টি এইচ মাহির
বাংলা ঋতুর সর্বশেষ ঋতু বসন্ত। বসন্ত আসে তার সজীবতা নিয়ে। শীতের রুক্ষতার শেষে রঙিন আবহে আগমন ঘটে ঋতুরাজের। নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্যে জেগে ওঠে বৃক্ষরাজি। এই বসন্তের অন্যতম আকর্ষণ ফুল।
ফুলের সুবাসে প্রকৃতির মোহময় রূপ ধরা দেয়। কয়েকটি বসন্তের ফুল সম্পর্কে জেনে নিই:
পলাশ: টকটকে লাল রঙের এই ফুল অরণ্যের অগ্নিশিখা নামে পরিচিত। বসন্ত এলেই বাগান ভরে ওঠে পলাশে। লাল রঙের ছাড়াও হলুদ এবং লালচে কমলা রঙের পলাশ ফুল দেখা যায়। এর ত্রিপদী পাতা রেশমের মতো সূক্ষ্ম। সাহিত্যে পলাশ ফুল এসেছে নানাভাবে।
কৃষ্ণচূড়া: লাল, কমলা, হলুদ রঙের মিশেলে কৃষ্ণচূড়া যেন বসন্তের দূত। শীতকালে ঝরে পড়া পাতাগুলো আবার সজীব হয় বসন্তে। কৃষ্ণচূড়া ফুলে চারটি পাপড়ি থাকে। উজ্জ্বল সবুজ পাতা দৃষ্টিনন্দন কৃষ্ণচূড়া ফুল সবার মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।
শিমুল: শিমুল ফুল বসন্তের অন্যতম আকর্ষণ। পাতাঝরা এই ফুল গাছের শীতে পাতা ঝরে গেলেও ফাল্গুনে ফুল ফোটে। চৈত্র, বৈশাখে শিমুল গাছ থেকে তুলা আসে। লাল বর্ণের শিমুল ফুলে মুগ্ধ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, “শিমুলের কুঁড়ি, এক রাত্রে বর্ণবহ্নি জ্বলিল সমস্ত বনজুড়ি।”
গাঁদা: বসন্তে সুবাস ছড়ানোর পাশাপাশি সাজসজ্জায় ব্যবহৃত হয় গাঁদা ফুল। হলুদ, সাদা, কমলা বিভিন্ন রঙের গাঁদা ফুল দেখতে পাওয়া যায়। তাছাড়া এর ওষুধি গুণ থাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
নয়নতারা: গোলাপি আর হালকা গোলাপি রঙের নয়নতারা সাধারণত পাঁচ পাপড়ি বিশিষ্ট হয়। অনেকে একে পয়সা ফুলও বলে। নয়নতারা গাছ অনেক বছর পর্যন্ত বাঁচে।
কনকচাঁপা: শীতে পাতা ঝরে পড়ার পর যখন নতুন পাতা আসে তখন বাদামী রঙের হয়। তারপর ধীরে ধীরে এর রং সবুজ হয়। বসন্ত এলেই কনকচাঁপা থোকায় থোকায় সুবাস ছড়ায়।
ডালে ডালে হলুদ কনকচাঁপা ফুল দুলে ওঠে। এসব ফুল ছাড়াও বসন্তে আরও রং বেরঙের ফুল দেখা যায়। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, চাঁপা, মাধবীলতা, সন্ধ্যামালতীসহ নানান ফুল জানান দেয় বসন্ত এসে গেছে।