মিরাজ হাসান

প্রতিবছর বিভিন্ন পাবলিক, জাতীয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তাদের ডিপার্টমেন্ট ভিন্ন। ভিন্ন ডিপার্টমেন্ট হওয়ায় জব সেক্টর ভিন্ন। এসব ভিন্নতার কারণে তাদের স্কিল, অভিজ্ঞতা ও লক্ষ্য ভিন্ন হওয়া উচিত। গণিত নিয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রটি গণিতবিদ হবে। ফিজিক্স নিয়ে পড়ে নতুন নতুন আবিস্কার করবে। কেউ যদি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ালেখা শেষ করে সে যাবে তার নিজস্ব সাব্জেক্ট-এর জব সেক্টরে। কিন্তু সেটা হতে খুব একটা দেখা যায় না। সবাই চায় নিশ্চয়তা, যেটা মাত্র বিসিএস হওয়ার মাধ্যমে সম্ভব! যেখানে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে পড়ালেখার আগ্রহ নিয়ে সবাই ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে দিন শেষে সবার লক্ষ্য -স্বপ্ন এক হয়ে যায়। নিজেদের আগ্রহ, ইচ্ছেকে একপ্রকার বিক্রি করে দিচ্ছে শুধু একটা নাম পাওয়ার জন্য,-“বিসিএস ক্যাডার”।

এটার পেছনের সব থেকে বড় কারণ সমাজে “বিসিএস” শব্দটার অতিরিক্ত সম্মান-মর্যাদা। সমাজে ক্রিয়েটিভিটি শব্দটাকে এক প্রকার অস্তিত্বহীন করে দিচ্ছে “চাকরি”, নামক শব্দ। আর চাকরির বাজারে বিসিএস যেনো এক সোনার হরিণ। সেই হরিণের দেখা পাওয়ার জন্য নিজের অতীতের স্বপ্নকে পায়ে পিষে দৌড়াচ্ছে হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী।

এতো এতো গবেষণার বিষয়, এতো এতো কার্যক্ষেত্র রেখে যদি তারা কেবলমাত্র একটা রাস্তা বেছে নেয়, দেশের প্রকৃত উন্নয়ন কোনোদিনও সম্ভব না। সবাইকে নিজের ডিপার্টমেন্ট-এর প্রতি প্যাশনেট থাকতে হবে। পড়াটা আগ্রহের সাথে পড়তে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে বড়। চাকরির গণ্ডি পেরিয়ে আবিষ্কারের পথে পাড়ি জমাতে হবে। তবেই হবে মেধার প্রকৃত ব্যবহার। তবেই হবে দেশের উন্নয়ন

লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।