মো. সোহরাব আকন্দ

আজ ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ গরিব-দুঃখী মানুষের চিকিৎসা এবং সমাজ উন্নয়নের মহান সেবক ডা. মুহাম্মাদ ওমর ফারুকের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালের এ দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি স্বাস্থ্যসেবার এক দীপশিখা। দূরদর্শী চিকিৎসক ও মানবতাবাদী হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে তার নাম উঠেছে। তার চিকিৎসা পেশার বাইরেও প্রচলিত ধারার বিপরীতে কমিশনমুক্ত স্বাস্থ্যসেবার জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখে গেছেন। পাশাপাশি স্বল্প ব্যয়ে উন্নতমানের গুণগত মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য তিনি সমমনা চিকিৎসকদের নিয়ে গঠন এবং পরিচালনা করেছেন বিভিন্ন এক প্রতিষ্ঠান।

‘ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল এবং দি বারাকাহ কিডনি হাসপাতাল’ তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল, যা কি না অসংখ্য ব্যক্তির জন্য সাশ্রয়ী এবং উচ্চমানের চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার প্রতি তার অঙ্গীকার তাকে দেশের বিভিন্ন থানায় ফিডার ক্লিনিক স্থাপন করতে পরিচালিত করেছিল, যেন দূরবর্তী এলাকার মানুষও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পেতে পারে।

ডা. ফারুকের স্বাস্থ্য খাতে অবদান শুধু হাসপাতাল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি দেশীয় ঔষধ শিল্পকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ডেল্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করে তিনি সাশ্রয়ী এবং কার্যকর ওষুধ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। শিক্ষা ও গবেষণার প্রতি তার মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করার প্রচেষ্টায় প্রকাশ পেয়েছিল। স্বাস্থ্যসেবা পেশার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লালনপালন করার মাধ্যমে তিনি দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন। এছাড়া ‘শিকড় ইন্টারন্যাল স্কুল’ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তার দর্শন স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে বিশ্বাসে নির্মিত ছিল। তিনি অক্লান্তভাবে এমন নীতির পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন, যা সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সবাইকে গুণগত চিকিৎসাসেবা পেতে নিশ্চিত করবে। ডা. মুহাম্মদ ওমর ফারুকের উত্তরাধিকার বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার এবং নীতিনির্ধারকদের ক্রমাগত অনুপ্রাণিত করে চলেছে। অন্যদের জীবন উন্নত করার জন্য তার অবিচল অঙ্গীকার মানবতার প্রতি আবেগের শক্তি এবং আশার এক প্রদীপ।

লেখক : জনসংযোগ কর্মকর্তা।