বাংলাদেশে সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা, সে কমিশনের সুপারিশমালা প্রণয়ন এবং তা নিয়ে বিতর্ক-নতুন কোনো বিষয় নয়। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই জাতি এ ধরনের দৃশ্যপট অবলোকন করে আসছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই ১৯৭২ সালে ড. কুদরতে খোদার নেতৃত্বে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এ কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ, বিজ্ঞানভিত্তিক, মানবিক ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয় তা নিয়েও শুরু থেকে বিতর্ক ছিল। অনেকেরই দাবি ছিল, এ সংবিধানে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামত ও জীবনচর্চার প্রতিফলন ঘটেনি।
কিন্তু কুদরতে খোদা কমিশনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল ’৭২ -এর সংবিধানের চারটি মূলনীতি অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করা। যেহেতু সংবিধানেই জাতির আশা-আকাক্সক্ষা পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি, তাই এ সংবিধানের আলোকে প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও বিতর্ক হওয়াটা অস্বাভাবিক ছিল না। বাস্তবেও তাই হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম কমিশন থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর চিন্তাধারা, মনন ও জীবন যাপনকে উপেক্ষা করা হয়। কুদরতে খোদা কমিশন সকল ধর্মের জন্য আলাদা পুস্তক না রেখে একটি সমন্বিত “নীতিশিক্ষা” পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের প্রস্তাব করে। দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এই কমিশনের প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করে। ফলে দেখা যায়, কুদরতে খোদা শিক্ষা কমিশনের অধিকাংশ সুপারিশমালাই আর বাস্তবায়িত হয়নি।
ইতিহাস অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে তারা শিক্ষাখাতে আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মূল কারণ হলো, আওয়ামী লীগ এমন একটি দল যাদের সুনির্দিষ্ট একটি ভিশন আছে। তারা দেশকে একটি নির্দিষ্ট অবস্থানের দিকে নিয়ে যেতে চায়। এ কারণে আওয়ামী আমলগুলোতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মননে পরিবর্তন আনার প্রয়াস নেয়া হয়; আর মন-মানসিকতায় পরিবর্তন নিয়ে আসার সবচেয়ে বড়ো হাতিয়ার হলো শিক্ষা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরপর ১৯৯৭ সালেও আওয়ামী লীগ শামসুল হক শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এ কমিশন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার সিলেবাসেও যুগোপযোগী পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদে (২০০৯-২০১৪) আবারও জাতীয় শিক্ষা কমিশন ও শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। সেখানেও কুদরতে খোদা কমিশনের মতো একীভূত শিক্ষা এবং সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে একই পাঠ্যক্রম চালুর সুপারিশ করা হয়। সর্বোপরি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। ফলে সমাজের নানা স্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিষয়কে ধর্মহীনতা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা’ বলা হয়। পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে একীভূতকরণের প্রস্তাবও বিতর্কের জন্ম দেয়।
এখানেই শেষ নয়। ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে পাঠ্যক্রমের যুগোপযোগী রূপান্তরের অংশ হিসেবে জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন করা হয়। এবারও শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে বেশ অসন্তোষের সূত্রপাত হয়। বিশেষ করে ২০২৩ সালে এসে এ প্রতিক্রিয়া বেশ তীব্র আকার ধারণ করে। নানা মহল থেকে অভিযোগ ওঠে যে, পরিকল্পিতভাবে পাঠ্যসূচিতে ইসলামি ও ধর্মীয় বিষয়বস্তুর পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়েছে। সমতা প্রতিষ্ঠার নামে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম আর হিন্দুদের পাঠ্যপুস্তকে সামঞ্জস্যবিধান করা হয়। ইতিহাস ও জাতীয়তাবাদের ব্যাখ্যা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সমকামিতা ও লিঙ্গ পরিবর্তন ও শারীরিক শিক্ষার নামে যৌনাচার শিক্ষা দেয়ার অভিযোগও উঠেছিল সে সময়ে।
