দু’যুগেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করেছিল থাকসিন সিনাওয়াত্রা পরিবার। অবশেষে তার আপাত অবসান ঘটলো তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে। এমনটা ধারণা করা হচ্ছিল দু’মাস ধরেই। অবশেষে আদালতের রায়ে তা চূড়ান্ত হলো। গল্প বা রূপকথার মতো শোনালেও একটি ফোন কলের সূত্র ধরে শেষ পর্যন্ত পেতংতার্নের রাজনৈতিক কারিশমা বা জীবন যাই বলি না কেন শেষ হয়ে গেল। শুক্রবার পেতংতার্নের বরখাস্তের মধ্য দিয়ে আপাতত সিনাওয়াত্রা পরিবারের অধ্যায় শেষ হয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় এ ঘটনায় দেশে রাজনৈতিক সংকটেরও আভাস পাওয়া যাচ্ছে। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নির্ধারণ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কোন সমঝোতা না হলে এমনকি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দিকেও যেতে হতে পারে। অন্যদিকে সেনা অভ্যুত্থানের সম্বাবনাও উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে না। আগামী কয়েকটি দিন বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

মূলত: ব্যবসায়ী হলেও এশিয়ার মোটামুক্তি শক্ত অর্থনীতি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে গড়ে উঠেছিল থাকসিন সিনাওয়াত্রা পরিবারটি। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ফলে এ দেশে তার একটি ভাল ইমেজ গড়ে ওঠে। দেশের সাধারণ মানুষও তার সস্পর্কে আগ্রহী ছিলেন। পরে অবশ্য সরকারগুলোর সাথে এ হৃদ্যতা তেমনটা থাকেনি। ২০০১ সালে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পেতংতার্ন সিনওয়াত্রার বাবা থাকসিন সিনওয়াত্রা। তার নীতি ও অর্থনৈতিক প্রজ্ঞার কারণেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠেন থাকসিন। তিনি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়নমূলক কর্মসূচি চালু করেন। এ নীতি সাধারণ জনগণের মধ্যে তার বিশাল সমর্থন তৈরি করে। ২০০৫ সালে আবারও ক্ষমতায় এসেছিলেন থাকসিন। সে বছর চমকপ্রদ জয় লাভ করেন থাকসিন। যা তাকে প্রায় অবাধ ক্ষমতা দেয়। কিন্তু এই ক্ষমতা সমানভাবে বিতর্কও বয়ে আনে। তাকে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন বিরোধীরা। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। বলা যায় অনেক বছর পর থা্িইল্যাণ্ডে আবার ক্যু অভ্যাস বা সামরিক অভ্যুত্থান ফিরে আসে। অতীতে বারবার দেখা গেছে ইই ক্যু দেতা। থাই রাজনীতিতে সামরিক বাহিনির একটি বড় প্রভাব আছে। সেটা আবার প্রমাণ হয়েছিল সেবার। এ অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক দৃশ্যপটই পরিবর্তন করে না, বরং থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ২০০৮ সালে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে যান থাকসিন। কিন্তু সিনাওয়াত্রা বংশের উত্তরসূরিরা বিভিন্নভাবে ঘুরে ফিরে থাই রাজনীতিতে এসেছেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন থাকসিনের বোন ইংলাক। রাজনৈতিক নেতা হিসাবে ইংলাক বড় ভাইয়ের ছায়া থেকে মুক্ত হতে পারেননি। তিনি থাকসিনকে প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি সাধারণ ক্ষমা বিল পাশ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তিনি সেনাবাহিনীর সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে থাকসিনকে দেশে ফেরাতে চেষ্টা করেন। তবে এ পদক্ষেপই তার কাল হয়ে দাঁড়ায়। সরকারবিরোধীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। যা একসময় সহিংস বিক্ষোভে রূপ নেয়।

২০১৪ সালে আদালতের রায়ের মাধ্যমে ইংলাকের প্রধানমন্ত্রিত্ব বাতিল করা হয়। কয়েক সপ্তাহ পরে সামরিক বাহিনী তার প্রশাসনের বাকি অংশকেও বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এরপর ২০২৩ সালে থাই ক্ষমতার লাগাম ধরতে রাজনীতিতে পা রাখেন থাকসিন সিনাওয়াত্রার কনিষ্ঠ সন্তান পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। মাত্র এক বছরের মাথায় ক্ষমতা হারালেন তিনিও। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন থাকসিন কন্যা পেতংতার্ন। কম্বোডিয়ার সাবেক নেতার সঙ্গে তার একটি ফোনকলের রেকর্ড ফাঁস হওয়ায় মাত্র এক বছরের মধ্যেই ক্ষমতা হারালেন তিনি. যে কথা শুরতেই বলেছি। গত ১৫ জুন ফাঁস হওয়া সে ফোনকলে তাকে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ বলতে শোনা যায়। ওই সময় তিনি তার নিজ দেশের সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে বলেছেন, তার সেনাদের কারণেই কম্বোডিয়ার এক সেনার প্রাণ গেছে।

বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে পেতংতার্ন গোপনে থাইল্যান্ডের স্বার্থকে বিসর্জন দিচ্ছেন। এরপর সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চান তিনি। পেতংতার্ন দাবি করেন, কম্বোডিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনের কৌশল হিসাবে তিনি এভাবে কথা বলেছিলেন। তাতে কিছু কাজে আসেনি। তাকে সাংবিধানিক আদালত সাসপেন্ড করে। তিনি প্রধানমন্ত্রর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে কালচালাল মিনিস্টারের দায়িত্ব নেন। সাময়িক বরখাস্তের পর অবশেষে শুক্রবার আদালতের রায়ে পুরোপুরি ক্ষমতাচ্যুত হলেন তিনি। পেতংতার্ন হলেন থাইল্যান্ডের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী, যাকে আদালত ক্ষমতাচ্যুত করল। আর তার বাবা থাকসিন এখন পর্দার অন্তরালেই রয়েছেন। গত মাসে রাজকীয় মানহানির অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। আদালতের এ রায়ের ফলে প্রায় দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে থাই রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী সিনাওয়াত্রা পরিবারের একটি বড় হুমকি দূর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে তাকে কারাভোগ করতে হচ্ছে না। তবে মেয়ের ক্ষমতাচ্যুতি তাকে আড়ালে ঠেলে দিয়েছে।

পেতংতার্ন কম্বোডিয়ার নেতৃত্বের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের যুক্তি তুলে ধরার পদ্ধতিকে ‘অপেশাদার’ বলে মন্তব্য করেছিলেন, যার প্রতিক্রিয়ায় হুন সেন ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তিনি এটিকে ‘অভূতপূর্ব অপমান’ আখ্যা দিয়ে ‘সত্য প্রকাশে’ বাধ্য হয়েছিলেন বলে দাবি করেন। কিন্তু তার এ পদক্ষেপ থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে এবং সীমান্ত উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। এর জের ধরে গত মাসে থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে পাঁচ দিনের যুদ্ধে অন্তত ৪০ জন নিহত হন।

যদিও নতুন নির্বাচনই বর্তমান সংকটের স্বাভাবিক সমাধান মনে হচ্ছে, ফিউ থাই তা চায় না। কারণ, দু’বছর ক্ষমতায় থেকেও তারা অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডের অপ্রতিরোধ্য নির্বাচনী শক্তি হিসেবে আধিপত্য বিস্তার করা ফিউ থাইয়ের সে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা এখন প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।

থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্যে সমালোচনার সুযোগ নেই বললে চলে। কারণ, দেশটির সেনাবাহিনী রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখে আসছে। দেশটিতে অনেক বার ক্ষমতা দখলও করেছে সেনারা। থাইল্যান্ড একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। দেশটির জনসংখ্যা সাড়ে ছয় কোটি। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৬-এর কু পর্যন্ত দেশটি একটি কার্যকর গণতন্ত্র হিসেবেই বিবেচিত হয়েছিল। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে একটি বহুদলীয় মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশটিতে গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। থাইল্যান্ডের সংবিধানে রাজাকে খুব কম ক্ষমতাই দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি জাতীয় পরিচয় ও ঐক্যের প্রতীক। থাইল্যান্ডের জাতীয় আইনসভা দু’টি কক্ষে বিভক্ত - সিনেট বা উচ্চকক্ষ এবং প্রতিনিধিসভা বা নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষের সদস্যসংখ্যা ১৫০; এদের মধ্যে ৭৬ জন জনগণের সরাসরি ভোটে প্রতি প্রদেশ থেকে ১ জন করে নির্বাচিত হয়ে আসেন। বাকী ৭৪ জন সিনেট সদস্য নির্বাচন কমিশনের তৈরি করা একটি তালিকা থেকে বিচারক ও ঊর্ধ্বতন অফিসারদের দ্বারা বাছাই হন। নিম্নকক্ষে ৪৮০ জন সদস্য এবং এদের মধ্যে ৪০০ জন থাইল্যান্ডের বিভিন্ন জেলা ও নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। বাকীদেরকে বিভিন্ন দলের তৈরি করা তালিকা থেকে আনুপাতিক হারে বাছাই করা হয়। দেখা যাচ্ছে দেশটিকে ফার্স্ট পাস্ট দি পোস্ট (এফপিটিপি) ও প্রোপোরশনাল রিপ্রিজেন্টেশন (পিআর) দুটিরই বিধান রয়েছে।

