ওমর বিশ্বাস
এলিয়েনরা প্রথমবার ধরা পড়ে আসিফের কাছে। আসিফের জানালায় গ্রিলের সাথে নারকেল গাছের একটা পাতা লেগে আছে। গাছটা একটু দূরের হলেও নারকেল গাছের পাতাগুলো অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। আসিফ স্কুল থেকে আনা সেই তারগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করছিল। এর মধ্যে কেমনে কেমনে একটা তার ওই পাতার সাথে লাগে। সাথে সাথে পাতাগুলো গিরগির করে ওঠে। খুব হালকা স্পার্কের সৃষ্টি হয়। আসি বৃষ্টিতে ভেজা নারকেল গাছের পাতায় এই স্পার্ক করা দেখে খুব অবাক হয়। সে ভাবে কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু‘ বৃষ্টির সাথে এই টুকরো তারের কি সম্পর্ক? সে নিজেকে বোঝায়, সম্পর্ক থাকবে কেন? তা কি করে হয়? সম্পর্ক হয়তো আছে। খুুঁজলে পাওয়া যাবে। আবার ভাবে, এটা তার মনের ভুল। একটা ধারণা মাত্র।
আসিফ কিছুটা অস্থির হয়ে পড়ে। কী যা তা ভাবছে সে। এগুলোতে মনই দেবে না। তাই সে পড়ায় মন দেয়।
এখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে এটা নিয়ে ঘটে যায় তুলকালাম কাণ্ড। গোটা উপগ্রহে লালবাতি জ্বলে ওঠে। তারা নড়েচড়ে বসে।
সেদিন কেমনে যেন রশিদ সাহেবের সামনে পড়ে যায় এলিয়েনরা। তাদের ওভাবে সামনে আসার কথা না। এলিয়েনরা ভাবতেও পারেনি ওভাবে তিনি মুখোমুখি হবেন। হুট করে যখন সেন্সরে সারা পড়ল তখন সবাই যে যার মতো সরে পড়ে দুইজন বাদে যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। তারা আসলে সংখ্যায় কতো ছিল রশিদ সাহেব জানেন না। এলিয়েনরা এর জন্য খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে তাদের বলয়ের নিরাপত্তা নিয়ে। ফ্রিকোয়েন্সির ওয়ালে ছিদ্র আছে তা জানা গেছে। কিš‘ এতো সূক্ষ্ম যে কোথায় ছিদ্রটা এখনো বোঝা যা”েছ না। আর এটা কোথা থেকে আসলো সে প্রশ্ন তো আছেই?
সমস্যা হলো যে পর্যন্ত কাজই হোক ভোর হলেই তাদের ¯’ান ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে দীর্ঘ সময় অব¯’ান করার ব্যাপারে মানা করা আছে। তাই তারা রুটিন ফলো করে কাজ করছে। একটু বেশি কাজ করলেই হয়তো এতো দিনে বিষয়টা বের করে ফেলতে পারতো।
তারা এখানে আসার পরপরই নদীর পানি আর গাছের পাতার বাষ্পের সংযোগে নতুন তরঙ্গ প্রবাহ তৈরি করে নিয়েছে।
এ কাজটা সফলতার সাথে করতে পারায় তাদের অনেক কাজই সহজ হয়ে গেছে। বিশেষ করে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং বাহিরের অভিযানে যারা থাকছে তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যাব¯’াকে কাজে লাগিয়ে মাঠটার চারপাশ ঘিরে নিজেদের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছে। এটা তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাদের ধারণা ছিল এই নিরাপত্তা ব্যব¯’া সহজে নষ্ট হবে না। অথচ এখানে আসার অল্প কয়েকদিনের মাথায় বিপত্তি ঘটে গেছে।
এ নিয়ে তারা খুব চিন্তিত। একই সাথে উদ্বিগ্নও।
এলিয়েন দুজন সতর্ক হয়ে যায় যখন তারা রশিদ সাহেবকে দেখে। নির্দেশ ছিল না বলে তারা রশিদ সাহেবের উপর আক্রমণ করেনি। তবে তারা হিসাব করে দেখেছে কিভাবে তাকে ধরা যেত। এই হিসাবটা তাদের রাখতে হয়। রশিদ সাহেবের পিছনে পিছনে অপরিচিত কেউ একজন আসছিল। তারা একটু দূরে থাকলেও দৃষ্টির মধ্যে ছিল। এলিয়েনদের ভয় ছিল যদি তারা দেখে ফেলে। এরও একটা হিসাব তারা করে নিয়েছিল সঙ্গে সঙ্গে। যার ফলে রশিদ সাহেবকে নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি।
(চলবে)