রোদন
তমসুর হোসেন
বৃক্ষ ও পাখির রোদন সহ্য হয় না বলে
তোমাকে কষ্ট দিতে একটুও মন চায় না আমার স্বদেশ।
তোমার পাদমূলে সাগরের ঢেউ লাফিয়ে পড়ে।
মনের খারাপ অভিলাষে নষ্ট করছে অনেকেই
নদী অরণ্য আর অবারিত সবুজ প্রান্তর
আমার ছোট্ট আঙিনা প্রতিদিন পরিচ্ছন্ন করে রাখি
শস্যের কণা তুলে দেই তোমার পাখিদের ঠোঁটে।
সর্বত্র এখন নকল দেশপ্রেমিক
আর গণবিদ্বেষী অসৎ রাজন্যের মহোল্লাস
তারা পর্বতকে সদম্ভবিক্রমে স্থানচ্যুত করতে চায়
নদীকে প্রবাহিত করতে চায় স্রোতের উল্টোদিকে।
আমার স্বপ্নের প্রাণময় নন্দিত স্বদেশ!
তোমাকে প্রতিদিন অবলোকন করতে চাই প্রভাত রবির কিরণচ্ছটায়।
গুহাবাসী আদিম মানুষেরও হৃদয় বলতে কিছু ছিল
তারা ধরণীকে শ্যামাঙ্গী নারীর মতো ভালোবাসতো
কোন এক পূর্ণিমায় তোমাকে প্রণয়ের কাবিন দেব স্বদেশ
একটি ঝরনাগুঞ্জিত কুটিরে হবে মধুর মৌনালাপ
তোমাকে অনেক স্বপ্ন দেব অনাগত প্রজন্মের জন্য।
দুঃখ ফুলের মধুঘ্রাণ
মহিবুর রহিম
লাগিয়ে দিয়েছি অন্তহীন দুঃখের চারাগাছ
তাকে দোলা দিচ্ছে হৃদয়ের মুক্তমনা বাতাস
রক্ত সেঁচে জল সিঞ্চন করেছি বাগানে
সেখানে প্রতিদিন স্বপ্নের পাখিরা গান করে
আশীর্বাদের রোদ ঝরে পড়ে গাছে গাছে
আর আমার আশা তাতে সযত্ন পাহাড়া দেয়
এই উন্মুক্ত হৃদয় হাওর দুখের দিগন্ত
আমাকে দেয় অন্তহীন স্বপ্নের মায়াফল
বুক ভরে রাখি কতো কষ্ট নদীর কলতান
অরূপ তৃষ্ণা জুড়ায় আমার দুঃখফুলের মধুঘ্রাণ।
প্রতীক্ষায় ছিলাম
আ. শ. ম. বাবর আলী
সূর্যের প্রচণ্ড উত্তাপে ফেটে চৌচির
আবাদি জমিন,
খাঁ-খাঁ রোদ্দুর কেঁপেছে উত্তপ্ত বাতাসে,
বিরানভূমি হয়ে গেছে
মাঠঘাট পথ-প্রান্তর,
তৃষ্ণায় কাতরিয়েছে বিহগ
বনের পশুরাও।
দুরন্ত কালবোশেখি ঝড়
লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে
সকল অরণ্য,
ঝরে গেছে কাননের সবগুলো ফুল
বিরাণ মুলুক ছিল
চিত্র চারদিকে
প্রতীক্ষায় ছিলাম-
আবার অজস্র পুষ্প আর ফল-ফসলে
ভরে যাবে
সবুজ অরণ্য।
প্রতীক্ষা পূরণ শেষে
নবযাত্রা হল আজ নতুন শপথে।