আহসান হাবিব বুলবুল

তরুণ কবি সীমান্ত আকরামের শিশুতোষ গল্পের বই ‘রাতুলের সাইকেল’-এক বৈঠকেই পড়ে ফেললাম। বেশ ভালো লাগলো। দু’দিক থেকে লেখকের এ প্রয়াস সফল হয়েছে বলতে হয়। এক. সাবলীল বাক্য গঠন, শব্দ চয়ন, শিশু মনস্তত্ত্বের প্রতি খেয়াল এবং গল্পের উপাদান চিরচেনা পরিবেশ থেকে নেয়া। দুই. নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের একটা রোশনাই ছড়িয়েছে গল্পগুলো।

সীমান্ত আকরাম ১৯৯০ সালে ৫ জানুয়ারি কুমিল্লার সদর উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি প্রবন্ধে বেশি আগ্রহী হলেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন ছড়া কবিতা গল্প কলাম ও ফিচার। তার বেশ কয়েকটি প্রকাশনাও রয়েছে।

শিশুদের নিয়ে লেখা সহজ কাজ নয়। শিশুদের নিয়ে লিখতে হলে নিজের ভিতর সুপ্ত শিশুটিকে ( শিশুসত্তা) জাগিয়ে তুলতে হয়। লেখক সেটা পেরেছেন। তার গল্পের উপাদানগুলো আমাদের চারপাশের। মানুষের মাঝে প্রকৃতির মাঝে গল্পগুলো নানাভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। লেখক তার অনুসন্ধানী দৃষ্টি মেলে সেসব অনুষঙ্গ উপাত্ত তুলে এনেছেন। নির্মাণ করেছেন গল্পগুলোকে।

গ্রন্থের প্রচ্ছদ গল্প ‘রাতুলের সাইকেল’-এ একটি শিশুর চাওয়া-পাওয়ার দোলাচলে একটি বস্তু কিভাবে মহার্ঘ্য হয়ে ওঠে, একইসাথে তা আবার মানবিক হয়ে ওঠে এবং তা মানবতার কল্যানণ নিবেদিত হয়।-এ দৃশ্যটি বড় চমৎকার ও হৃদয়গ্রাহী। অন্য গল্পগুলোও ভারী মজার। গল্পগুলোতে লেখকের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়।

বইটি প্রকাশ করেছেন বিশ্ব সাহিত্য ভবন। প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন শিল্পী মোমিন উদ্দীন খালেদ। হার্ডকাভার, চার রঙে অফসেট কাগজে মুদ্রিত। বইটির পাতায় পাতায় ইলাস্ট্রেশন করা। একনজরে বইটি শিশুদের কাছে টানবে। বইটির মূল্য ২৫০ টাকা।