বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সাধারণত সুসংবাদ পাওয়া যায় না। তাই সামান্য একটু সুসংবাদ পাওয়া গেলে তা নিয়ে আশান্বিত হওয়া যায়। এমনই একটি সুসংবাদ পাওয়া গেছে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে। দীর্ঘ ৪ বছর আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্য বাংলাদেশের অনুকূলে এসেছে। শুধু তাই নয় বর্তমানে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্যে বাংলাদেশের অনুকূলে উদ্বৃত্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সব দেশই চায় আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্য তাদের অনুকূলে থাকুক। একটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং ব্যয়ের নিদিষ্ট কিছু খাত থাকে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাতগুলো যদি চাঙ্গা এবং গতিশীল থাকে এবং ব্যয়ের খাতগুলো তুলনামূলক সংযত থাকে তাহলে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্যে উদ্বৃত্তের সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্য উদ্বৃত্ত থাকুক এটা সবাই চায় কিন্তু চাইলেই তো সব কিছু পাওয়া যায় না।
আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কয়েকটি ইস্যু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানে রয়েছে পণ্য রপ্তানি আয়। প্রতি বছর পণ্য রপ্তানি থেকে যে আয় হয় তা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কিন্তু পণ্য রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সীমাব্ধতা হচ্ছে এ খাতে যে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রতিবছর আয় হয় তার অন্তত ৪০ শতাংশই কাঁচমাল,ক্যাপিটাল মেশিনারিজ এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানিকালে পুনরায় বিদেশে চলে যায়। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের মূল্যসংযোজনের হার তুলনামূলকভাবে কম। বাংলাদেশ এখন কার্যত তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্যে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। স্থানীয় কাঁচামাল নির্ভর পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ তেমন একটা সফলতা পাচ্ছে না। অথচ স্থানীয় কাঁচামাল নির্ভর অনেক পণ্য আছে যা রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারি খাত হচ্ছে জনশক্তি। জনশক্তি এমনই এক অর্থনৈতিক খাত যার মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় পুরোটাই জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন করে। কারণ জনশক্তি রপ্তানি খাতের জন্য কোনো কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় না। উপরন্ত এ খাত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান করছে। কিন্তু এ খাতটি সম্পূর্ণ পরিকল্পনাবিহীনভাবে চলছে। বাংলাদেশ থেকে যে জনশক্তি প্রতি বছর বিদেশে রপ্তানি করা হয় এর অধিকাংশই অপ্রশিক্ষিত ও অদক্ষ শ্রমিক। ফলে তারা বিদেশে গিয়ে কর্মক্ষেত্রে নানা সমস্যায় পতিত হচ্ছেন। এছাড়া কর্মদক্ষতার অভাবে বেতন-ভাতাও পাচ্ছেন তুলনামূলকভাবে কম। সীমিত সংখ্যক দেশ ও অঞ্চলের উপর জনশক্তি রপ্তানি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। অথচ বিশ্বের এমন অনেক দেশ আছে যেখানে দক্ষ শ্রমশক্তির বিপুল চাহিদা রয়েছে। আমাদের অনেকেই মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের ৬টি মুসলিম দেশই বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানির মূল্য কেন্দ্র হওংয়া উচিৎ। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং জনশক্তি রপ্তানি কখনোই কোনো দেশের দয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে চলতে পারে না। উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে না পারলে কোনোভাবেই সফলতা অর্জন করা যাবে না। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের তৃতীয় খাত হচ্ছে বৈদেশিক আর্থিক সহায়তা ও ঋণ। কিন্তু এখন আর বৈদেশিক সহায়তা তেমন একটা পাওয়া যায় না। আর যেনোতেনোভাবে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করলে তা ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। এছাড়া নির্দিষ্ট সময় পর বৈদেশিক ঋণের অর্থ সুদসমেত ফেরৎ দিতে হয়। মূলত এ তিনটি খাত থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ গঠনে ভূমিকা পালন করে থাকে।
