বৃষ্টি তোরে চাই

আ. শ. ম. বাবর আলী

বৃষ্টি এসে দে ভাসিয়ে

ময়লা দূষণ যত,

মাটির ময়লা মনের ময়লা

আছে ময়লা কত।

বৃষ্টিরে তুই অঝোর ধারায়

নামরে দেশে নাম,

সব ময়লা দূরে দিয়ে

তারপরেতে থাম।

বৃষ্টি ওরে এদেশটারে

ভালোবাসি তাই,

সব ময়লা দূর করতে

বৃষ্টি তোরে চাই।

ছবির মতো দেশ

নকুল শর্মা

ছবির মতো এদেশ আমার

হাজার রঙের মেলা,

পূব আকাশে সকালবেলা

সূয্যিমামার খেলা।

পাখির গানে ঘুম ভেঙে যায়

জাগায় প্রাণে দোলা,

বাতাস হেসে চুমকুড়ি দেয়

দখিন দুয়ার খোলা।

মাঠের পথে বুনোফুলের

মধুর কানাকানি,

মৌমাছি আর প্রজাপতির

নীরব জানাজানি।

নদী ছুটে কলকলিয়ে

ছন্দ তোলা গানে,

সন্ধ্যা নামে পাখির পাখায়

ঘরে ফেরার টানে।

বকের ছানা

হাফিয রেদওয়ান

বকের ছানা ডোবার ধারে

একলা করে খেলা,

হলুদ ডোরা ছোট্ট পুঁটির

ঝাঁক বসেছে মেলা।

খেলার ছলে একটি পুঁটি

যেই নিয়েছে ঠোঁটে,

পুটির ঝাঁকে ভয়ে কাঁপে

এদিক সেদিক ছোটে।

ও পুঁটি ভাই তোমায় খেতে

মা করেছে মানা,

দেখতে না পাই তোমায় আমি

চোখ দুটি যে কানা।

সারা দিনে খেলবো খেলা

ডাঙ্গা কাদা জলে,

আমায় তুমি সঙে রাখো

যাবে নাতো চলে?

বর্ষার জাম

শামীম খান যুবরাজ

বৃষ্টি নাচন দেখছি দারুণ

ব্যালকনিতে বসে,

হাতের কাছে জামের বাটি

জামগুলো টসটসে।

লবণ মরিচ মেখেÑ

পাকনা দেখে দেখে

খাচ্ছি তো জাম

পাচ্ছি মজা

সাধের বর্ষাকাল,

এমন দিনে কালো জামে

ভরে থাকে ডাল।

গাছের তলায় ঝরা জামের

থুপ পড়েছে থুপ,

পুকুরপাড়ে জামের তলে

বৃষ্টি ঝরে ঝুপ।

বাবার মর্যাদা

নূরুন্নাহার নীরু

নালিশ নিয়ে এসেছিল

সাহাবী একজন,

নষ্ট করে একাই বাবা

যা হয় উপার্জন।

কেমন করে চলবে জীবন,

গড়বে গোলা- ধন?

পড়তে হবে দুঃখ-কষ্টে

আসবে অভাব যখন।

বললেন হেসে মহান রাসূল

তুমিও তেমন,

সোনা-দানা, টাকা-কড়ি

বাবার ধন যেমন।

হিসেব নেবার নেই অধিকার

মানতে দিন ক্ষণ।

বাবা হলো সব ক্ষমতা

বাবাই তোমার পণ।

আজকে যদি খুশী দিয়ে

ভরাও বাবার জীবন,

কাল যে আরো দ্বিগুন পাবে

পরকালীন ভুবন!

