ফিলিস্তিনের পাখি
হারুন আল রাশিদ
বৃষ্টিভেজা দুপুরবেলা বনের ভেতর যাই
গাছের ডালে অচেনা এক পাখির দেখা পাই
নিরিবিলি পরিবেশে কাঁদতে ছিলো পাখি
যাচ্ছে দেখা কাজল কালো করুণ দুটি আঁখি।
অবাক হয়ে সামনে গেলে তাকায় আমার দিকে
দুঃখ-মাখা অচিন পাখির চাউনি ছিলো ফিকে
বুঝতে পারি বুকের ভেতর কষ্ট জমা আছে
ব্যক্ত করার পায় না সুযোগ হয়তো কারো কাছে!
প্রশ্ন করে জানতে পারি বাড়ি ফিলিস্তিন
বাংলাদেশে আসছে উড়ে ঈদের পরের দিন
তার দেশে নেই গাছগাছালি সবুজ ঘেরা বন
চতুর্দিকে ঘরহারাদের কান্না সারাক্ষণ।
সকাল হলেই গোলাগুলি-বোমার বিস্ফোরণ
দখলদারের বুক-পাঁজরে ইট-পাথরের মন
একের পর এক হামলা চলে দিনের বেলা-রাতে
নর্দমাতে শান্তি ও সুখ ইহুদি সংঘাতে।
কোমায় যেনো বিশ্ব বিবেক একটুও নেই হুঁশ
মানবতার ঘাড়ের ওপর হাঙরে দেয় ঢুস
আকসা ছিলো সর্ব প্রথম মুসলমানের কাবা
ঐক্যে ফাটল ধরছে বলেই মারলো কুমির থাবা।
পাখির কথায় ব্যথার জলে বুকটা গেলো ভরে
মুসলমানের শক্তি ও তেজ সত্যি গেলো মরে!
কি কারণে চুপ মেরে যায়Ñঝিমায় বীরের জাতি?
নিভলো কেনো ঈমান-আলোর প্রজ্জ্বলিত বাতি?
কোথায় ওমর, খালিদ, ওলিদ, হামজা, তারিক, মুসা?
জাগ্রত হও-বিশ্ব দেখুক মরুভূমির ঊষা
ফিলিস্তিনের কান্না যেনো গোলাপ হয়ে ফোটে
সসম্মানে স্বাধীনতার সূর্য আবার ওঠে।
ঘুমপাড়ানি মা
সাজ্জাদ সাদিক
ঘুমপাড়ানি মাগো আমার
ভাত মেখে দাও কাকে?
যতই দূরে থাকি মাগো,
পরাণ তোমায় ডাকে।
ছোটবেলায় বাড়ি ছিলাম
ছিলাম তোমার চোখে,
বেলা শেষে সন্ধ্যা হলে
ফিরে যেতাম বুকে।
সন্ধ্যা হলে এখন মাগো
দ্বীপ জ্বালাই না ঘরে,
দূর শহরে ক্লান্ত ভীষণ
গাড়ি ঘোড়া চড়ে।
তোমার মুখের এমন মায়া
কোথায় পাবো খুঁজে?
কল্পনাতে তোমায় খুঁজি
চোখ দুখানি বুজে।
খোকন যাবে মসজিদে
মাহফুজা শিরিন
খোকন যাবে মসজিদে আজ
নতুন টুপি পরে
তাইতো খোকন খুশি ভীষণ
হাসছে অমন করে ।
আম্মু এসে, বলল হেসে
খোকন সোনা ওরে!
মহান প্রভু এমনি তোকে
নেয় যে কবুল করে ।
আব্বু ও তো খুশি কতো
জড়িয়ে বলে, সোনা!
সবচেয়ে যে ভালো এ কাজ
আছে তোমার জানা?
আজকে থেকে মসজিদে আর
একলা যাবে না,
খোকন যাবে সংগে নিতে
খোদার করুণা ।
এসো বই পড়ি
গোলাম আযম
এসো বইটা পড়ি সবাই
এসো বইটা পড়ি,
জ্ঞানের দিক্ষা নিয়ে সবাই
জীবনটাকে গড়ি।
বই হলো যে বন্ধু তোমার
জীবন চলার নূর,
নিকষ কালো সামনে এলেও
দেই করে যে দুর।
বই পড়ে যে ছাত্র সমাজ
জ্ঞানীগুনি হয়,
মেধার বিকাশ ঘটিয়ে গড়ে
নিজের পরিচয়।
খোকার বিড়াল
কৌশল কর্মকার
বিড়াল ছানা বিড়াল ছানা
পান্তা ভাতে মাছের সানা
খেতে পারো পিয়াজ দিয়ে
দারুণ মজা পান্তা ঘিয়ে।
সারাদিনে পিছে পিছে
ঘুরে শুধু মিছে মিছে
খোকাখুকুর খেলার ছলে
নাচে সেতো তালে তালে।
এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি
সারাদিনে লুকোচুরি
সন্ধ্যা হলে পড়তে বসে
বুদ্ধি দিয়ে অংক কষে।
হলে আমি কবি
তাজুল ইসলাম নাহীদ
আমি যদি হায় লেখক হতাম
জীবন ধন্য হত,
দেশ ও মাটির কথা যে আমার
লিখতো কলম যত।
হতাম যদি এই স্বদেশের
সুনাম ধন্য কবি,
মনের রঙে লিখতাম আহা!
বাংলা মায়ের ছবি।
সবুজ শ্যামল দেশটি আমার
রূপের নাইকো শেষ,
বিশ্বের বুকে পাইনি কোথাও
এমন একটি দেশ!
নদী নালা খাল, গাছে পাকা তাল
কী এক তাহার রূপ,
সত্যিই আমি এসব দেখে
রীতিমতো হই চুপ।
বাবার চশমা
রোহানী সাম্য
বাবার চশমা হারিয়েছে
পাচ্ছি না তো খুঁজে আর,
উপায় আছে এখনো তাই
মুখটি রেখে বুজে আর?
আম্মু খুঁজছে বইয়ের ফাঁকে
দিদিটা আলমারিতে,
আমি খুঁজলাম পেলামই না
পুরোটা ঘর-বাড়িতে।
বাবা এখন বাইরে যাবে
চশমা ছাড়া কীভাবে?
আজকে একটু কষ্ট হবে
চশমাটারই অভাবে।
পরে ঠিকই শুনবে তুমি?
কি যে বলবো তোমারেই,
বাবার চশমা হারায়নি যে
বাবার মাথার উপরেই।