শরৎ এসে
আবুল হোসেন আজাদ
সবুজ সবুজ ধানের ক্ষেতে
বাতাস নেচে যায়,
রাতের শিশির মুক্তা বুঝি
ঘাসেরই ডগায়।
নীল আকাশে ছুটে বেড়ায়
ধুসর মেঘের দল,
চাঁদটা রাতে দেয় বিলিয়ে
জোছনা অবিরল।
ভোরের বেলায় শিউলি তলায়
ভরা ঝরা ফুল,
শাপলা শালুক বিলের জলে
দুলছে দোদুল দুল।
বৃষ্টি রোদের লুকোচুরি
সারাদিনমান,
শরৎ এসে এমনি করে
ভরে মন-প্রাণ।
ডিনার
হাফিজ মুহাম্মদ
টুনটুনিরা ঘর বেঁধেছে
ডুমুর পাতার ফাঁকে
ঘরে ছিল দুটি ছানা
কিচিরমিচির ডাকে।
বাবা টোনা দূরের মাঠে
ধরছে তাজা ফড়িং
ক্ষুধার জ্বালায় ছানা দুটি
করছে তিড়িং বিড়িং।
মা টুনি কয়, একটু সবুর?
জলদি আসবে বাবা–
হরেক রকম আনবে ডিনার
মজা করে খাবা।
খেয়াল খুশি
সরকার জাহিদুল ইসলাম
ফুল কাননে ফুলের সাথে করি লুটোপুটি
পাখির মতো এদিক ওদিক করি ছোটাছুটি
মাটির সাথে হেসে খেলে সময় করি পার
কে দেখে আর কে দেখে না ধার ধারি না তার।
আমার মতো আমি চলি অবাধ স্বাধীনতা
সাগর জলে দোলা দিয়ে ভাঙি নীরবতা
বাতাস হয়ে জেগে ওঠে- নাচি ধানের ক্ষেতে
রাঙা মেঘের ডানায় চড়ে ভীষণ থাকি মেতে।
সারাটা দিন ব্যস্ত দারুণ সময় যে নাই মোটে
ওই যে ভ্রমর ডেকে আবার- বনের পথে ছোটে
হাজার রকম কাজের সাথে অনেক ব্যস্ত থাকি
এদিক ওদিক সবার খেয়াল আমি একা রাখি।
শরৎ এলো
সৌরভ দুর্জয়
বর্ষা গেলো শরৎ এলো
এলো নতুন রূপ
আকাশ জুড়ে মেঘপরীরা
ছড়ায় আগর ধূপ।
নদীর তীরে কাশের বনে
সফেদ দাদি বুড়ি
নেচে নেচে ভরছে যেন
কাশের ফুলে ঝুড়ি।
সকাল বেলা শিউলি তলা
ভরে থাকে ফুলে
দূর্বাঘাসে মুক্তোর মালা
দোলে গলায় ঝুলে।
রাতের বেলা শুভ্র তারা
মিটিমিটি হাসে
তাইতো সবাই শরৎ ঋতু
এতো ভালোবাসে।
শরৎ শোভা
রুমানা নাসরীন
শরৎ এসে বলে গেল
খুকুর কানে কানে
সাজবে ধরা নতুন রূপে
ফুল পাখিরা জানে।
আকাশ পানে চেয়ে দেখো
সাদা মেঘের ভেলা
ধানের খেতে দুষ্টু বাতাস
করছে কেমন খেলা!
গাছে গাছে পাখপাখালির
মিষ্টি কলতান
কাশবনেতে হাওয়ায় ভাসে
মধুর ঐকতান।
দোয়েল পাখি
হানিফ রাজা
দোয়েল পাখি ডালে বসে
কথা বলে মিষ্টি,
বাংলার মাঠে শস্য খেতে
দেখি প্রাণের সৃষ্টি।
বিহানবেলা দোয়েল পাখি
লেজ উঁচিয়ে নাচে,
ছোট্ট শিশু তাই না দেখে
খেলতে খেলতে হাসে।
ঘুঙুর পায়ে নাচতে নাচতে
আকাশে যায় উড়ে,
আনন্দ স্রোত যায় যে বয়ে
শিশুর হৃদয় জুড়ে।
বাংলার ঘরে রোজ সকালে
শুনি তারই কথা,
জাতীয় পাখি দোয়েল আমার
অতুলনীয় যথা।
হাস্নাহেনা
শাকেরা বেগম শিমু
রাতের রাণী হাস্নাহেনা
কেমন তোমার ঘ্রাণ,
সেই সুবাসে হৃদয় জুড়ায়
উতলা হয় প্রাণ।
রাতের বেলা ফোটো তুমি,
রাতেই পড়ো ঝরে,
তোমার ঘ্রাণে নিশির স্বপন
কি মধুময় করে!
জানো তুমি হাস্নাহেনা
আমার বড়োই প্রিয়,
ঘুম না এলে উজাড় করে
সুবাস আমায় দিও।