DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

গল্প

পুষ্পিতার গোলাপ চারা

পুষ্পিতা নার্সারি থেকে কেজিতে উঠেছে। মেধা তালিকায় প্রথম স্থান হয়েছে। পুষ্পিতার অবশ্য সে বিষয়ে এত মাথাব্যথা নেই। তার কাছে পাসটাই বড় কথা। যদিও সবাই বলাবলি করছে, পুষ্পিতা অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। এতে তার মাঝে মাঝে ভালো লাগা কাজ করছে। সে মনে মনে অবশ্য স্থির করেছে প্রতি বছর সে প্রথম হবেই।

Printed Edition
sdfdsf

রেজা কারিম

পুষ্পিতা নার্সারি থেকে কেজিতে উঠেছে। মেধা তালিকায় প্রথম স্থান হয়েছে। পুষ্পিতার অবশ্য সে বিষয়ে এত মাথাব্যথা নেই। তার কাছে পাসটাই বড় কথা। যদিও সবাই বলাবলি করছে, পুষ্পিতা অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। এতে তার মাঝে মাঝে ভালো লাগা কাজ করছে। সে মনে মনে অবশ্য স্থির করেছে প্রতি বছর সে প্রথম হবেই।

পুষ্পিতার খুশিকেও ছাপিয়ে গেছে তার পিতামাতার খুশি। তারা মহানন্দে ভাসছে। তার মা তো প্রতিবেশীদের কাছে কেবল পুষ্পিতাকে নিয়ে বলছেন। শুধু বলছেন না, মিষ্টিও পাঠাচ্ছেন। পুষ্পিতা অবাক হয়ে মায়ের কর্মকাণ্ড দেখছে। মা আজ তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছেন। চুমু অন্যদিনও খান। তবে আজকেরটা একটু ব্যতিক্রম যেন। আনন্দে মা কেমন যেন অন্যরকম হয়ে গেছেন। পুষ্পিতার অবশ্য ভালোই লাগছে। ঈদ ঈদ লাগছে।

সন্ধ্যায় বাবা একটি গোলাপের তোড়া নিয়ে পুষ্পিতার হাতে দিতে দিতে বললেন, তোমার সফলতার জন্য তোমাকে অভিনন্দন মা মণি।

পুষ্পিতা বললো, ধন্যবাদ বাবা।

বাবা পুষ্পিতার জন্য অনেক কিছু এনেছেন। চকলেট, আইসক্রিম, খেলনা। কিন্তু পুষ্পিতার সবচেয়ে ভালো লেগেছে গোলাপের তোড়া। সে তোড়া থেকে ফুলগুলো খুলে পানিতে ভিজিয়ে রাখে। তারপর অবাক হয়ে চেয়ে থাকে।

মা খেতে ডাকেন। পুষ্পিতা খাওয়া শেষ করে আবার গোলাপের কাছে চলে আসে। সে মনে মনে ভাবে, ফুল কত সুন্দর! আজ কোনো পড়া নেই তাই পুষ্পিতা ফুলের সাথে গল্প করেই কাটিয়ে দেয়।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই পুষ্পিতা ফুলের কাছে চলে যায়। ফুলগুলো কেমন যেন ম্লান হয়ে গেছে। তেমন সতেজতা আর নেই। পুষ্পিতার মন খারাপ হয়। সে পুরনো পানি ফেলে দিয়ে নতুন পানি দেয়। দুপুরে ফুলগুলো আরও ম্লান হয়। বিকালে আরও। রাতে আরও বেশি। আজ সারাদিন পুষ্পিতা ফুলের সাথেই কাটিয়েছে। রাতে খাওয়ার সময় মা দেখে পুষ্পিতার মন খারাপ। ভীষণ খারাপ। মা বুঝতে পারেন। বলেন, ঝরে যাওয়া ফুল ধীরে ধীরে তার সৌন্দর্য হারায়। এটিই স্বাভাবিক। এজন্য মন খারাপ করতে হয় না।

কিন্তু পুষ্পিতার মন ভালো হয় না। সে ফুলের শোকে কাতর হয়ে যায়। তার মনে হয় এত সুন্দর ফুল যদি কখনোই সৌন্দর্য না হারাতো! ভাবতে ভাবতে মন খারাপ করেই একসময় ঘুমিয়ে পড়ে।

পরদিন অফিস থেকে ফিরে বাবা পুষ্পিতাকে আবারো চমকে দেয়। বাবার হাতে আজ আর ফুলের তোড়া নয়। আস্ত একটি গোলাপের চারা। বেশ কিছু গোলাপ ফুটে আছে। লাল টকটকে। মুহূর্তেই পুষ্পিতার মন ভালো হয়ে যায়।