সাত রাজার ধন
মেজু আহমেদ খান
ঝম ঝমা ঝম বৃষ্টি নাচে
টিনের চালে
টিপ টিপা টিপ টুপুর টাপুর
ছন্দ তালে
বৃষ্টি মাটির প্রাণ,
বৃষ্টি মাঝে মাখা থাকে
সজীবতার ঘ্রাণ।
বৃষ্টি ভেজায় মন
বৃষ্টি যে তাই আমার কাছে
সাত রাজার-ই ধন।
আম্মুকথন
রোহানী সাম্য
পড়াশোনার নেইতো বালাই
মুঠোফোনের পোকা,
বারে বারে হয় তো দিতে
টেবিল বসতে টোকা।
কার্টুন, পদ্য, গদ্য শুধু
আরও পড়িস গল্প,
মানতি যদি বলি যা যা
আমার কথা অল্প!
ধুত্তুরি ছাই! বলছি কাকে
আলসেদেরই রাজা,
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে জীবনটাকে
করেছিস মাছভাজা।
আমার কথার মর্ম তো নেই
পাত্তা সেটা বাড়তি,
কি আর করা বুদ্ধি বাড়ার
করছি বসে আরতি।
বৃষ্টির দিনে
নিলুফা ইসলাম
রিমঝিম বৃষ্টি টুপটাপ শব্দ
থৈ থৈ করে জল
এলোমেলো সাঁতার কেটে
খুশি হাঁসের দল।
বালিহাঁস পাতিহাঁস আছে
আছে পানকৌড়ি
মনের সুখে মাছ ধরে যায়
দূর গাঁয়ের গৌরি।
মাঝি মাল্লা বৈঠা হাতে
ভাটিয়ালি গান ধরে
বধূ যাবে বাপের বাড়ি
চোখের পানি ঝরে।
নদীর দেশে
বিপুল চন্দ্র রায়
আকাশের গায়
মেঘ উড়ে যায়
মেঘদূত দেখে
পাখি গান গায়।
নদী জলে ভাসে
মাছ আর মাছ
পাখি ধরে খায়
ফিরে ফিরে চায়।
দাদির আচার
হোসাইন মোস্তফা
দাদি যখন আচার বানায়
ঝাল, মিষ্টি, টক
যতই ডাকো খুলবে না দ্বার
জোরসে ঠকাঠক।
আগলে রাখে আচার বয়াম
ঠিক যক্ষের ধন
বলব কি ভাই দাদির কথা
কিপ্টে বুড়ির মন।
আচার যখন রোদে শুকায়
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে
মাথার ভেতর ভাবনা কখন
ছোঁ মেরে নেয় কাকে!
একটু কোথাও শব্দ পেলেই
কান যে করে খাঁড়া
সামনে তখন যাকেই পাবে
করবে লাঠির তাড়া!
খাইনি আমি আমের আচার
তাড়িয়ে ছিলাম মাছি
অমনি এসে ধরল কানে
মাফ চেয়ে তাই বাঁচি!
রাত্রে বাড়লে বাতের ব্যথা
ওষুধ আনতে হবে?
তখন দাদি সাধাসাধি
মিষ্টি কথা কবে!
খুকির আঁকিবুঁকি
এম সোলায়মান জয়
রংতুলিটা হাতে নিয়ে
খুকুমণি ভাবে
প্রজাপতির রঙিন ডানা
কেমনে আঁকা যাবে।
কোথা থেকে করবে শুরু
ভাবছে খুকু তাই
ভেবে ভেবে হ্ঠাৎ করে
গাছের পানে চায়।
গাছের ডালে বসে আছে
একটি প্রজাপতি
লাল নীল ও সবুজ রঙে
দেখতে মায়াবতী।
রঙিন ডানার প্রজাপতি
এসো আমার কাছে?
খুকুর ডাকে প্রজাপতি
উড়ে উড়ে আসে।
প্রজাপতির রঙিন ডানা
আঁকে দেখে দেখে
এমন করে খুকুমণি
আঁকিবুঁকি শেখে।
বিচিত্র রূপ
শেখ মোমতাজুল করিম শিপলু
পায়রা নাচে পায়রা নাচে
টায়রা মাথায় দিয়ে,
বোয়াল মাছের গোঁফে বেঁধে
যাচ্ছেরে নাও নিয়ে।
নদীর কূলে ভোঁদড় নাচে
খেলছে খুকুর সাথে,
জোনাক পোকা আলো জ্বেলে
চলছে নিঝুম রাতে।
মেঘের ডাকে ময়ুর নাচে
রাঙ্গা প্যাখম খুলে
তাই দেখে আজ দিশেহারা
সবাই ফটো তুলে।
গোল পৃথিবী
ফরিদ সাইদ
প্রয়োজনে পা বাড়ালাম
ঘড়ির সময় ধরে,
তখন ছিল মেঘলা আকাশ
মোরগ ডাকা ভোরে।
দিনের আলো রাতের তারায়
হাজার লোকের ভিড়ে,
চলার পথে আয়ু আমার
ফুরায় ধীরে-ধীরে।
এমনি করে যেতে হবে
অনেক দূরের পথে,
মহান মালিক আমায় তুমি
শক্তি দিও রথে।
কপাট খুলে ঘর ছেড়েছি
ঠিক মনে নেই কবে,
গোল পৃথিবী ঘুরে এলে
আবার দেখা হবে।
কাশবন
রাহেলা আক্তার
কাশবনের ঐ সাদা ফুলে-
করছে শরৎ খেলা;
তাইনা দেখে নাচে গগন
কোটি তারার মেলা।
ভোরের আলোয় কুহু কুহু
ডাকছে পাখি সুরে,
কাশের বনে জোনাই আলো
জ্বলছে খানিক দূরে ।
সাদা সাদা মোহন ফুলে
হালকা হাওয়ায় দোলে;
আদুর গাঁয়ের ছেলেরা সব
শাপলা শালুক তোলে।
শরৎ আসে সবুজ নিয়ে
তেপান্তরের মাঠে;
বিকাল বেলা বকের সারি
বসে নদীর ঘাটে।
পাঠশালা
যাইদ আল মারুফ
পাঠশালাতে যাবো মাগো
পাঠশালাতে যাবো
জ্ঞানীগুণী হয়ে আমি
সত্য মানুষ হবো।।
কোনটা সঠিক ভ্রান্তিলতা
আমি চিনে নেবো
পাঠশালাতে যাবো মাগো
পাঠশালাতে যাবো।।
শিখব আমি বর্ণমালার
নুতন নুতন গান
আকাশ পানে পৌঁছে দিব
লাল সবুজের দান।।