আলম শামস
‘জুলাই বিপ্লবের রক্তাক্ত দলিল’ গ্রন্থ মূলত একটি পেপার ডকুমেন্টারি। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট। এ ৩৬ দিন বাংলাদেশে জুড়ে ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন চলছিল সেই সমস্ত আন্দোলনের খবরা-খবর, ছবি, বিশ্লেষণ, মন্তব্য, সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয়, বাংলাদেশের এবং বিদেশের বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট, বিশ্লেষণ, মন্তব্যসহ বাস্তব ঘটনা বাংলাদেশের বিভিন্ন কাগজে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সকল প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে এই বই ৫টি খণ্ডে এবং ১১টি অধ্যায়ে ভাগ করে প্রকাশিত হয়।
কোটাআন্দোলন থেকে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে সফল হওয়ার সংবাদ যেমন এই বইতে আছে, তেমনি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকার ও তার দোসর ছাত্রলীগ যুবলীগ তথা হ্যালমেট বাহিনীর অত্যাচারের সংবাদ এবং ছবিও এই বইতে আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার এস এম বিপাশ আনোয়ার-এর পরিকল্পনা ও সম্পাদনায় ‘জুলাই বিপ্লবের রক্তাক্ত দলিল’।
এ গ্রন্থ ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত দলিলপত্র ও স্মারক। এই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা, কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষসহ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইউটিউব, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সংবাদপত্রের মধ্যে অভূতপূর্ব স্বতঃস্ফূর্ত ঐক্য পরিলক্ষিত হয়েছিল, এই বইয়ের পর্বে পর্বে তারই তথ্য, প্রমাণ, চিত্র সংকলিত হয়েছে। যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা সামিল হয়েছে এবং আন্দোলনকে সফল করে তুলেছে। এ গ্রন্থের পাতায় পাতায় তার অথ্য-প্রমাণ সন্নিবেশিত রয়েছে। ২৪-এর বিপ্লবের সংগ্রামী সময়ের সাক্ষী হয়ে অনবদ্য, তথ্যবহুল ও প্রামাণিক গ্রন্থ হিসেবে সংকলনটি বহু যুগ ধরে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক, সামাজিক ইতিহাসে উজ্জ্বল স্মারক হিসেবে প্রতীয়মান থাকবে।
দুই হাজারেরও অধিক জীবন ও ৩০ হাজারেরও বেশি লোকের অঙ্গহানির বিনিময়ে রচিত ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের এই বীরত্বগাথা যাতে মানুষ ভুলে না যায়, এই গল্প যেন হারিয়ে না যায়, এই বিপ্লব যেন মানুষের নিত্য চর্চার অংশ হয়ে থাকে তাঁর জন্য এই বই যুগ যুগ ধরে ভূমিকা রেখে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
এই বই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার মূল্যবান বাণী দিয়ে বইটাকে ঋদ্ধ করেছেন। বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং কূটনীতিক মুশফিকুল ফজল আনসারী এই বইয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
বইয়ের মুখবন্ধ লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, ভূমিকা লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার। কমবেশি ৩০ জন দেশপ্রেমিক সাদা মনের মানুষ চার মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই বইকে আলোর মুখ দেখিয়েছেন।