আর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের কতগুলো খাত আছে। এর মধ্যে সবার আগে উল্লেখ করতে হয় আমদানি ব্যয়ের ইস্যুটি। বাংলাদেশ তার মোট ব্যবহার্য পণ্যের ২৫ শতাংশ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করে থাকে। অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদদের মধ্যেমে চাহিদা পূরণ করা হয়। কিন্তু যেসব পণ্য আমদানি করা হয় তা হাই ভ্যালু প্রোডাক্ট। ফলে এ খাতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। বাংলাদেশ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) এর মধ্যেমে বেশ বিভিন্ন দেশ থেকে বেশ কিছু পণ্য বাকিতে এনে থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর আকুর সে দেনা পরিশোধ করতে হয়। এ দেনা পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে। মাঝে মাঝেই পত্রিকার খবর প্রকাশিত হয় আকুর দেনা পরিশোধের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের স্থিতি কমে দাঁড়িয়েছে এত কোটি মার্কিন ডলার। এটা হয় মূলত আকুর দেনা পরিশোধের কারণেই। গৃহীত বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ নির্দিষ্ট সময় পর পরিশোধ কার্যক্রম শুরু হয়। বিদেশি ঋণের কিস্তিু ও সুদ পরিশেধের জন্যও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ ব্যয় করতে হয়।
উপরে বর্ণিত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং ব্যয়ের মধ্যে সৃষ্ট পার্থক্যই হচ্ছে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ঘাটতি বা উদ্বৃত্ত। যদি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের পরিমাণ আয়ের চেয়ে বেশি হয় তাহলে আন্তর্জাতিক লেনদেনে ঘাটতি সৃষ্টি হবে। আর যদি ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হয় তাহলে আন্তর্জাতিক লেনদেনে উদ্বৃত্ত অবস্থার সৃষ্টি হবে।
বিগত সরকার আমলে নানা অনিয়ম-অনাচােেরর কারণে আর্থিক সেক্টরে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছিল। উন্নয়নের নামে ঢালাওভাবে অর্থ ব্যয় করার প্রবণতা প্রত্যক্ষ করা গেছে। যেহেতু স্থানীয়ভাবে রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে কোনো সাফল্য প্রদর্শন করতে পারেনি তাই সরকার বিদেশ থেকে ঢালাওভাবে ঋণ গ্রহণ করে তা উন্নয়ন কাজে ব্যবহারের নামে আত্মসাৎ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ গঠিত শ্বেতপত্র কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার সমতুল্য ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বিগত সরকার আমলে রাষ্ট্রীয় আনুকূলে একটি দুর্বৃত্ব গোষ্ঠী ব্যবসায়-বাণিজ্যের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বের করে নিয়ে তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছেন। যাদের সুযোগ ছিল তারা বিদেশে পাচার করেছেন।
অর্থ পাচারের সুবিধার্থে চিহ্নিত মহলটি বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবহার করেছ। বাংলাদেশ ব্যাংককে কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার দু’/একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। অর্থনীতিবিদগণ মনে করেন, কোনো সময় দেশে যদি উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রবণতা দেখা দেয় তাহলে অন্যান্য ব্যবস্থার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বাড়িয়ে দেয়। পলিসি রেট বাড়িয়ে দিলে সিডিউল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ বা ধার গ্রহণের সময় আগের তুলনায় বেশি সুদ দিতে বাধ্য হয়। কিডিউল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদ হারে গৃহীত ঋণের অর্থ উদ্যোক্তা এবং সাধারণ গ্রহীতাদের মাঝে ঋণ প্রদানের সময় আগের চেয়ে বেশি সুদ চার্জ করবে। এতে ঋণ গ্রহীতাদের মাঝে নতুন করে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমে যায়। বাজারে মুদ্রার যোগান হ্রাস পায়। এক সময় মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে। যদিও এতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবিরতা নেমে আসার আশঙ্কা থাকে। কাজেই কোনো দেশই দীর্ঘ দিন পলিসি বাড়িয়ে রাখে না।
