জুবাইর আল হাদী
রিমঝিম বৃষ্টির দিনে, শহুরে ব্যাস্ত জীবনে যদি ফুল কিছুটা মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয়—তাতে দোষ কোথায়? গোমড়া-মুখো কাজলকালো আকাশ আর হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টির টুপটাপ শব্দে এক অদ্ভুত আবেশ নামে চারপাশে। বনে-বাগানে সুগন্ধে বিভোর করে রাখে ফুলেরা। বর্ষার আগমনী গান যেন বেজে ওঠে শাখায় শাখায় কদমফুলের হর্ষধ্বনিতে।
এই ঋতুতে সাদা ফুলের উপস্থিতি হয়ে ওঠে আরও মোহময়। গাঢ় মেঘলা আকাশের পটভূমিতে বর্ষার জলে স্নাত সাদা ফুল যেন পবিত্রতার প্রতীক হয়ে ওঠে। ছাদবাগান হোক, বারান্দা কিংবা ঘরের এক কোণ—বর্ষায় সাদা ফুলের আলাদা এক আবেদন থাকে। সে আবেদনকে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে হলে, জানতে হবে বর্ষার সাদা ফুলদের পরিচয়।
বর্ষায় যে অসংখ্য ফুল ফোটে, তাদের বেশিরভাগই সাদা। এরা অধিকাংশই ফোটে রাতে—সুগন্ধ ছড়িয়ে জানান দেয়, ওরা এসেছে। কেন রাতে? এ এক রহস্য। নিশাচর পতঙ্গদের আকৃষ্ট করতেই তো! রাতে রঙিন ফুলের রং চোখে পড়ে না, কিন্তু সাদা ফুলেরা আলোছায়ায় নিজেদের জানান দেয়। আবার না দেখলেও ক্ষতি নেই—ওদের ঘ্রাণই যথেষ্ট।
এই বর্ষার স্নিগ্ধ দূতের তালিকায় আছে—বেলি, দোলনচাঁপা, কামিনী, সাদা কাঠগোলাপ, মালতি, সুগন্ধি জুঁই, যূথী, বকুল, গন্ধরাজ, শ্বেতচাঁপা, শ্বেতরঙ্গন, স্পাইডার লিলি (সুদর্শন), রজনিগন্ধা ও মেহেদি ফুল। ঘ্রাণ না থাকলেও আছে টগর, কাঠটগর, চীনা টগর, শাপলা, কুন্দ, শ্বেতকাঞ্চনের মতো ফুলেরা।
সম্প্রতি আমাদের দেশে অ্যারোমেটিক বা ক্লিমেটিস জুঁই-এর প্রসার ঘটছে। তার মিষ্টি ঘ্রাণ বর্ষার ভ্যাপসা দুপুরেও এনে দেয় প্রশান্তির ছোঁয়া।