আমার স্বাধীনতা
শফিক শাহরিয়ার
বাংলাদেশের বিজয় আনি ছিনিয়ে
স্বৈরাচারী যাবে এখন কী নিয়ে!
দেশটা ছিল তাদের শুধু দখলে
নীরব ছিল দেশের মানুষ সকলে।
নানান রকম জুলুম-শোষণ বাড়িয়ে
অপশক্তি নিয়ে ছিল দাঁড়িয়ে।
প্রতিবাদের দারুণ আগুন লেগেছে
সবার আগে ছাত্র সমাজ জেগেছে।
সেই আগুনে দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে
স্বৈরাচারীর বুকটা দিল কাঁপিয়ে।
কয়েক দফা জানায় ছাত্র জনতা
পক্ষে ছিল দেশের জনগণও তা।
স্বৈরাচারী টালবাহানা করেছে
ছাত্র সমাজ তাও দমে নি লড়েছে।
অবশেষে একটি দফা লিখেছে
ছাত্র সমাজ যুদ্ধ যখন শিখেছে।
স্বৈরাচারী নিজের আখের গুছিয়ে
অভিনয়ের দু’ফোটা জল মুছিয়ে।
দেশটা ছেড়ে পালাবে তাই চালাকি
এই সমাজের নেই যে বুঝার তা বাকি।
যায় না মুছে কালো অতীত কখনো
সবার মনে জ্বলছে আগুন এখনো।
অবশেষে বিজয় নিশান পেয়েছি
আমরা এমন স্বাধীনতাই চেয়েছি।
বৃষ্টি হবে
বিল্লাল মাহমুদ মানিক
আজকে অনেক মেঘলা আকাশ
রোদের দেখা নাই,
‘বৃষ্টি হবে’ ঘ্যাঙর সুরে
বলছে ব্যাঙ মশাই।
বৃষ্টি ভিজে করবো খেলা
ছুটবো তাথই থই,
ভীষণ মজা লাগবে মনে
করলে রে হইচই।
পুকুরজলে কাটবো সাঁতার
ধরবো কত মাছ,
বৃষ্টি ভিজেই চলবে আরও
ধুমুরধামুর নাচ।
বৃষ্টি হবে এই খুশিতে
উতলা সবাই,
আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকালে
শুধুই বৃষ্টি চাই।
জুলাই শহীদ
মুস্তফা মানিক
সাঈদের বুকে ছিল রাজ্যের ক্রোধ
সংগ্রামে এসেছিল নিতে প্রতিশোধ
মায়া ভুলে হাত তুলে পেতে দেয় বুক
চাওয়া ছিল এইবার দেশটা হাসুক।
গুলি বুকে মুগ্ধ বিলিয়েছে পানি
খাঁ খাঁ রোদে তৃষ্ণার ছিল পেরেশানি
মুগ্ধের বলা কথা মনে কাটে দাগ
কেঁদে ওঠে ফুল পাখি সবুজের বাগ।
ইয়েমিনের লাশে ভাঙে বুকের পাজর
মোঙ্গল থেকে যেন ওরা বর্বর
স্তম্ভিত লজ্জিত হয় পুরো জাতি
ক্রোধে হয় ভস্ম— জ্বলে উঠে বাতি।
রক্তের ছোপ ছোপ দাগে ভেজা ঘাসে
শহীদের পিতা মাতা ঘ্রাণ নিতে আসে
কবরের পাশে বসে করে ক্রন্দন
এইখানে শুয়ে আছে মানিক ও রতন।
শাক সবজির গুণ
হানিফ রাজা
সবুজ সতেজ শাক সবজিতে
পুষ্টি থাকে ভরে,
করলে আহার পরিমিত
সুস্থ দেহ গড়ে।
কচু-কুমড়া-পালং শাকে
আছে আয়রন ভর্তি,
প্রতিদিন খাও এসব খাবার
বাড়বে মনে ফূর্তি।
টমেটো আর গাজর খেলে
চোখে বাড়ায় দৃষ্টি,
বাঁধাকপি, ব্রকলিতেও
রোগ প্রতিরোধ সৃষ্টি।
করলা তেতো, তবু কিন্তু
রোগে আনে শান্তি,
ঢেঁড়শ খেলে পেটের জ্বালা
দূর হয়ে যায় ক্লান্তি।
পটল-ধনে, ঢেঁড়শ-পুঁইশাক
রোগ প্রতিরোধ করে,
প্রাকৃতিক সব শত্রু নাশে
দেহে প্রাচীর গড়ে।
দানব বিমান
নুশরাত রুমু
কাগজ দিয়ে বিমান বিমান
খেলি না আর মা
হব না যে বিমান চালক
কাঁপে ভয়ে গা।
বিমান আসার শব্দ শুনে
যাই না বারান্দায়
কখন সেটা বিকল হয়ে
পড়ে আমার গায়।
সেদিন স্কুলে একটি বিমান
দানব হয়ে এলো
আমার মতো কতশিশুর
কচি জীবন গেলো।
কাঁদে স্বজন আকুল হয়ে
হারায় বুকের ধন
শিউরে উঠি এসব দেখে
ভীষণ খারাপ মন।
ফজর মানে
মাহমুদা সিদ্দিকা
ফজর মানে সুবহে সাদিক
ক্ষমা পাওয়ার ক্ষণ
আল্লাহভীতি বুকে নিয়ে
মুমিন হওয়ার পণ।
ফজর মানে কঠিন সবর
সফল হওয়ার ডাক
ঘুম হতে নামাজ ভালো
মুয়াজ্জিনের হাঁক।
ফজর মানে কিচিরমিচির
পাখপাখালির গানে
ঘুম ছেড়েযে তাসবীহ-জিকির
আল্লাহ পাকের শানে।
ফজর মানে স্নিগ্ধ কোমল
রহম দয়ার নদী
মুত্তাকিনের জীবন পাবে
ডুবে থাকো যদি।