যেসব দেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতিকালে পলিসি রেট বাড়িয়েছিল তারা পরবর্তীতে দ্রুতই তা কমিয়ে আনে, যাতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ মন্থর হয়ে না পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট বাড়ালেও ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার গত সরকারের পতনের আগ পর্যন্তও ৯ শতাংশে ফিক্সড করে রেখেছিল। এতে সিডিউল ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ সংকোচন নীতি গ্রহণ করে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগের তুলনায় বেশি সুদে ঋণ এনে তা তুলনামূলক কম সুদে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়নি। কিন্তু সরকার সমর্থক ব্যবসায়ি গোষ্ঠী তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ বের করে নেয়। এ ঋণের অর্থ নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ না করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছেন। এমনকি বিদেশে রপ্তানি করেছেন। এ চিহ্নিত গোষ্ঠীর সুবিধার্থে প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার অনেক দিন পর্যন্ত ১১০ টাকায় নির্ধারণ করে রেখেছিল। বাজারে তখন মার্কিন ডলারের প্রচন্ড ক্রাইসিস চলছিল। ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা হলেও কার্ব মার্কেটে তখন প্রতি মার্কিন ডলার ১২২/১২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। জেনুইন ব্যবসায়িরা ব্যাংক থেকে মার্কিন ডলার ক্রয় করতে ব্যর্থ হয়ে কার্ব মার্কেট থেকে উচ্চ মূল্যে মার্কিন ডলার কিনে তাদের প্রয়োজন পূরণ করতে থাকেন।
এদিকে ব্যাংকি চ্যানেলের চেয়ে কার্ব মার্কেটে প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ১২/১৩ টাকা বেশি হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা হুন্ডির মাধ্যমে তাদের উপার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করতে থাকেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় দেশে প্রেরণ করতে উৎসাহি হয়। এটা বর্তমান সরকারের ভালোবাসার নিদর্শন নয়। বর্তমান সরকার আমলে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার পর্যায়ক্রমে বাজার ভিত্তিক করার ফলে ব্যাংকিং চ্যানেল এবং কার্ব মার্কেটে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারের মধ্যে ব্যবধান কমে আসে। মার্কিন ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজার ভিত্তিক করার পরও মুদ্রা বাজারে কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়নি। মাঝে মাঝেই স্থানীয় মুদ্রা টাকা মার্কিন ডলারের বিপরীতে শক্তিশালি হয়ে উঠছে। ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ এবং মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকায় ফিক্সড করে রাখার কারণে দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একটি মহল ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। বিআইবিএম’র গবেষক ড. শাহ আহসান হাবিব তার এক গবেষণায় প্রমান করেছেন, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয় তার ৭৫ শতাংশই যায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় দেশে আসা বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি আয় আগের তুলনায় বেশি হারে দেশে আসছে। পণ্য আমদানির নামে দেশ থেকে অর্থ পাচার আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। পণ্য আমদানি কমেছে তা নয় কিন্তু পণ্য আমদানির নামে অর্থ পাচার অনেকটাই কমেছে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতির হারও হ্রাস পেতে শুরু করেছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি কমে প্রায় ২ হাজার ৪৫ কোটি মার্কিন ডলারে নেমেছে। প্রবাসী আয় রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত এক বছরে সরকার ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছে। চার বছর পর চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৯৮ কোটি মার্কিন ডলার। তার আগের বছর চলতি হিসেবে ঘাটতি ছিল ৬৫১ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ফিক্সড করে না রাখতো এবং ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে না রাখতো তাহলে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না। এমনকি অর্থ পাচার অনেকটাই সীমিত থাকতো। বিগত সরকারের মূল্যনীতি ছিল, অতি উন্নয়নের নামে অতি দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটে নেয়া এবং আত্মীয়-স্বজন এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের অর্থ সম্পদ লুটের সুযোগ করে দেয়া। এরাই এখনো বলেন, আগের সরকার আমলেই দেশ ভালো ছিল। লুটেরাদের কাছে তো দুর্নীতিবাজ সরকারই ভালো হবেন।
যারা দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটে নিয়েছে তাদের কোনোভাবেই ক্ষমা করা যাবে না।