DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

বই

জুবায়ের হুসাইন এর ‘‘ধূসর দরজার অমিমাংশিত রহস্য’’ একটি পাঠপ্রতিক্রিয়া

একুশে বইমেলা ২০২৫ এ আমি হাতে পেলাম একটি রহস্যপোন্যাস -" ধুসর দরজার অমিমাংসিত রহস্য"। আমি সব সময় সুখপাঠ্য লেখা পছন্দ করি। সে হিসেবে থ্রিলার টাইপের লেখা আমার খুবই পছন্দ। কিশোরকণ্ঠে জুবায়ের হুসাইনের "

Printed Edition
fdsfsf

মাকফি আক্তার

একুশে বইমেলা ২০২৫ এ আমি হাতে পেলাম একটি রহস্যপোন্যাস -" ধুসর দরজার অমিমাংসিত রহস্য"। আমি সব সময় সুখপাঠ্য লেখা পছন্দ করি। সে হিসেবে থ্রিলার টাইপের লেখা আমার খুবই পছন্দ। কিশোরকণ্ঠে জুবায়ের হুসাইনের "ভয়াল রাতের হাতছানি" ছোটবেলায় পড়তাম। লেখকের লেখার প্রতি একটা ভালোলাগা তখন থেকেই। তাই নতুন এই উপন্যাস আগ্রহ নিয়ে পড়তে বেগ পেতে হয়নি। আমি কোনো সাহিত্যমান বিচার করার ক্ষমতা রাখি না। শুধু পাঠক হিসেবে আমার মতামত ও পাওয়া না পাওয়া তুলে ধরব।

লেখক পরিচিতি : জুবায়ের হুসাইন মূলত গল্পকার ও শিশুসাহিত্যিক। কর্মজীবনে একজন ব্যাংকার। ব্যাংকিক ব্যস্ততার ভিড় ঠেলে সাহিত্যের সুন্দর বাগান সাজাতে তিনি প্রতিনিয়ত রোপণ করে চলেছেন বুদ্ধিদীপ্ত গল্পের চারাগাছ।

সারসংক্ষেপ : রুহান ও রাফসান দুই বন্ধু। রুহানের বাবা অন্য জায়গা থেকে বদলি হয়ে বর্তমানে একটি এলাকায় এসেছেন, যে জায়গায়টি কাহিনির সংঘটনস্থান। আর এইখানকারই একটা স্কুলে ভর্তি হয় রুহান। আর এখানেই পরিচয় হয় রাফসানের সাথে। তাদেরই ইস্কুলের পাশেরই একটি ভবনের প্রথম এবং দ্বিতীয় তলার মাঝামাঝি ধূসর রঙের একটা দরজা। যেটা একদিন খোলা থাকলে অন্যদিন বন্ধ থাকে। এটা নিয়ে অনেকের কৌতূহল যেমন আছে। তেমনি আবার অনেকের মধ্যে বিভিন্ন আজগুবি সব কথা প্রচলিত আছে। রুহানকে রাফসান যেদিন দরজটা দেখায় সেইদিনই তাদের স্কুল বন্ধ দিয়ে দেয়। প্রথম দেখাতেই এই দরজার প্রতি বেশ আগ্রহ বোধ করে রুহান। আর এর রহস্য ভেদ করার চিন্তা মাথায় আসে রুহানের। এই থেকে শুরু হয় ধূসর দরজার রহস্য ভেদ করার মিশন। প্রথমে রুহানের সাথে রাফসান থাকলেও পরে ধীরে ধীরে যোগ হয় তাদের আরও বন্ধু তানজিল,মাহির এবং তাসনিয়া। এই রহস্য ভেদ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নানা আশ্চর্য সব তথ্য। তারা পড়তে থাকে নানা ঝামেলায়। যা রুহানদের কে এই ধূসর দরজার পেছনে কি আছে তা জানতে আগ্রহী করে তোলে। তাদের প্রথম বিপদে ফেলেছে বদরুল নামক বখাটের সাঙ্গপাঙ্গরা। বিভিন্ন বাধা সহ অনেক বিপদের মধ্য দিয়েই তারা উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যায় ধূসর দরজার পেছনের রহস্য। রুহানরা কি পারবে ধূসর দরজার পেছনে কি আছে উদ্ধার করতে? নাকি তা আড়ালেই রহস্য হয়ে থেকে যাবে?

আমার কাছে যেদিকটা ভালো লেগেছে-

# ইসলামিক বিষয় থেকে কিছু তুলে ধরা। সূরা ফাতিহার অর্থ সহ আলোচনা। নামাজের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। এই বোধ লেখায় সচরাচর চলে আসা উচিত।

# লেখা খুব সাবলিল। একটানে পড়ে যাওয়ায় কোনো সমস্যা আসেনি। এটাকে কে কি বলে জানি না। আমার কাছে দক্ষতা মনে হয়।

আর যে বিষয়টি বুঝে উঠতে পারিনা তা হলো কিছু প্রশ্ন উঠে আসে। যেমন-

# এলাকাটা নির্জন হলেও যেহেতু স্কুলের পাশে ধূসর দরজার দালানটার অবস্থান, সেহেতু আশপাশটা জনবহুলই থাকে। তাহলে জায়গাটা কিভাবে দুষ্ট লোকেরা ব্যবহার করে, যা এত বছর ধরেও কেউ টের পেলো না?

# আর এটা যেহেতু ব্রিটিশ আমলের তৈরি তাহলে কেউ কখনও এটার রহস্য উদঘাটন করে নি কেনো? চাইলেই তো পারতো অনেকে দল বেধে দিনের বেলাতে গিয়ে দেখতে!

# লেখক উপন্যাসটি আমার আশা অনুযায়ী শেষ করেন নি। কারণ অবশ্য তিনিই বলেছেন শিরোনামে। "ধুসর দরজার অমিমাংসিত রহস্য"।

বানানে কিছু ভুল থাকলেও বোঝাই যায় সেটা নেহাত অনিচ্ছায়। এতটুকু থাকা স্বাভাবিক বলে মনে হয়।

সব মিলিয়ে একটা ভালো রহস্যপোন্যাস মনে হয়েছে। আমার বইটি সংগ্রহ ও পড়া সফল বলে পাঠক হিসাবে আমি মনে করি।

লেখক : জুবায়ের হুসাইন

প্রকাশক - মো. ইকবাল হোসেন

প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান : ইনভেলাপ পাবলিকেশন্স

প্রথম প্রকাশ- ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ - মুকুল রেজা

মূল্য - ৳৩০০ মাত্র

পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৩৬