মানুষ গড়ার কারিগর

বাবাই তোমার যখন,

বাবার সুখেই শান্তি তোমার

নয় অভিযোগ তখন।

শিক্ষা পেল জগৎ জুড়ে

নবীর অনুসারী,

বাবার মান নয়তো খাটো

তিনিও অধিকারী।

বৃষ্টি নামে

এম. আবু বকর সিদ্দিক

বৃষ্টি নামে

ছড়ার খামে

ফোটায় ফোটায় মিল,

টুপ্ টুপ্ টুপ্

ঝরছে পানি

ভরছে ডোবা বিল।

ডোবায় বসে

ডাকছে কষে

কোলা,কুনো ব্যাঙ,

সুরে সুরে

ডাকছে ঘুরে

ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।

নতুন জলে

হেলে-দুলে

ভাসছে খুকুর নাও,

নায়ে চড়ে

আসবে বধূ

ওই পাড়াতে যাও।

কদমফুলের রাজ

সারমিন চৌধুরী

আষাঢ় মাসে বৃষ্টি জলে

হাসে কদমফুল,

সুবাস যেন ছড়িয়ে পড়ে

পুরো নদীর কূল।

নেচে নেচে আসে ছুটে

মৌমাছিদের দল,

পাখপাখালি সবাই মিলে

করে কলকল।

খোকাখুকু ডোঙা বেয়ে

কদমতলে আসে,

ফুলের মালা গলায় পরে

নদীর বুকে ভাসে।

আষাঢ় এলে দেখা মেলে

নতুন নতুন সাজ!

খালে-বিলে সবখানেতে

কদমফুলের রাজ।

বিড়াল ও কাঠবিড়ালি

জহিরুল হক বিদ্যুৎ

পুষি বিড়াল হঠাৎ করেই

উঠলো গিয়ে গাছে,

খোকা ভাবছে হয়তো কোনো

কারণ বুঝি আছে।

কারণটা কী দেখতে খোকা

গাছের নিচে গেলো,

বিড়ালটাকে কাঠবিড়ালি

পেয়ারা ছিড়ে দিলো।

পেয়ারা পেয়েই ছোট্ট বিড়াল

কী যে মহাখুশি,

ফিসফিসিয়ে কাঠবিড়ালি

ডাকছে তাকে পুষি।

লেজ নাড়িয়ে দুজন মিলে

করছে দারুণ ভাব,

খোকার মনেও এমন ছবি

আঁকে মায়ার ছাপ।

বাবা তুমি

শাহীন খান

বাবা তুমি চন্দ্র সূর্য তারা

তুমি আকাশ পাহাড় ঝরনাধারা

শীতল বাতাস নদনদী বন-পাখি

শিল্পী রঙে আমার আঁকাআঁকি ।

তুমি আমার রোদ ঝলমল হাসি

রাখাল ছেলের মুগ্ধ করা বাঁশি

দুঃখ সুখের নাগর দোলায় চড়া

একপৃথিবী সুরের বসুন্ধরা।

বাবা তুমি শান্ত সোনার ছেলে

তুমিহীনা আমি এলেবেলে

দাবি দাওয়ায় মিশে আছো তুমি

তোমায় ছাড়া জীবন মরুভূমি।

তুমি আমার শান্তি পরশ আশা

তোমায় ঘিরে লেখার যত ভাষা

গদ্যে পদ্যে মিশে আছো বাবা

তুমি আমার মায়ার বাঁধন কাবা।

গাছের সেবা

এ.বি.এম নূরুল হক

গাছ-গাছালির সেবা করার

শপথ নেবো আজ,

গাছ-গাছালির লালন করা

সবার ভালো কাজ।

বেশি বেশি গাছ লাগাবো

ধরবে তাতে ফুল,

উল্লাসেতে উঠব মেতে

হাসবে নদীর কূল।

ফলের গাছে ফল ধরবে

জোগান দেবে পুষ্টি,

কাঠের গাছে কাঠ যোগাবে

বাঁচবে জাতি-গোষ্ঠী।

ওষুধি গাছ থাকলে বাড়ি

নেইকো কোনো ভয়,

শোধন করে খেলে পরে

রোগকে করব জয়।

বাবা মানে

মোহাম্মদ মুন্নু

বাবা মানে আলো রেখা,

সবুজ সতেজ বন।

বাবা মানে আদর মাখা,

হাসিখুশি মন।

বাবা মানে চাঁদের আলো,

শোনায় মধুর বাণী,

বাবা মানে কষ্ট পেয়ে

লুকায় চোখের পানি।

বাবা মানে খোলা আকাশ,

সবচেয়ে প্রিয় মুখ,

বাবা মানে মিষ্টি শাসন

যেথায় মিলে সুখ।