এবার আসা যাক, নারীনীতি প্রসঙ্গে। যারা একটু ইতিহাস স্মরণে রাখেন তাদের নিশ্চয়ই মনে থাকবে যে, আওয়ামী আমলেও ২০১১ সালে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণীত হয়েছিল। ঐ সময়েও এ নীতিমালাটি ব্যাপকভাবে বিতর্কের জন্ম দেয়। সরকারের দাবি অনুযায়ী নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য ছিল নারীর মানবাধিকার, সমঅধিকার এবং সমাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। তবে, কিছু ধারাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক গোষ্ঠী থেকে তীব্র বিরোধিতা দেখা যায়। এর কারণও ছিল।
নীতিমালায় নারীর সম্পত্তিতে সমানাধিকার নিশ্চিত করার প্রস্তাব ছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইসলামী স্কলারগণ এটিকে ইসলামী শরিয়ার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেন। কুরআনে অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে পুরুষের উত্তরাধিকার নারীর তুলনায় দ্বিগুণ নির্ধারিত হয়েছে। কেননা, নারীরা একাধিক উৎস থেকে উত্তরাধিকার সম্পত্তি পায় যা পুরুষেরা পায় না। কিন্তু নারী নীতিতে যে সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে তা কুরআনের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। ২০১১ সালে প্রণীত নারী নীতিমালার ১৭.৫ ধারায় বলা হয়েছিল, “কোনো ধর্মের অনুশাসনের ভুল ব্যাখ্যার ভিত্তিতে নারী স্বার্থের পরিপন্থী এবং প্রচলিত আইন বিরোধী কোন বক্তব্য প্রদান বা অনুরূপ কাজ বা উদ্যোগ গ্রহণ না করা।” ধর্মীয় স্কলারগণ এ ধারাকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে গণ্য করেছিলেন। ২০১১ সালের নীতিমালাটি জাতিসংঘের সিডাও সনদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যেই প্রণীত হয়। কিন্তু মুসলিম স্কলারদের অভিমত ছিল, সিডাও সনদের বেশিরভাগ ধারাই কার্যত ইউরোপীয় জীবনধারার প্রতিফলন এবং মোটাদাগে ইসলামী সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিস্ময়কর হলেও সত্য, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গঠিত নারী সংস্কার বিষয়ক কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে যে সুপারিশমালাগুলো প্রদান করেছেন তার অধিকাংশই ২০১১ সালের বিতর্কিত সেই নারী নীতিমালারই প্রতিফলন মাত্র। ২০১১ সালের মতো এবারের নারী সংস্কার কমিশনও সম্পদে উত্তরাধিকার বণ্টনের ক্ষেত্রে কুরআনিক আইন বা মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের স্থলে সমতা বিধান করারই সুপারিশ দিয়েছেন। নারীর অবাধে চলাফেরা ও কর্মক্ষেত্রের স্বাধীনতাসহ যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলোও আমাদের সমাজের বিদ্যমান কাঠামোতে ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া নারীদের পোশাক পরিধানের স্বাধীনতার নামে যে কোনো পোশাক পরিধানের ব্যাপারেও সমাজের বড়ো অংশের মানুষের আপত্তি রয়েছে এবং তা অযৌক্তিকও নয়।
নারীদেরকে বহির্মুখী ও কর্মমুখী করার নামে যে দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তাতেও পরিবারের কাঠামো কিংবা পারিবারিক শৃংখলা ভেঙে পড়তে পারে বলে বিদগ্ধজনেরা অভিমত দিয়েছেন। যাদের প্রয়োজন আছে এবং যারা সুস্থ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ পাবেন তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ইসলামও এক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেনি। কিন্তু তাই বলে গৃহিনীর সাংসারিক কার্যক্রমকে অবমূল্যায়িত করার কিংবা গুরুত্ব না দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সমাজে যে অস্থিরতা বর্তমানে দৃশ্যমান হচ্ছে এবং পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে যে ধরনের অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে কিংবা ক্রমবর্ধমান অশ্নীলতার ফাঁদ ও প্রলোভন থেকে সন্তানদেরকে নিরাপদে রাখার জন্য অভিভাবকদের যে পরিমাণ সময় দেয়া প্রয়োজন-অনেক ক্ষেত্রেই তারা তা দিতে পারছেন না। পিতামাতাকে পর্যাপ্ত কাছে না পাওয়ায় সন্তানেরা সঙ্গী হিসেবে যে ব্যক্তি বা বিষয়গুলোকে বিকল্প মনে করছে তা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে অনেকটাই অনিশ্চিত করে ফেলছে এবং একইসাথে সমাজেও নৈতিকতা প্রসারিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সাম্প্রতিক নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালাতেও ২০১১ সালের মতোই সিডাও সনদ অনুসরণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। সিডাও একটি ভিন্ন বাস্তবতায় প্রণীত যার সাথে বাংলাদেশের সমাজ কাঠামো ও মানসিকতার কোনো সম্পর্ক নেই। তাই সিডাও যদি জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় তা সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে পারে।
