নাক

সায়ীদ আবুবকর

সাপের ফণার মতো উঁচু হয়ে আছে তার নাক;

সেই নাক দিয়ে বেরিয়ে আসছে নরকের বিষ;

সেই বিষে ভিজে যাচ্ছে বিশ্বের বাতাস;

বিষক্রিয়ায় পড়ছে ঢলে মানুষ ও পাখি।

সকলেই চাচ্ছে, শান দেয়া কোনো ছুরি দিয়ে

কেউ গিয়ে কেটে দিক তার নাক,

অথবা অন্তত সিমেন্ট লাগিয়ে বন্ধ করে দিক

অভিশপ্ত জানোয়ারের নাকের ছিদ্র দুটো।

প্রাপ্তমনস্ক দুপুর

সুমন সাহা

চেয়ারে বসে আছে প্রাপ্ত মনস্ক বয়েস!

ভুল করার সাইকেলও দিক ভুলে―

অন্য রাস্তায় সন্ধ্যা নামায়।

নবীন কিশোরের হাতে গ্রীষ্মের দুপুর―

ক্লান্ত বটগাছ, বিষণ্ন শহরতলীর রাস্তা, তোমাদের বাড়ি...।

ভাঙা চায়ের কাপ এক রাত জাগে―

আরেক রাতকে দেখতে।

ঘাসফুল চুপচাপ।

পাশবালিশ জিরোনার পরে কথা হবে।

হাসিও আটকে যায়―

প্রজাপতির হাসি দেখে না মেঘের চোখ!

তারেও ভাবার সময় কম!

দুপুর চলে যাচ্ছে ঘোরে―পাখির ডানায়।

একাকীত্ব

শামীম শাহাবুদ্দীন

একটা মানুষ বড্ড একা

কেউ জানে না, কেউ দেখে না

লক্ষ-কোটি চোখের ভিড়ে

ক’টা চোখ আর দেখতে পারে?

চোখ থাকতেও অন্ধ হলে

কতটা আর মানুষ থাকে...!

আমরা কী আর মানুষ আছি

মনুষ্যত্ব ভুলে গেছি

যে গাছ আমায় ছায়া দিলো, মায়া দিলো

তার শেকড়েই হানছি আঘাত অবিরত

একটা মানুষ বড্ড একা, বড্ড বোবা

সেই মানুষের বোবা কান্না

কেউ দেখে না, যায় না দেখা..!

একটা মানুষ মরে গেছে

লাশটা শুধু পঁচতে বাকি,

আমরা কবে মানুষ হবো

মানুষ হতে বেজায় বাকি!

জলজ সমর্পণ

মুহাম্মদ রফিক ইসলাম

নাকের ডগায় রক্তের গন্ধ মেখে

উড়ে যাচ্ছে কালের শকুন

ডানার বারুদপালক ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে

পুড়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিন

ডাইনে বায়ে বিভৎস নির্মমতা, করুণ আকুতি

সামনে পিছনে হিংস্র হায়েনার আঙুল

গিলে খাচ্ছে মানবিক পৃথিবীর শরীর

পায়ের নিচে কোন পথ নেই

পথেরও কোন গন্তব্য নেই

মন্তব্যের ঘরে কেবল লাশের দীর্ঘ মিছিল..

ভূ-লুণ্ঠিত মানবতায় দিশেহারা ফিলিস্তিনবাসী

চোখের কোণে জলজ সমর্পণ লুকিয়ে

পলক ধরে রাখে উপরের দিকে, আকাশের দিকে।

আহ্! গাজাবাসী

জান্নাতুল মাওয়া (রিফাত)

আহ্! গাজাবাসী

কি করে দেখাই তোমাদের?

ক্ষতবিক্ষত রক্তপিন্ড,

তোমাদের ঈমানীযুদ্ধে

আমরা ছিলাম নীরব দর্শক!

আহ্! গাজাবাসী

কি করে বোঝাই তোমাদের

অক্ষমতায় জর্জরিত হয়ে,

দেখে যাচ্ছি রক্তে স্নানকৃত প্রথম কিবলার দেশটাকে,

আর আমরা হেরে যাচ্ছি বিশ্বের কাছে।

আহ্! গাজাবাসী

তোমাদের প্রাণের বিনিময়ে

মুসলিমজাতির ঈমান নড়ে উঠুক

কেঁপে উঠুক তাদের অন্তরআত্মা

বিদ্রোহ করুক তাদের বিবেক।

আহ্! গাজাবাসী

তোমাদের ধৈর্যশীলতা, সহনশীলতা

বজ্রকন্ঠ হয়ে বাজুক আমাদের মস্তিষ্কে,

যেন নিশ্চুপ, নীরব ভূমিকার ক্ষমতাসীন

মুসলিম রাজাদের নিদ্রাহীন রাত কাটে।

আহ্! গাজাবাসী

অক্ষমতার অস্ত্র নিয়ে তোমরা যখন নিরুপায়,

পূর্বপুরুষের বিপ্লবী অন্তর নিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে

তখন সারাবিশ্ব অতুল গভীরতায়।

ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ মানুষদের

রক্ষায় যখন ব্যর্থ সমস্ত মুসলিম।

কাফনের কাপড় আবৃত করতে ব্যস্ত তখন প্রতিপক্ষ।