃষ্টিতে ধুয়ে যাবার পর

ঝকঝকে রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিবসের প্রতীক্ষায় রয়েছে ।

এতো এতো আলো কোথায় ছিল

আলোর পাখিরা নিয়ে এলো আলো

ঘোরতর অন্ধকারে জ্বলে ওঠা , ফিনিক দেয়া আলো

ক্রমশ বিস্তৃত হলো।

কবি জাকির আবু জাফর তাঁর ‘দীপ্ত বাংলাদেশ’ কবিতায় বলেন-

স্বৈরাচারীর জগদ্দল আজ শেষ

নতুন স্বপ্নে হাসছে বাংলাদেশ।।

সংকট আর সংগ্রামে দৃঢ বল

অনড় অটল বিশ্বাসে উচ্ছ্বল।

আত্মগর্বা উচ্চকণ্ঠ-রব

মানেনি কখনো, মানবে না পরাভব।

বীর-বীরত্বে বিস্ময় অনিঃশেষ

হাজার যুগের মুক্ত বাংলাদেশ।

আমার ‘ঝরা পাতার নৃত্য’ কবিতাটি ২০২৪-এর ২৩ জুলাই তারিখে লেখা। আমি যা আঁচ করেছিলাম, তা যে সত্য হবে, তা আমার ধারণাতেই ছিলো না।

পুকুরের পানির মতো এ নিস্তরঙ্গ মৃত্যুর শহরে আচমকা এ-কি

জীবনের উন্মাদনা! যে ছিলো অচল, ছুটছে সে উল্কার গতিতে।

যে ছিলো নিথর, উড়ছে সে ঈগলের অধীর ডানায়। কী হলো হঠাৎ

এই ভূতের শহরে, বয়সের ভারে ন্যূব্জ বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা ফিরে পেয়ে

হারানো যৌবন, ছুটছে ক্ষিপ্রবেগে যেন ষাঁড়; তরুণ ও তরুণীরা যেন ঝড়,

ভেঙেচুরে ফেলছে সব হারকিউলিসের মতো মুখ থুবড়ে পড়ছে স্ফিংস,

কারুনের বালাখানা, ফারাওয়ের মসনদ।...

থরথর করে কাঁপছে স্বৈরাচার; শুকনো বোঁটায় ঝুলতে থাকা পাকা

সিঁদূরে আমের মতো দুলছে দুঃশাসন যৌবনের ঝড়ে। এ-কি জীবনের

উন্মাদনা দিকে দিকে! যে ছিলো নিষ্প্রাণ, আজ সে জীবন্ত, যে ছিলো নিশ্চল,

আজ সে ঝটিকা হয়ে ছুটছে অশ্বের মতো। তাই দেখে মৃত্তিকায় পড়ে থাকা

ঝরা পাতারাও জীবন্ত ফড়িং হয়ে নৃত্য জুড়ে দেছে একসাথে উন্মত্ত বাতাসে।

বলেছিলাম”থরথর করে কাঁপছে স্বৈরাচার; শুকনো বোঁটায় ঝুলতে থাকা/ পাকা সিঁদূরে আমের মতো দুলছে দুঃশাসন যৌবনের ঝড়ে।“ সিঁদুরে আমটি সত্যিসত্যিই যে ৩৬ জুলাই অর্থাৎ ৫ আগস্টে ঝরে যাবে, কেই বা বুঝতে পেরেছিল তা!

ফজলুল হক তুহিন তাঁর ‘গণজোয়ার’ কবিতায় বলেন-

পূঞ্জীভূত মেঘের ভেতর অনেক খরার ক্ষোভ গর্জনের জন্য একত্রে প্রস্তুত

পৃথিবী কাঁপিয়ে বাঁক ফেরার বর্ষণে আজ প্লাবনের নতুন আশ্বাস

তাই বুঝি চারদিক আগ্নেয় লাভার মতো সুনামির মতো

গণজোয়ারের বাঁধভাঙা ঢেউ

আছড়ে পড়েছে রাজপথে ফুটপাতে অলিতে গলিতে

মায়ের আদর সবুজের সমারোহ বন্ধুদের আড্ডা-

সব ভুলে আবু সাঈদের হাত দুটি

হয়ে গেছে দোয়েলের ডানা- অলৌকিক ডানার উড়াল

বুক তার বাংলাদেশের রক্তাক্ত পতাকা!

দেশ পুনরায় স্বাধীন হওয়ার পরপরই একের পর এক ‘দ্রোহের কবিতা’ সংকলন প্রকাশিত হতে থাকে। জুলাই বিপ্লব নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে থাকে বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন। এর মধ্যে সীমান্ত আকরামের ‘দ্রোহের কবিতা’ সংকলনটি উল্লেখযোগ্য। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের কবিদের কবিতা নিয়ে প্রথম ও একমাত্র কবিতা ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে অমলকুমার মণ্ডলের কবি-তীর্থ পত্রিকা। মনসুর আজিজ প্রকাশ করেন আড্ডাপত্র গণঅভ্যুত্থানের কবিতা সংখ্যা। ৫ আগস্ট বেশিদিন আগেকার ঘটনা নয়। কয়েক মাসের মধ্যে বাংলা সাহিত্য-জগতে জুলাই বিপ্লব যে যুগান্তকারী প্রভাব বিস্তার করেছে তা বুদ্বুদের ন্যায় হারিয়ে যাবে না বলে আমার বিশ্বাস কারণ এটা বাঙালির জীবনকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে, উপহার দিয়েছে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসন থেকে মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ।