॥ আহমদ মতিউর রহমান ॥

গাজায় নির্বিচারে নিরপরাধ মানুষ হত্যার পর ইসরাইল সিরিয়ার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। গাজা যুদ্ধ অবসানে একটি যুদ্ধ বিরতি আলোচনা চলার মুহূর্তে ইসরাইলী বাহিনী সিরিয়ায় ব্যাপক হামলা চালায়। বিশ্লেষকেরা এ হামলাকে সিরিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের কৌশল হিসেবে দেখছেন। এ হামলা দেশটির ইসলামপন্থী সরকারের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়েও দেখা দিচ্ছে বলে তাদের মত। ইসরাইল এ হামলাকে দ্রুজ গোষ্ঠীকে রক্ষার জন্য পরিচালিত বলা হলেও তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

গত ডিসেম্বরে একনায়ক বাশার আল আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে বিদ্রোহীরা। এর মাধ্যমে দেশটির দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। নতুন সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন একটি বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান আহমদ আল শারা। এর পর বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দেয়া হয়। তবে বেদুইন যোদ্ধা ও দ্রুজ বন্দুকধারীদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সম্প্রতি। যা দেশটির ভঙ্গুর নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে। খবরে বলা হচ্ছে এমন একসময়ে এসব সংঘাত ঘটছে, যখন নতুন সরকার বিভক্ত দেশটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। গত ১৩ জুলাই দ্রুজ সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দক্ষিণ সিরিয়ায় দ্রুজ মিলিশিয়া ও সুন্নি বেদুইন যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। এটি এখনো চলছে। এরই মধ্যে গত ১৫ জুলাই ইসরাইল সিরিয়ায় হামলা চালায়। যদিও আগে থেকেই তারা দেশটিতে মাঝেমধ্যে হামলা চালিয়ে আসছিল। ইসরাইল দাবি করেছে, তারা দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে ও সিরিয়ার সরকারপন্থী বাহিনীকে দমন করতে এ হামলা চালিয়েছে। এর আগে গত মার্চে সিরিয়ার উপকূলীয় প্রদেশগুলোতেও ভয়াবহ সংঘাত হয়। সে সংঘাতে শত শত আলাউতি সম্প্রদায়ের মানুষ নিহত হন। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এ সম্প্রদায়ের একজন সদস্য।

অভিযোগ উঠেছে, সিরিয়ার সরকারপন্থী বাহিনীগুলো দক্ষিণাঞ্চলের সুয়েইদা প্রদেশে দ্রুজদের ওপর হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলেছে, সংঘর্ষে শুধু সুয়েইদাতেই অন্তত ৩৫০ জন নিহত হয়েছেন। সুয়েইদা প্রদেশে গত এপ্রিল ও মে মাসে প্রথমবারের মতো রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়। তখন দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে সিরিয়ার নতুন নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘাতে ৩০ থেকে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর দ্রুজ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশটিতে এটাই দ্বিতীয় বড় সংঘাত। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভয়াবহ সহিংসতা ও ইসরাইলের তীব্র হামলার কারণে সিরিয়ায় নতুন সরকারের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এক দশকের বেশি সময়ের গৃহযুদ্ধের রেশ কাটতে না কাটতে ও ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের ক্ষমতা দখলের মধ্যেই এ আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট ও সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আহমেদ আল-শারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সিরিয়া, লেবানন, ইসরাইল ও অধিকৃত গোলান মালভূমিতে দ্রুজ জনগোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। তাদের প্রায় অর্ধেকই বসবাস করে সিরিয়ায়। সে হিসেবে দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ দ্রুজ। ইসরাইলে দ্রুজদের রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত হিসেবে ধরা হয়। ফলে তারা দেশটির সেনাবাহিনীতেও যোগ দিতে পারে। দ্রুজরা আরবিভাষী একটি ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, শিয়া সম্প্রদায়ের একটি শাখা। ইসরাইলের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইল ও অধিকৃত গোলান মালভূমিতে প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার দ্রুজ বাস করে।

ঐতিহাসিকভাবে সিরিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দ্রুজদের সব সময় একটি অনিশ্চিত অবস্থানে থাকতে হয়েছে। প্রায় ১৪ বছরব্যাপী চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে দক্ষিণ সিরিয়ায় দ্রুজরা নিজেদের মিলিশিয়া বাহিনী পরিচালনা করেছে। গত ডিসেম্বরে বাশারের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে নতুন সরকার দক্ষিণ সিরিয়ায় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু দ্রুজরা সেটার বিরোধিতা করছেন। এ সরকারের প্রতি দ্রুজ নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিভক্ত। নেতাদের একটি অংশ সরকারের বিষয়ে সতর্ক। অন্যরা শারা সরকারের কর্তৃত্বের সরাসরি বিরোধী।

আল-শারার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্রুজ সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ সিরিয়ায় আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু সরকারি বাহিনীও জনগোষ্ঠীটির ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসওএইচআরের প্রতিবেদনে সরকারি বাহিনী দ্রুজদের ‘নির্বিচারে হত্যা’ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ধরনের প্রতিবেদনের কারণে দ্রুজদের অনেকের মধ্যে দামেস্কের কর্তৃপক্ষের প্রতি অবিশ্বাস বেড়েছে।

ইসরাইল কেন হামলা করছে? ইসরাইল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। বাশারের পতনের পর থেকে ইসরাইল নিজেদের উত্তর সীমান্তের কাছে বসবাসকারী দ্রুজ সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এটি সিরিয়ার সংখ্যালঘুদের সঙ্গে দেশটির মিত্রতা গড়ার দীর্ঘদিনের চেষ্টারই অংশ। ইসরাইল নিজেকে সিরিয়ার কুর্দি, দ্রুজ ও আলাউতি সংখ্যালঘুদের ত্রাণকর্তা হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে। তাদের সহায়তার অজুহাতে দেশটির সামরিক ঘাঁটিসহ সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে তেল আবিব। মে মাসের গোষ্ঠীগত সংঘর্ষের সময় ইসরাইল দামেস্কের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের কাছাকাছি বিমান হামলা চালিয়েছিল। তখন বলেছিল, এটি দ্রুজদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে একটি সতর্কবার্তা। কিন্তু সিরিয়া ও লেবাননের কিছু দ্রুজ নেতা ইসরাইলের এ হামলার বিরোধিতা করেন। তাদের অভিযোগ, এ অঞ্চলে নিজের সম্প্রসারণবাদী আকাক্সক্ষা পূরণের জন্যই গোষ্ঠীগত বিভাজন বাড়ানোর চেষ্টা করছে ইসরাইল।

মূলত একটি সতর্কবার্তা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে সিরিয়ায় সাম্প্রতিক বিমান হামলাগুলো চালিয়েছে ইসরাইল, এমনটাই বলছে তেল আবিব। উদ্দেশ্য, সিরিয়ার সেনাবাহিনী যাতে দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন করা না হয়। দ্রুজদেরর রক্ষার কথা বলা হলেও এ এলাকায় ইসরাইল একটি বেসামরিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চায়। ইসরাইলের উদ্বেগ, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে দেশটির বর্তমান সরকারের অনুগত যোদ্ধারা অবস্থান নিতে পারেন। এখান থেকে ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমির দূরত্ব বেশি দূরে নয়। তাই নিজেদের উত্তর সীমান্তের এ অঞ্চলে শারা সরকারের অনুগত যোদ্ধাদের উপস্থিতি নিয়েই তাদের যত মাথাব্যথা।

ইসরাইলের গত ১৫ জুলাইয়ের বিমান হামলা সুয়েইদা প্রদেশে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও সামরিক যানবাহনে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৬ জুলাই রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সেনা সদর দপ্তর ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আশপাশে হামলা চালায় তারা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সিরিয়া ও দেশটির কিছু মিত্রদেশ এসব হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ১৬ জুলাইয়ের হামলাগুলো ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে দেশটিতে চালানো হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। গত ডিসেম্বরে বাশার উচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন স্থানে ছয় শতাধিক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। যদিও এই সরকারকে ইসরাইলের প্রতি নমনীয় বলে মনে করা হয়। ইতিমধ্যে গোলান মালভূমির জাতিসংঘ-নিয়ন্ত্রিত একটি বাফার জোনে (নিরপেক্ষ অঞ্চল) সেনা পাঠায় সিরিয়া।

