দেশটা আমার
শাহীন খান
মেঘের ভেলা যায় হারিয়ে দূরে
পাখপাখালি মেললো সবে ডানা
কাশ ফুটে রয় নদীরই কূল জুড়ে
পুকুর জলে খেলছে হাঁসের ছানা।
বাজছে বাঁশি দূর গাঁয়েরই শেষে
পরাণ আমার উদাস উদাস লাগে
কৃষাণ বধূ মুচকি দিলো হেসে
কবি মনে কাব্য ছড়া জাগে।
পাল উড়িয়ে গায়রে মাঝি গীতি
শিল্পী আঁকে শরৎ ছবি বসে
সকল দুখের হয়রে এবার ইতি
ভাবনারা আজ পড়লো সকল খসে।
যেদিক তাকাই লাগছে দারুণ শোভা
মুগ্ধ হয়ে অবাক চেয়ে থাকি
দেশটা আমার খুবই মনোলোভা
স্বপ্ন গানে ভরলো এ বুক আঁখি।
ডাকছে নদী আয়
জিৎ মণ্ডল
শীবসা, রূপসা ডাকছে সেদিন
আয়না ছুটে আয়,
ঢেউয়ে ঢেউয়ে যাবি ভেসে
দু’চোখ যেদিক যায়।
দেখবি শত নতুন নদী
দেখবি কত বন,
আনন্দতে উঠবে ভরে
উথাল পাথাল মন।
নানান রঙের মাছের সাথে
খেলবি পরান ভরে,
রাত পোহালেই ভাটার টানে
আসবি ফিরে ঘরে।
শরৎ মেঘের দেশে
পি এম শরিফুল ইসলাম
আমি যদি হতাম পাখি
স্নিগ্ধ ভোরের বেলা,
প্রজাপতির বাড়ির পাশে
হতো ফুলের মেলা।
প্রজাপতি-ফুলের সাথে
আড্ডা দিতাম বেশ তো!
গান-কবিতায় কাটত সময়,
হতো নাকো শেষ তো।
ফুলের মেয়ে ভালোবাসায়
আমায় বেঁধে রাখত,
হরেক রঙের ফুলের কণা
আমার মুখে মাখত।
আমি যদি বৃষ্টি হতাম
শরৎ মেঘের দেশে,
আকাশ তখন বলত কথা
আমার সাথে হেসে।
রঙধনুতে খুঁজতে যেতাম
সপ্ত রঙের আলো,
মেঘের দেশে ভেসে ভেসে
কাটত সময় ভালো।
মেঘ বৃষ্টি জল
সুশান্ত কুমার দে
বৃষ্টি আমার মিষ্টি মধুর
নীল আকাশের ফল
বারে বারে খোকা বলে
মেঘ বৃষ্টির জল
বরফ গলার ঢল।
বেলকনিতে ইলিক ঝিলিক
দৃষ্টি খোকার ঠিক
একটু ভেবে নিক
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ে
সবুজ বনের দিক!
কাকাতুয়া
হাফিয রেদওয়ান
কাকাতুয়া মাথার ঝুঁটি
থেকে থেকে ফরকাও
কাকে দেখে ভড়কাও!
খাও যে বড়ো পাউরুটি
ছোলা দানা তাও বেশি
সব খাও খাঁটি দেশি।
কুটুম আসলে সালাম দাও
সুরেলা কন্ঠে গান গাও
কতো রকম ভঙ্গি ভাও
তবুও আদর যত্ন পাও।
বাংলাদেশ
জনি সিদ্দিক
মায়ায় ঘেরা রঙিন সাজে
লাল-সবুজের বাংলাদেশ,
ধানের ক্ষেতে সোনার ফলা
শিশির ফোঁটায় মুক্তো কণা
আলতো রোদে লাগে বেশ।
আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা
রামধনুতে আঁকা দেশ,
সবুজ শ্যামল মাঠের ধারে
মাদুর পেতে নদীর পাড়ে
দাদুর মুখে সবাই মিলে
গল্প শুনতে লাগে বেশ।
আঁকাবাঁকা সাপের মতো
শত নদীর বাংলাদেশ,
রক্তভেজা মাটির ঘ্রাণ
শিউলি-হেনা জুড়ায় প্রাণ
রাত্রি জুড়ে গায়ে মাখে
সবুজ সুখের নরম রেশ ॥