আমি মূলত শিক্ষানীতি ও নারীনীতি নিয়েই আলাপ করলাম। এ আলোচনা অন্যান্য সেক্টর নিয়েও করার সুযোগ ছিল। কিন্তু লেখার কলেবর সীমিত থাকায় আর অগ্রসর হলাম না। ১৯৭২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষানীতি কিংবা বিভিন্ন সময়ে প্রণীত নারী নীতিমালা বা এগুলোর সুপারিশ প্রসঙ্গের অবতারণা করার মূল কারণ হলো, পুরো প্রক্রিয়াতেই কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন: এসব কমিশন নিয়ে বরাবরই বিতর্ক ছিল এবং আছে। কেননা কমিশনগুলোতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয় না। আর একটি দৃশ্যমান মিল হলো, যেহেতু সমাজের সব শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব থাকে না; তাই এসব কমিশনের সুপারিশমালাও সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় না।
এটি আমাদের করুণ বাস্তবতা যে, বাংলাদেশের প্রায় সব সেক্টরের ঊর্ধ্বতন পজিশনগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষ ঘরানার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে স্বাধীন বাংলাদেশের একদম শুরু থেকেই। তাই কেবল কুদরতে খোদার প্রথম শিক্ষা কমিশন বা নারী সংস্কার কমিশনই নয় বরং যে কোনো খাতেই হাত দিতে চাইলেই অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে দায়িত্বগুলো ধর্মনিরপেক্ষ ঘরানার মানুষদের ওপরই চলে যায়। আর তারা নিজেরা যেহেতু ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতা লালন করেন এবং ধর্মীয় শ্রেণী থেকে অনেকটা দূরে থাকেন, ফলে তাদের প্রস্তাবিত সুপারিশমালাগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষতাই প্রতিফলিত হয়।
বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠিত সকল কমিশন কিংবা সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দিকে তাকালেও এ নির্মম বাস্তবতা চোখে পড়ে। সম্ভবত এ কারণে, এ ধরনের নীতি নির্ধারণী পরিসরে বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর কন্ঠ যেমন খুব একটা শোনা যায় না, তেমনি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও সংস্কৃতিও এ পরিসরগুলোতে অগ্রাহ্যই করা হয়। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক অথবা রাজনৈতিক সরকার- দেখা গেছে সব আমলেই ধর্মনিরপেক্ষ মানুষগুলোই এ ধরনের স্পর্শকাতর কাজগুলো করার সুযোগ পান। পাশাপাশি মিডিয়ার সমর্থনও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এরকম চিন্তাধারার লোকগুলোকে সামনে না আনলে মিডিয়ার পৃষ্ঠপোষকতাও সেভাবে পাওয়া যায় না। কারণ মিডিয়াগুলোও আবার বহুদিন সময় নিয়ে এদেরকেই সমাজের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
ইসলামী দলগুলোর সংকট হলো, তারা এ সংকট থেকে উত্তরণে আদর্শিক ছাড় দিতে যতটা সক্রিয় হয়েছে, কিংবা সেক্যুলার আধিপত্যবাদীদের আস্থাভাজন হতে যে পরিমাণ চেষ্টা করেছে, সে তুলনায় নিজেদের আদর্শিক হেজিমনি প্রতিষ্ঠায় তৎপর হয়নি। ইসলামী দলগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনশক্তিই সমাজের খেটেখাওয়া মানুষ বিশেষ করে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীরই প্রতিনিধিত্ব করে। তাই রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এবং স্পর্শকাতর কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ তারা খুব একটা পায় না। ফলে, রাষ্ট্র মেরামতের এ ধরনের প্রক্রিয়ায় ইসলামপন্থীরা যেমন সাইডলাইনে থেকে যায় তেমনি ইসলাম ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মবিশ্বাস ও সংস্কৃতি আড়ালেই পড়ে রয়।
বছরের পর বছর রাষ্ট্র বা সরকার কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করবে, সুপারিশমালা প্রদান করবে; সেগুলোতে ধর্মীয় মূল্যবোধকে উপেক্ষা করা হবে আর ধর্মানুরাগী মানুষগুলো কেবল এর প্রতিবাদ করে যাবে কিংবা বক্তব্য, বিবৃতি বা মানববন্ধনেই প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ থাকবে-এ করুণ বাস্তবতা থেকে এবার বেরিয়ে আসা দরকার। ইসলামপন্থী প্লাটফর্মগুলোর কিছু ভিশন নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, ফ্যাসিবাদের পতনের পর নতুন বাংলাদেশে রাষ্ট্র মেরামতের যে সুযোগ এসেছে সেখানে ইসলামপন্থীরা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারেন কিংবা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তারা কীভাবে সম্পৃক্ত হয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন-এসব বিষয়ে এখন থেকেই কিছু সুনির্দিষ্ট ও গোছানো কৌশল প্রণয়ন করা প্রয়োজন। একইসাথে, আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে কীভাবে গড়ে তোলা যায় তা নিশ্চিত করার জন্য এখন থেকেই মানসম্মত জনশক্তি ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ইসলামী প্লাটফর্মগুলোর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া প্রয়োজন।