১৬ জুলাই হামলার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ সহিংসতা নিয়ে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। ওই দিনই তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমরা এমন কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপের বিষয়ে সম্মত হয়েছি, যা আজ রাতেই এ ভয়াবহ ও দুঃখজনক পরিস্থিতির অবসান ঘটাবে।’ বুঝা যাচ্ছে মার্কিন মধ্যস্থতায় ইসরাইল-সিরিয়া কোন সমঝোতা হয়ে থাকতে পারে। এর পর নতুন করে কোন হামলা চালানো হয় কি না তা এখন দেখার বিষয়। সমঝোতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে প্রেসিডেন্ট শারার বক্তব্যেও। সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট শারা বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের একটি পথ খোলা ছিল। তবে আমেরিকা, সৌদি আরব ও তুরস্কের মধ্যস্থতা এই অঞ্চলকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তিনি ইসরাইলকে দোষারোপও করেছেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসরাইল চায় সিরিয়ার জনগণের ঐক্য ভেঙে দিতে এবং সিরিয়াকে অন্তহীন বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঠেলে দিতে। সিরিয়ার জনগণ যুদ্ধকে ভয় পায় না এবং এই পরিস্থিতিতে তাদের সামনে দুটি বিকল্প আছে। হয় আমরা সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিনিময়ে ইসরাইলের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়াবো অথবা দ্রুজ সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তি ও শেখদের সচেতন হতে দেবো। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, রাষ্ট্র সিরিয়ার জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। ইসরাইলি হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও, তাদের সেনাবাহিনী স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং অবৈধ গোষ্ঠীগুলোকে সুইদা অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করতে সফল হয়েছে।

লেবানন, ইরাক, কাতার, জর্ডান, মিসর, কুয়েতসহ একাধিক আরব রাষ্ট্র ১৬ জুলাই সিরিয়ার সরকারি ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ইসরাইলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলাকে ‘ইসরাইলের সুস্পষ্ট আগ্রাসন’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে। ইরানও এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এ সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান এবং সিরিয়ার নেতা আহমদ আল-শারা ফোনে দামেস্কে ইসরাইলের হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় এরদোয়ান বলেন, ইসরাইলের এ হামলা ‘অগ্রহণযোগ্য এবং গোটা অঞ্চলের জন্য হুমকি। ইসরাইল রক্তপিপাসু ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিরিয়ার দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে অজুহাত বানিয়ে দেশটিতে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। তিনি দৃঢ় ভাষায় জানিয়েছেন, সিরিয়ার ভৌগোলিক অখ-তা রক্ষায় তুরস্ক কখনোই কোনো ধরনের বিভাজন মেনে নেবে না। এসব প্রতিক্রিয়া গতানুগতিক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তা ইসরাইলকে নিবৃত্ত করতে পারবে বলে তারা মনে করেন না।

কোন কোন বিশ্লেষক মনে করেন, দামেস্কে যুদ্ধবিমানগুলো সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সামরিক সদর দপ্তর ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আশপাশের এলাকা লক্ষ্য করে যে হামলা এগুলো কোনো সীমান্তবর্তী ‘ফ্রন্টলাইন’ এলাকা ছিল না। দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষার নামে এ হামলা হলেও তা ছিল শক্তি ও ঔদ্ধত্য প্রদর্শনের জন্য। তারা গাজায় ইতিমধ্যে ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে । এমন এক রাষ্ট্র এখন সংখ্যালঘুদের রক্ষাকর্তা সাজতে পারে না। এটা আরব ঐক্য দুর্বল করার কৌশল মাত্র। কিন্তু সিরিয়াই ইসরাইলের শেষ গন্তব্য নয়। তার আকাক্সক্ষা এখন অঞ্চলটির আরও গভীরে প্রসারিত হয়েছে।

এখন কী অপেক্ষা করছে? সিরিয়ার গোষ্ঠীগত সহিংসতা দেশটির গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অবস্থার নাজুক পরিস্থিতির স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। সাম্প্রতিক এসব সংঘাতের কারণে দেশটিতে আবার গোষ্ঠীগত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট শারা পুরো সিরিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। এ সরকার প্রায় ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে গভীরভাবে বিভক্ত দেশটির গোষ্ঠীগত বিভক্তি মেটাতে পারবে কি না সে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, গোষ্ঠীগত সংঘাতের পাশাপাশি ইসরাইলের উপর্যুপরি হামলা শারার রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও যুদ্ধ-পরবর্তী সম্প্রীতি স্থাপনের প্রয়াসকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।