জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
আরশি নামের একটি ছোট্ট মেয়ে। সে জাঙ্ক ফুড খেতে খুব ভালোবাসত। তার প্রিয় খাবার ছিল চিপস, চকোলেট, বার্গার, পিজ্জা আর কোল্ড ড্রিংকস। তার মা তাকে সব সময় বলতেন, “আরশি, এসব খাবার স্বাস্থ্যকর নয়। তুমি বেশি করে ফল আর সবজি খাও।” আরশি মায়ের কথা শুনতো না। সে মনে মনে ভাবতো, ফল আর সবজি খেতে একদম ভালো লাগবে না। তাই এগুলো কখনও খাওয়া যাবে না।
এদিকে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার কারণে আরশির শরীরটা কেমন যেন অলস হয়ে থাকতো। সে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তো আর তার পড়াশোনায় মন বসতো না। একদিন স্কুলের টিফিনে তার বন্ধু রিয়াকে সে দেখল, টিফিন বক্সে সুন্দর করে আপেল আর কলা নিয়ে এসেছে। রিয়া হাসিমুখে টিফিন খাচ্ছিল। আরশি রিয়ার কাছে গিয়ে বলল, তোমার টিফিনে তো শুধু ফল। এসব খাবার কি তোমার ভালো লাগে? রিয়া বলল, হ্যাঁ, আমার মা বলেন ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকে আর মনও ভালো থাকে। ফল এবং শাক-সবজি না খেলে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধে।
আমার মা আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’। স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে মনও ভালো থাকে না।
আরশি রিয়ার কথা শুনে ভাবল, তাহলে আমিও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শুরু করব। পরদিন থেকে আরশিও রিয়ার মতো তার টিফিন বক্সে ফল আর সবজি নিয়ে যেতে শুরু করল। প্রথম দিকে তার তেমন একটা ভালো না লাগলেও ধীরে ধীরে সে স্বাস্থ্যকর খাবারের স্বাদ পেতে লাগল। সে দেখল, জাঙ্ক ফুড খাওয়ার পর তার শরীরটা কেমন যেন অলস হয়ে থাকত, কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার ফলমূল এবং সবজি খাওয়ার পর তার শরীর এখন আগের চেয়ে অনেক সতেজ লাগছে। সে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি খেলাধুলা করতে পারে। আগে সে সামান্য একটু দৌড়ালেই হাঁফাতে থাকত। কিন্তু এখন অনেকক্ষণ দৌড়ালেও তার
হাঁফাতে হয় না।
আরশি নিজের এতোদিনের ভুল বুঝতে পারল। এখন সে বুঝতে পেরেছে যে, ভালো থাকার জন্য সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। এরপর থেকে সে তার মাকে বাজার থেকে সবজি আনতে বলত এবং সেগুলো দিয়ে কী কী মজার খাবার বানানো যায়, তা নিয়ে ভাবত। আরশি শুধু নিজেই নয়, তার বন্ধুদেরও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উৎসাহিত করতে শুরু করল। রিয়া আর আরশি মিলে স্কুলের টিফিনের সময়ে ফল-সবজি দিয়ে মজার মজার সালাদ বানাত আর সবাই মিলে খেত। আরশি এখন তার জাঙ্ক ফুডের অভ্যাস ছেড়ে দিয়ে একটি নতুন, স্বাস্থ্যকর জীবন শুরু করল।