পলাশীর সূর্য

নয়ন আহমেদ

সূর্য ধরিস বুকের ভেতর; সূর্য ডিমের কুসুম-

সিরাজরা কি জাগছে এখন? দুপুর আকাশ কুসুম?

সময় এখন বস্তাভরা খাটের নিচে রাখি-

আলসে ঘেরা জীবনটাকে কাঁথা দিয়ে ঢাকি।

দিন গিয়েছে দিনের পিছে আসছে নেমে রাত।

মানুষ কি আর ফুটবে বলো? আছে কি সংবাদ?

হাসনাহেনা ফুটবে বলে চাঁদ উঠেছে একা

তারারা সব রাগ করেছেন! যাচ্ছে না যে দেখা।

আকাশভরা জোসনা কোথায়? মেঘের দল যে ভারি!

ঘোমটা সরাও। ঘোমটা সরাও। সরাও তাড়াতাড়ি।

আঁধার ঘেরা তবু আমার। আঁধারে বাস করি।

হাসনাহেনা লুকিয়ে পড়ে; মুঠোয় কাঁটা ভরি।

সূর্য ধরিস বুকের ভেতর; সূর্য ডিমের শাঁস।

সূর্য ছাড়া অস্ত যাবে আশা ও আশ্বাস।

মীরজাফরের চক্ষু এলো পিদিম ভরা আলো।

দুপুর বেলা নিভে গেল গোলাপ রাঙা ভালো।

দিনের আলো নিভলো যখন বেনিয়ারা আসেন।

নানান রকম সওদাপাতি কিনতে কিনতে হাসেন।

কেনেন তারা চাঁদের আলো, কেনেন মস্ত আকাশ।

সবুজ কেনেন, আনাজ কেনেন, সাদা শাপলা-বাতাস।

কেনেন হাসি বৈয়ম ভরা সুখ-দুঃখের মালা।

লুৎফাদের ওই পদ্ম ভরা দুুপুর কেনেন খালা।

দেশ কিনিলেন অবশেষে; মানুষ অল্প দামে ॥

সূর্যটাকে ঝোলায় ভরে রওনা দিলেন ধামে।

সূর্য রাখিস বুকের ভেতর; সাহস রাখিস যদিÑ

সব শালারা পালিয়ে যাবে; তোর হবে এই নদী।

যে জীবন নদীর নয়

সাজ্জাদ সাদিক

কতটা নিখুঁতভাবে বয়ে চলে নদী!

পথে পথে বিদ্বেষের কাঁটা নেই

শতবর্ষী বটবৃক্ষের গা-ভাসানো শেকড় নেই

বয়সের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা দেখে নদী কেবল

ধাবিত হয় অনন্ত সাগরের দিকে

যেমনটা আমরা অনিবার্য মৃত্যুর দিকে ধাবিত হই।

তবে আমাদের পথ ভঙ্গুর, আমাদের পথ বন্ধুর

আমাদের পথ শাপদসঙ্কুল ও আশংকার

বারংবার থেমে যেতে হয় পিছুটানে।

ভ্রান্ত পথে হাঁটতে হাঁটতে আমরা কখনো

অধঃপতনের গহ্বর ছুঁই ছুঁই,

কর্দমাক্ত পিচ্ছিল পথে পিছলে পড়ি দিনে-দুপুরে।

আমাদের প্রবাহমান জীবন নদীর মতো নয়!

শ্রাবণ সংবাদ

সুমন সাহা

‘আমি জানতাম তুমি আসবে’

অন্ধ তালগাছ পেরিয়ে

যেখানে থাকে বন্ধু, বন্ধুত্ব।

দুঃখের শব্দ, যতটুকু জানে

ম্লানমুখ; ফ্যাকাশে ।