কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় পারুল আক্তার নামে এক রোগী মৃত্যুর খবর সংগ্রহে গেলে দুই সাংবাদিকসহ তাদের ক্যামেরাম্যানদের ওপর হামলা হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তাদের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভাংচুর ও ছিনিয়ে নেয়া হয়। শুক্রবার রাতে ওই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (২২ মার্চ) জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের ব্যানারে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিত সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী খোকন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকার আহমেদ আলীর স্ত্রী পারুল আক্তার শুক্রবার রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তার ছেলে মামুন মিয়া জানান, তার মায়ের কিডনি ও লিভারজনিত রোগে হাসপাতালে ভর্তিন হন। পাশের বেডের এক রোগীর ইনজেকশন ভুলবশত তার মায়ের শরীরে পুশ করা হলে তিনি রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে প্রতিবাদ জানালে তাদের ওপর হাসপাতালের ডাক্তাররা চড়াও হয়। এদিকে এমন খবর পেয়ে যমুনা টিভির প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী খোকন ও চ্যানেল২৪ টিভির প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান এবং তাদের ক্যামেরাম্যান ওই হাসপাতালে যান। তারা অভিযোগ করে জানান, হাসপাতালের পরিচালকের ইঙ্গিতে ইন্টার্ণ ও মেডিকেল ছাত্ররা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায় এবং ক্যামেরা-মোবাইল ভাংচুর করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই হাসপাতালে যায় এবং ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। তারা আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়। এদের মধ্যে যমুনা টিভির সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান গুরুতর আহত হওয়ায় তাদেরকে ভর্তি করা হয়।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের ব্যানারে শনিবার প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন কাজী এনামুল হক ফারুক, মীর শাহ আলম, জাহিদ হাসান, শাহ আলম শফি, খালিদ সাইফুল্লাহ, হুমায়ুন কবির জীবন, আবদুর রহমান, খায়রুল আহসান মানিক, সহিদ উল্লাহ, সহিদ উল্লাহ মিয়াজী, মাহফুজ নান্টু,রেজাউল করিম রাসেল , শাহজাদা এমরান, জহির শান্ত, তানভীর দীপুসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তারা অবিলম্বে হাসপাতালের পরিচালককে দ্রুত অপসারণসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ভাংচুর ও লুণ্ঠিত মালামাল ফেরত দেয়ার দাবি জানান।

এছাড়া কুমিল্লা প্রেসক্লাব ও কুমিল্লা মিডিয়া হাউজের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে পৃথক কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় শনিবার বিকালে নির্যাতিত সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী খোকন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।