দেশটিতে সাংবিধানিক আদালত খুবই পাওয়ারফুল একটি সংস্থা। এ আদালত হল আপিল বিভাগের সর্বোচ্চ আদালত। সরকার প্রধানকে বরখাস্ত করা সাংবিধানিক আদালতের শক্তিমত্তারই প্রকাশ। অতীতে বহুবার এ আদালত সরকার প্রধানকে বরখাস্ত করেছে। এ সাংবিধানিক আদালতে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন পদচ্যুত হলে ২০২৪ সালের আগস্টে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট।

এখন কী হবে? রাজনৈতিক অস্থিরতার আভাস দিয়ে এতে বলা হয়েছে, সমস্ত অস্থিরতার মধ্যে ক্ষমতাসীন জোটের বৃহত্তম অংশীদার ভুমজাইথাই পার্টি কয়েক সপ্তাহের অন্তর্দ্বন্দ্বের পরে জোট থেকে বেরিয়ে গেছে এবং অন্যরা যারা থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা বেরিয়ে যাবে না এমন কোন গ্যারান্টি নেই। তিনি বলেন, সবকিছুর উপর নির্ভর করছে থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী সামরিক বাহিনী, যারা ১৯৩২ সালে রাজ্যের নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে প্রায় এক ডজন অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পাওয়ার ব্রোকার হিসেবে কাজ করে আসছে। তবে ব্যাংকক পোস্টের খবরে বুধবার বলা হয়েছে, সেনাবাহিনির ২য় প্রধান থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় সেনা অঞ্চলের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল বুনসিন প্যাডক্ল্যাং মঙ্গলবার দৃঢ়ভাবে সামরিক অভ্যুত্থানের জল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে চলমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি নীরব ছিলেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনি এ ব্যাপারে নিবর থাকবে।

ব্যাংকক পোস্ট অনলাইন আরো জানাচ্ছে, থাইল্যান্ডের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্তিথর্ন থানানিথিচট বলেন, ‘নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ কঠিন হবে। সময়ও লাগতে পারে। স্বার্থের বিষয়ে একমত হওয়া সব দলের জন্য সহজ নয়। তবে এ প্রক্রিয়ায় ফিউ থাই পার্টি পিছিয়ে থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজনকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যোগ্য বিবেচনা করা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে একজনই শুধু ফিউ থাই পার্টির। তিনি ৭৭ বছর বয়সী চাইকাসেম নিতিসিরি। থাইল্যান্ডের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল তিনি। তবে মন্ত্রিসভা পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই। জনগণের সঙ্গে অতটা সম্পৃক্তও নন। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাইকাসেমকে মনোনীত করেছে ফিউ থাই পার্টি। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী চান-ওচা। তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে ফিউ থাই পার্টির সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানের নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। আরেকজন অনুতিন চার্নভিরাকুল। তিনি পেতংতার্নের উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ফোনকল ফাঁসের ঘটনার পর পেতংতার্নের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট থেকে নিজের দলকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের পরবর্তী সরকার গঠনের প্রতিযোগিতার মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে ফিউ থাই মহাসচিব সোরাওং থিয়েনথং বলেছেন যে দলটি প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য চাইকাসেম নিতিসিরিকে মনোনীত করা অথবা নতুন নির্বাচন আহ্বান করার মধ্যে বিকল্পগুলি বিবেচনা করছে। মিঃ সোরাওংয়ের মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছিল যখন সংসদের বৃহত্তম বিরোধী দল পিপলস পার্টি, ফিউ থাই নাকি ভূমজাইথাই পার্টিকে পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য সমর্থন করবে কিনা তা নিয়ে দ্বিতীয় দিনের জন্য আলোচনা করছিল। তারা কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বলেছে যে তাদের নির্বাহী সংস্থা আবার বৈঠক করবে যাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। একই সাথে, তারা ফিউ থাইকে হাউস ভেঙে দেওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ জানায়। সরকারের আইন উপদেষ্টারা যদিও বলছেন যে এটি তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসনের ক্ষমতার বাইরে, অন্যান্য আইন বিশেষজ্ঞরা একমত নন। যাই হোক, পিপলস পার্টি যদি ভূমজাইথাই এবং তার নেতা অনুতিন চার্নভিরাকুলকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে ফিউ থাইয়ের জন্য ভেঙে দেওয়া একটি বিকল্প রয়ে গেছে। সোরাংওং বলেন, যদি পিপলস পার্টি আনুতিনকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেব।

পিপলস পার্টি জানিয়েছে যে তারা নতুন সরকার গঠনকে সমর্থন করবে শুধুমাত্র এই শর্তে যে তারা এ বছরের শেষ নাগাদ সংসদ ভেঙে দেবে এবং একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের উপর গণভোট করবে। দেখা যাচ্ছে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট সহসা মিমাংসিত হচ্ছে না। বিষয়গুলো আগামী কয়েকদিনে হয়তো কিছুটা পরিস্কার হবে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।