মোহাম্মদ লিয়াকত আলী
বাঘ-সিংহ মানুষের কোনো উপকার করে না। তবুও মানুষ নিজেকে বাঘের বাচ্চা, সিংহ সাবক বলে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করে। গরু নিরীহ প্রাণি। শুধু মানুষের উপকার করে যায়।
মালিকের জন্য দিনরাত খেটে যায়। তবু মানুষকে গরু বললে রাগ করে। তবে দুধের বিনিময়ে লাথি খেতে আপত্তি নেই।
সিংহ হলো বনের রাজা। তার দাপটে অন্য পশুরা ভয়ে মরে। খিদে পেলেই যার তার ঘাড় মটকে খায়।
আজ খিদে একটু বেশিই পেয়েছে বনের রাজা সিংহের । বড়সড় একটা পশু পেলে খেতে ভারি মজা হবে । এ-ই তো মিলে গেছে। একটা গরু বনের দিকেই আসছে। গরু তো গরুই। তা-না হলে লোকালয় ছেড়ে মরার জন্য বনে আসে?
কিন্তু ঘটনা খারাপ। গরুও টের পেয়ে গেছে, সিংহ তাকে খাওয়ার জন্য ঘাপটি মেরে আছে। গরুর তো আঙ্গুল নেই, তাই বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে পারে নাই। বরং
পাছা দেখিয়ে ভোঁ দৌড়।
দৌড় প্রতিযোগিতায় সিংহও কম নাকি? সেও পিছনে ধাওয়া করে। সামনে ছিল কাদায় ভরা পুকুর। গরু এবার সত্যি সত্যি গরুর পরিচয় দিয়েছে।
কাদার মধ্যে লাফিয়ে পড়েছে। সিংহও তাকে অনুসরণ করে । এখন গরু ও সিংহের একই দশা। ভিখ চাই না, কুত্তা সামলা।
- গরু ভাই, দুজনেই মাইনকার চিপায় আইটকা গেছি। এখন উপায় কি?
- তোমার কোনো উপায় নেই, গোলাম হোসেন। আমার একজন মালিক আছে। তিনি যখন জানতে পারবেন, আমি গোয়ালে ফিরিনি, তখন লাঠি-টাঠি হাতে খুঁজতে খুঁজতে এখানে চলে আসবেন। আমাকে টেনে তুলে নিয়ে যাবেন।
- আমার কি হবে?
-তুমি তো নিজেই রাজা। তোমার তো কোনো ও মালিকই নেই। পেঁকের মধ্যে পঁচে মরা ছাড়া তোমার কোন উপায় নেই , গোলাম হোসেন।
কিন্তু যার মালিক স্বয়ং আল্লাহ তাকে বিপদে ফেলে কোন রাজা মহারাজা?