বই

তোরাব আল হাবীব

পাখপাখালি ফুলের কথা

গাছগাছালি মূলের কথা

নদীর কথা

গদির কথা

রোদের কথা বোধের কথা আর

কিংবা ধরো আকাশ-জমিন বিশাল পারাবার।

মাটির কথা ভাটির কথা

পথে হাঁটাহাঁটির কথা

রাগের কথা

বাঘের কথা

মিলের কথা দিলের কথা সব

কিংবা ধরো বিদ্যালয়ে শিশুর কলরব।

খেলার কথা মেলার কথা

চরম অবহেলার কথা

আলোর কথা

ভালোর কথা

কালের কথা তালের কথা খুব

কিংবা ধরো বিলের জলে পানকৌড়ির ডুব।

সুরের কথা দূরের কথা

শহর নগর পুরের কথা

বাড়ির কথা

নাড়ির কথা

একটি জাগায় পাবে অবশ্যই

থাকে যদি হাতের কাছে বন্ধুসম বই।

আম কুড়াতে যাই

আব্দুস সাত্তার সুমন

বৃষ্টি পড়ে আম বাগানে

বন্ধু তোরা কই?

কাঁচা আম তুলবো সবে

করিস নে হইচই।

ঝড়ের দিনে আম কুড়াতে

ভীষণ ভালো লাগে,

ঝুড়ি ভরে কাঁচা আম

নিয়ে আসি আগে।

ঝড় এলো ঝড় এলো

আম কুড়াতে যাই,

সরষে বাটা মরিচ গুঁড়ো

আম মাখিয়ে খাই।

হাওয়া বইছে চারদিকে

ভেঙে গেল ঘুম,

টিনের চালে কাঁচা আম

পরছে ধুমাধুম।

মায়ের ছোঁয়া

শরিফ আহমাদ

জন্ম নিয়ে প্রথম শিশু

দেখে মায়ের মুখ,

আঁচল দিয়ে আগলে রাখে

প্রশান্ত হয় বুক ।

কৌশলে মা ভাষা শেখায়

দেয় কুরআনের পাঠ,

ধীরে ধীরে হাঁটতে শেখায়

দেখায় সবুজ মাঠ ।

মায়ের ছোঁয়া পেয়ে শিশুর

নেচে ওঠে প্রাণ,

বড় হয়ে ফুলের মতো

দেয় বিলিয়ে ঘ্রাণ।

শোধ হবে না সারা জীবন

মায়ের কোন ঋণ,

মায়ের ছবি বুকের ভেতর

থাকবে অমলিন।

শান্ত নদী

নিলুফা ইসলাম

শান্ত নদীর শান্ত জলে

হারায় আমার মন

দুপাড়ে তার বসতি আছে

আছে শীতল বন।

নদীর মাঝে বাঁশের সাঁকো

দেখতে লাগে বেশ

বিকেল হলে দখিন হাওয়া

উড়ায় খুকুর কেশ।

বাঁশের খোঁটায় ডিঙি কোষা

বাঁধা ঘাটের ধারে

জলের নিচে পাটের খড়ি

দেখলে নজর কাড়ে।

তালের সারি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে

নদীর কিনার ঘেঁষে

জেলে মিয়া মাছ ধরে যায়

একটু গলা কেশে।

আমি হব পাখি

খালিদ বিন ওয়ালিদ

মিষ্টি পাখি, মিষ্টি পাখি

করছে ডাকাডাকি,

কিচিরমিচির গানে

জাগায় সাড়া প্রাণে।

রঙিন দেহ, রঙিন ডানা

খায় যে আধার দানা,

ডানা মেলে উড়ে

দেশ বিদেশে ঘোরে।

আমি হব পাখি

করব ডাকাডাকি,

নীল আকাশের বুকে

মেলব ডানা সুখে।

ফিলিস্তিনের শিশু

