শিশু মহান

আকিব শিকদার

আজকে তুমি অবুঝ শিশু, করছ খেলা

আগুন-পানি, ফুল আর কাঁটা, মাটির ঢেলা

কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ, বিবেচনায়

তাও জানো না-

ফেলছো ছুঁড়ে অবহেলায় সোনাদানা।

কাল যে তুমি জাতির পিতা, শিক্ষাগুরু

জ্ঞানেগুণে আর মহিমায় পাহাড় চূড়ো

সত্য-মিথ্যা করবে প্রমাণ যুক্তি দিয়ে

অমানিশার কাটবে আঁধার-

কঠিন হাতে ভাঙবে যতো অত্যাচারীর রুদ্ধ দুয়ার।

আজকে তুমি শিশু বটে, খেলছো আপন মনে

কাল যে তুমি দীক্ষা দেবে নীতি এবং জ্ঞানে

তোমার আলোয় রাঙবে বিশ্ব, উঠবে রবি

আনবে দেশের মান -

আজকে তুমি শিশু বটে, কাল যে হবে মহান।

যে গাঁয়েতে

নূরজাহান নীরা

মাসের পরে মাস চলে যায়

হয় না নেওয়া খবর

কেমন আছেন গাঁয়ের মানুষ

বাবা মায়ের কবর।

যে গাঁয়েতে হেসে খেলে

দিন কেটেছে মোর

যে গাঁর হাওয়া বাড়িয়ে দিত

ক্লান্ত মনের জোর।

যে গাঁয়েরি আকাশ দেখে

স্বপ্ন বুনতাম রোজ

সেই স্বপ্ন আজ হাতে পেয়ে

নেই না তারই খোঁজ।

যে গাঁয়েরি মেঠো পথে

কাটত সারাদিন

যে গাঁয়েতে জড়িয়ে আছে

হাজার মায়ার ঋণ।

নেই না খবর ঋণ কতটুক

নেই না খবর কারও

হয় না যাওয়া সে পথেতে

এখন একটি বারও।

অভ্যাস

জাহাঙ্গীর অরণ্য

বিড়ি খায় দাদুভাই আর কাশে খক খক

দাদি মায় বাধা দেয় করে শুধু বক বক

এই বুঝি যায় প্রাণ

দম নিয়ে ফের টান

ধোঁয়া উড়ে ভরে ঘর গন্ধেতে ভক ভক।

অভ্যাসে দাস ভাই তাই বিড়ি টানা চাই

চা’র সাথে চিনি চাই জর্দ্দাতে পান তাই

অবশেষে একদিন

বুক করে চিন চিন

ঘুরে মাথা পড়ে যায় খুকিদের দাদুভাই।

বহু টেস্ট দেখে তার সোজা বলে ডাক্তার

এতো বিষ শরীরেতে বাঁচবে না বেশি আর

শুনে দাদু হায় হায়

চাপড়াল মাথাটায়

বিড়ি চিনি পান নয় বেঁচে থাকি যদি আর।

ভাঙা গড়া

জনি সিদ্দিক

গড়তে লাগে অনেক সময়

ভাঙতে লাগে স্বল্প,

ভাঙতে পারে অনেক লোকে

গড়তে পারে অল্প।

ইটের পরে ইট বসিয়ে

দালান গড়ে মানুষ,

একটু ভুলে হারায় ফেলে

জীবন নামের ফানুস।

ছোট্ট ভুলেই যায় ভেঙে যায়

কত্তো জনের আশা,

আশাহত মানুষ কতো

পায় না ভালোবাসা।

গড়তে যদি পারো তুমি

ভাঙো কেবল তবে,

এমন কীর্তি যাও রেখে যাও

নাম হয়ে রয় ভবে।

দূর করে দাও ভুলের খেলা

থাকো গড়ার তরে,

পাবে দেখা সুখের রেখা

সফল কাজের পরে।

এখন তবে যাও এগিয়ে

তোমরা জনে জনে,

মনের ভেতর লক্ষ্য রাখো

দেশটা গড়ার পণে।

খোকার প্রশ্ন

শামসুন্নাহার সুমনা

ছোট্ট খোকন মাকে শুধায়

জানতে আমি চাই,

কার দয়াতে মাগো আমরা

আলো বাতাস পাই?

কেমন করে সৃষ্টি হলো

আমাদের এই ধরা?

চন্দ্র সূর্য আকাশ মাটি

কার হাতে সব গড়া?

কেমন করে মেঘের থেকে

ঝরে মাগো পানি?

জগৎ জুড়ে কে করেছে

সৃষ্টি নানান প্রাণী?

বলো আমায় কোন সে মহান

যার তুলনা নাই,

তারই পরে মাগো আমি

সিজদা দিতে চাই।

নদীর বাঁকে

মোশাররফ হোসেন

নদীর বাঁকে ঝাঁকে ঝাঁকে

পুঁটি মাছের খেলা,

বড়শি নিয়ে ধরব গিয়ে

সকাল সন্ধ্যা বেলা।

গাছের থেকে উঠলে ডেকে

মাছ ধরা এক পাখি,

বলব তারে করিস না রে

মিছা ডাকাডাকি।

মনের সুখে নদীর বুকে

ধরব আমি মাছ,

ইচ্ছে হলে আয় রে চলে

নদীর বাঁকের কাছ।

মন হতে চায়

শেখ বিপ্লব হোসেন

মন হতে চায় ঘুড়ি

কিংবা চাঁদের বুড়ি,

ফড়িং হয়ে সবুজ ঘাসে

করি ওড়াউড়ি!

মন হতে চায় পাখি

ফুলের সুবাস মাখি,

সবুজ সবুজ স্বপ্নগুলো

কোথায় বলো রাখি!

মন হতে চায় কী যে

সুখ সাগরে ভিজে,

মেঘের পাড়ায় তারায় তারায়

স্বপ্ন কুড়াই নিজে!

খোকন ও প্রজাপতি

শামীমা জান্নাত শিউলী

খোকন সোনা দেখতে পায় যে

একটা প্রজাপতি,

উড়ে উড়ে বেড়ায় ঘাসে

তাহার মতিগতি।

খোকন সোনা প্রজাতির

নেয় যে চুপে পিছু,

ধরতে গেলে দেয় না ধরা

খোকার মাথা নিচু।

খোকন সোনার মনটা খারাপ

পায় না প্রজাপতি,

চালাক ভীষণ প্রজাপতি

ওড়ে ঊর্ধ্বগতি।