সাতমাথা

রফিক রইচ

সাতমাথা মাথা নয় সাতখান রাস্তা,

এইখানে টি.ভি দেখে কেউ খায় নাস্তা।

পেপারেতে চাকরিটা খোঁজ করে বেকারে,

তালা সাড়ে খটখট তালাবাজ মেকারে।

চটপটি ফুচকা ও যায় পাওয়া হালিম,

ফলমূল সবকিছু যায় পাওয়া ডালিম।

যানজট মহাজটে দ্যায় মাথা চক্কর,

ভাব ধরে কেউ কেউ মারে শুধু মক্কর।

রঙ্গের হাট বসে এ মাথায় রোজ রোজ,

কত লোক আসে যায় কে- রাখে কার খোঁজ।

মিষ্টি শরৎ

খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন

মেঘ-বৃষ্টি আলোর ফাঁকে

আছড়ে পড়ে রোদ,

পাল তোলা নাও মনের মাঝে

জাগায় কবির বোধ।

শাপলা হাসে বিলের জলে,

ঝিলের পাড়ে হাঁস;

মুচকি হাসে দিঘির তীরে

সবুজ পাতার ঘাস।

গায় মৃদু গান পাখির দলে,

কুসুম ঝরা ভোর;

চড়ুই নাচে গাছের ডালে,

খুলে বাসার দোর।

আশ্বিন আসার কথা

হোসাইন মোস্তফা

হালকা শীতের পরশ নিয়ে

আশ্বিন আসার কথা

শিশির ভিজবে জুঁই শেফালি

ভিজবে ঘাস ও লতা।

শেয়ালকাঁটার ঝোঁপগুলোতে

নেই ধোঁয়াশার সন্ধ্যা

আশ্বিন মাসের চিন চিনে রূপ

যায় লেগে ভাই ধন্ধা!

আশ্বিন মানেই শরৎ ঋতু

লেখা আছে বইতে

প্রকৃতিটা নিচ্ছে দখল

কাঠফাটা রোদ চৈতে!

কাশফুলেরা দুলছে হাওয়ায়

গরম তবু ভ্যাপসা

নগর জুড়ে পুরোদমেই

চলছে এসির ব্যবসা!

আমাদের গাঁ

শাকেরা বেগম শিমু

আয় তোরা আয়,

আমাদের গাঁয়,

শুনবে সেথায়

পাখি গান গায়।

মাঠ ভরা ধান,

সুপারি ও পান,

ফল-মূল, ফুল

শিউলি বকুল।

আঁকাবাঁকা নদী,

বহে নিরবধি,

আম, জাম, কুল

পলাশ শিমুল।

ছায়া সুনিবিড়,

শান্তির নীড়,

আমাদের গাঁ,

দেখে যাওনা।

মেঘ কাটবো সুঁতোয়

তোয়াবুর রহমান

ঐ যে দেখ আকাশ পানে

মেঘের লুকোচুরি

আজকে আমি উড়িয়ে দিলাম

নাটাই বিহীন ঘুড়ি

মেঘটারে আজ কাটবো বলে

এমন ভাবনা মনে

মেঘের সাথে ধরতে বাজি

বসেছি এক ধ্যানে।

উলোট পালোট ঘুড়ি আর মেঘ

কেউ কারে না ছাড়ে

আমিও সুঁতো মেঘের গায়ে

লাগাই বাড়ে বাড়ে।

সুঁতোই পেঁচিয়ে মেঘগুলোরে

দিলাম হ্যাচকা টান

মেঘগুলো তাই পড়ছে ঝড়ে

ভেঙে হয় খান খান।

বিড়াল ছানা

আফসার নিজাম

বিড়াল ছানা বিড়াল ছানা

খাচ্ছো কেনো আমার খানা

আমার স্বাদের ইলিশটাকে

ছুঁ মেরে নাও টুলের ফাঁকে

এখন আমি কি খাবো বল

দুষ্টু তুমি পাজি ও ছল।

আমার ইলিশ তুই খেয়েছিস

দেখবি বিড়াল হবি কানা

বলবি তখন আর খাবো না

আমি তখন খামচে দেবো

আমার ইলিশ কেড়ে নেবো

বুঝবি তখন ওরে পচা

আমার রাগের ভীষণ ফনা।

ভাইয়া এলে বলে দেবো

দুষ্টু দু’কান মলে দেবো

যতোই করিস মানা

মিউ মিউÑ কাঁদবি যতো

খুঁচিয়ে তোর করবো ক্ষত

তখন কী তুই পাবি পানা !

বিড়াল ছানা- হবি ভূতু

সবাই দেবে কাতুকুতু

হেসে হেসে পড়বি যখন

বেঁচে থেকে মরবি তখন

মারখাবি তুই ডাপুস ডুপুস

সারাটা দিন থাকবি উপুষ

বুঝবি তখন কেমন সাজা।

তখন আমি হবো রাজা

একলা খাবো ইলিশ ভাজা

থাকবি চেয়ে মিটিমিটি

করবো আমি খিটিমিটি

দূর হয়ে যায়Ñ বিড়াল ছানা

আমার সাথে মিশতে মানা

দুষ্টু কারো হই না মিতা

বিড়াল ছানা বুঝছ কী তা

ভালো যারাÑ মিষ্টি যারা

তাদের আমি বন্ধু হয়ে

দেই পরিয়ে জরিন ফিতা।

পথশিশু

মাসুম মোরশেদ

বাবা-মা নাই অনেক শিশুর

ভীষণ অসহায়

পেটটা পুরে পায় না খেতে

লাত্থি-গুঁতো খায়।

পথে-ঘাটে হচ্ছে বড়

পায় না কোথাও ঠাঁই

কি-বা করে কেমনে চলে

দেখার মানুষ নাই।

সুষ্ঠু সুন্দর একটা জীবন

আছে অধিকার

দেয় না তা সকল মানুষ

পায় তারা ধিক্কার।

রাষ্ট্র এবং বিত্তবানের

দেখতে হবে ঠিক

নইলে তারা দেশের বোঝা

হারাবে সব দিক।