মোহাম্মদ শামীম মিয়া

ফিলিস্তিনের কোমলমতি

শিশু ফুলের মতো

ইসরাইলের ছোড়া গোলায়

রক্ত ঝরছে কত।

ভয়াবহ মৃত্যুপুরী

শান্তির শহর গাজা,

বিনাদোষে শিশুরা সব

পাচ্ছে কেবল সাজা।

চোখের সামনে মরছে স্বজন

পিতা-মাতা ভাই,

কোথায় গেলে সুখী হবে

কারো জানা নাই।

চলছে সময় জাগো সবাই

ফিলিস্তিনে যাও

ইসরাইলকে রুখতে এবার

হুঁশিয়ারি দাও।

ফিলিস্তিনের শিশু বাঁচাই

বন্ধ করি যুদ্ধ,

তাদের মুখে হাসি ফোটাই

জীবন করি শুদ্ধ।

আমার গ্রাম

ফেরদৌস জামান খোকন

গ্রামের পাশে নদীর ধারে

আমার একটা বাড়ি,

এসো বন্ধু বাড়ি আমার

শহরটাকে ছাড়ি।

আম কাঁঠালের মেলা বসে

আমার ছোট্ট গাঁয়ে,

হেথায় এসে বন্ধু তুমি

বসবে গাছের ছায়ে।

মায়ের হাতের নানা পদের

খাবার সবাই খাবো,

বন্ধু তুমি থাকলে পাশে

মজা অনেক পাবো।

নদীতে জাল ফেলি আমি

পেতে মাছের দেখা-

ক্যামন করে মাছ ধরি ভাই

হবে তোমার শেখা।

এবার অফিস ছুটি হলে

এসো চলে তবে,

অনেকগুলো জমা কথা

বলা এবার হবে।

যাসনে ঝড়ে

সাজ্জাদ সাদিক

মেঘ জমেছে নীল আকাশে

হচ্ছে ভীষণ কালো,

সন্ধ্যা যেন ধেয়ে আসে

নিভে যাচ্ছে আলো।

প্রবল বেগে ধেয়ে আসে

দিক দক্ষিণের বাতাস

গাছপালা সব নুয়ে পড়ে

আজ বাহিরে না যাস।

যাসনে ঝড়ে আম কুড়াতে

শুকনো গাছের তলে

সকাল হলে ঝড়ের শেষে

পূর্ণ করিস থলে।

কালবৈশাখী ঝড়

সারমিন চৌধুরী

বৈশাখ এলে ঘুরেফিরে

বাজে খুশির বীণ,

আকাশ ডাকে দিনদুপুরে

কালবৈশাখী দিন।

বৈরী হাওয়া দিচ্ছে নাড়া

পড়ছে কাঁচা আম,

কুড়িয়ে নিচ্ছে খোকাখুকু

দাদু বলে থাম।

মাঠ হাসছে ঘাট ভাসছে

ডুবছে খাল-বিল,

কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে

পড়ছে সাদা শিল।

দিনরাত্রি যাচ্ছে শোনা

ব্যাঙের ঘ্যাঙর ডাক,

মাছের কিলবিল দেখে বগা

দিচ্ছে এখন হাঁক।

আমার পুষি

শফিকুল মুহাম্মদ ইসলাম

মিউ মিউ করে ডাকতি রে তুই

মাতিয়ে সারা বাড়ি,

না দিলে তুই খেতি নারে

ভরা থাকলে হাঁড়ি।

কোথায় রে তুই হারিয়ে গেলি

পাইনি তোকে খুঁজে;

দুধমাখা ভাত কে খাবে রে

চোখ দুটি তার বুজে।

কভু যদি তোর সাথে হায়

আমার হয় রে দেখা;

চিনতে পারলে আসিস ছুটে

দেখে হাতের রেখা!

তোর মতো আর হয় না কেহ

বাসে নারে ভালো,

তুই যে আমার সারা ঘরে

ছড়িয়ে দিতিস আলো!