কবিতা
কবিতা
মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি নিজস্ব সীমানায়, বাড়ির আশেপাশে আঙ্গিনাময় শিশির সিক্ত উঠানে ছাদ দেয়ালের লাগোয়া সারিবদ্ধ গাছগাছালি ছায়ায় গাঢ় সবুজ চিরল পাতার উজ্জ্বলতায়, উচ্ছ্বলতায়।
Printed Edition
সায়াহ্ন
জাকির আজাদ
মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি নিজস্ব সীমানায়,
বাড়ির আশেপাশে আঙ্গিনাময় শিশির সিক্ত উঠানে
ছাদ দেয়ালের লাগোয়া সারিবদ্ধ গাছগাছালি ছায়ায়
গাঢ় সবুজ চিরল পাতার উজ্জ্বলতায়, উচ্ছ্বলতায়।
মৃদু বাতাসে সহজিয়ার দোলায়, কমনীয়তায়,
নাম অজ্ঞাত হরেক ফুলের দেহ সৌন্দর্যে, সুগন্ধে
প্রাত্যহিক ভালো-মন্দ জীবন তাড়নায়
ভাবনা চিন্তা ভাবলেশ ধ্যান ধারণায়।
মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি সারাক্ষণ সর্বত্র,
ঘরের প্রতিটি কক্ষে কক্ষে আনাচে কানাচে
দরজার কোনায় যেখানে শিশুকালের খেলা
ওয়ারড্রবে এলোমেলো অবিন্যস্ত কাপড়চোপড়ের মধ্যে।
আলনায় ঝুলানো বাসি ঘামযুক্ত সার্ট গেঞ্জি জামার গায়ে,
খাটের তলায় রাখা নানাবিধ তোরঙ্গ পেটলার ভেতর থেকে
আমার ঘরে বিছানাপত্রে বালিশের তলে, মোবাইল সেটে
লেপ কম্বলের আঁধার করা ওমের মধ্যে।
মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি চলতি প্রেক্ষাপটে,
এইসব রঙ্গিন সাদাকালো হালচাল থেকে
মৃত্যু কি সদর্পে ঘুরে ফিরে মেতে থাকে আলো আধাঁরি খেলায়
মানব মৃত্যু দেখেছি বেসুমার স্বাভাবিক কিংবা অপমৃত্যু।
অদৃশ্য মৃত্যুর দেখা হয়নি সচক্ষে, কতটা বীভৎস,
যে পয়গাম্বর যার বাহক প্রতি মুহূর্ত তার চলাচল
তার আসা আছে যাওয়া নেই শূন্য হাতে
মৃত্যু কি মানুষের পক্ষে নাকি বিপক্ষে অমীমংসাবাদ।
মত্যুগন্ধ পাচ্ছি খুব কাছাকাছি, সন্নিকটে
লেখার টেবিলের চত্বরে বইপত্তর খাতা কলমের নিবে
পেন্সিল শার্পনার কাঁটা-কম্পাস স্কেলে
টেবিল ল্যাম্পের মৃদু আলোতে।
প্রিয় বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায়,
লেখার প্রত্যেক মাত্রা ছন্দে বর্ণে অক্ষরে
রচিত গদ্য, কবিতার মিল মাত্রায় অসমাপ্ত পান্ডুলিপি থেকে
জীবনযাপনের সব পদক্ষেপ প্রতি মুহূর্ত থেকে।
জাগ্রত হও
এম.এ.শিকদার
হে ঘুমন্ত গোলাপ,
আকাশে মেঘের গর্জন কি তোমার
কানে স্পর্শ করে না?
বিদুৎগতির বজ্রপাত দোল খাচ্ছে আকাশ জমিনে,
বজ্রপাতের কম্পনে ভয়াল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে
তোমার চাঁদজমিন,
দেখো কত ভয়ংকর দৃশ্য!
নিশীথ কাকের ঘুম ভেঙে গেল,
ঘুম ভেঙে গেল বনের হরিণের,
অথচ তুমি গভীর ঘুমে বিভোর!
জাগ্রত হয়ে আফসোস করবে,
এক সমুদ্র আফসোস!
হে গোলাপ, ওঠো, ওঠো তুমি,
একবার দেখে নাও
তোমার আপন আলয়ে কী ঘটে যাচ্ছে।
রঙচটা এই শহরে
আনজানা ডালিয়া
এই শহরটাকে ইদানীং অচেনা মনে হয়।
আলো, বাতাস সবই যেন অপ্রয়োজনীয়।
যে পথে জন্মলগ্ন থেকে হেঁটে বেড়িয়েছি
তাও কেমন যেন মিইয়ে, রঙচটা হয়ে গেছে।
বট গাছটা উপড়ে ফেলা হয়েছে আধুনিক করাতে
সব এলোমেলো, অজানা, অচেনা হলো তুমি যেতে যেতে।
শহরটা এমন কেন, চেনা মানুষ হারিয়ে যায়,
অচেনারা কাছে এসে মায়াভরে হাত বাড়ায়।
এ শহরের চঞ্চলতা নিয়ে তুমি চলে গেছো
নিষ্প্রাণ, বিবর্ণ শহরে খুঁজি, মনে হয় আছো।