আসিফ আরসালান

সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আগামী পরশু অর্থাৎ ৫ অগাস্ট জুলাই বিপ্লবের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে বিগত ১ বছরে সরকারের সাফল্য ছাড়াও দু তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে যে বিষয়টির প্রতি অনেকগুলো রাজনৈতিক দল ব্যাকুল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছেন তার মধ্যে থাকবে নির্বাচনের সময়সীমা। অবশ্য গত শুক্রবারের পত্র-পত্রিকায় দেখা গেলো, নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের একটি উক্তি। তিনি বলেছেন যে, বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ঐকমত্য যেমন আছে তেমনি অনৈক্যও আছে। তার মতে আগামী ৪/৫ দিন অত্যন্ত ক্রুশিয়াল। সেই ৪/৫ দিন ধরলে টার্মিনাল তারিখটি হলো ৫ অগাস্ট অর্থাৎ পরশু দিন। তিনি আরো বলেন যে, এ ৪/৫ দিন ঘটনাবহুল হলেও নির্বাচনের সময়সীমা কোনো অবস্থাতেই ফেব্রুয়ারি অতিক্রম করবে না। ফেব্রুয়ারির শেষ দিনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ধরে নিলাম প্রেস সচিব যা বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণেও সেই সব কথাই থাকবে। কিন্তু তার পরেও কথা থেকে যায়। সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে দেখা যায় যে, ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর যে আলোচনা হয়েছে সে আলোচনায় অন্তত ৫টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। ৫টি বিষয় হলো, কিভাবে প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ বা নির্বাচন হবে। উচ্চকক্ষে পিআর বা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন হবে বলে ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি) সিদ্ধান্ত দিলেও বিএনপি সেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না-এনসিসি এ সিদ্ধান্ত দিলেও বিএনপি তাতে সহমত পোষণ করেনি। আপিল বিভাগের জেষ্ঠতম বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হবেন সে প্রস্তাব ঐকমত্য হয়নি। জাতীয় সংসদে নারীদের আসন সংখ্যা ১০০ হবে, এ ব্যাপারে একমত হলেও কোন পদ্ধতিতে তারা নির্বাচিত হবেন সেটি নিয়ে মতদ্বৈধতা রয়েছে।

এনসিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. আলী রিয়াজ বলেছেন যে, গত ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবারই ছিলো তাদের ম্যারাথন সেশনের শেষ দিন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে এনসিসি গঠিত হয়। আর তার শেষ রাউন্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ৩১ জুলাই। অর্থাৎ ৬ মাস ধরে বৈঠক চলে। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। আর হবেই বা কোত্থেকে? এতগুলো রাজনৈতিক দল রয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দল বা জোট গুনতে গেলে অন্তত ৪/৫ টি হবে। প্রত্যেকেরই নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, আদর্শ এবং কৌশল রয়েছে। সেসব প্রশ্নে যদি কেউ ছাড় দেয় তাহলে তার আলাদা রাজনৈতিক অস্তিত্ব রাখার কোনো মানে হয় না।

কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বর কিন্তু মৌলিক বিষয়ে অনৈক্য রয়েই গেলো। এনসিসির ম্যারাথন সেশনের বাইরে এসে অনেককে বলতে শোনা গেলো যে, একাধিক রাজনৈতিক দল জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটই ধারন করেন না। এনসিসির বৈঠকের ভেতরে এবং বাইরে মাঠে ময়দানে নানা রকম কথা এসেছে। ঘটেছে একাধিক সহিংস ঘটনা। অন্যদিকে দেশের বাইরে এবং ভেতরে চলছে মারাত্মক ষড়যন্ত্র। এসব ষড়যন্ত্র এত মারাত্মক যে সেগুলো দেশের স্বাধীনতাকে পর্যন্ত বিপন্ন করতে পারে। যদিও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রান্ত যদি জনগণ বুঝতে পারেন তাহলে লাখে লাখে কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে সেটিকে নস্যাৎ করে দেবেন। তারপরেও বিষধর সাপ গর্ত থেকে মাথা বের করছে। এমন বিপজ্জনক পটভূমিতে কতগুলো বিষয়ে মতনৈক্য হয়নি, যে বিষয়গুলো বেশ সিরিয়াস। এর মধ্যে দু’টি বিষয় দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলের আশু মনযোগ দাবি করে।

একটি হলো জুলাই সনদ বা জুলাই চার্টার। আর একটি হলো জুলাই ঘোষণাপত্র বা জুলাই প্রোক্লামেশন। জুলাই সনদের একটি খসড়া এনসিসি রাজনৈতিক দলসমূহের কাছে দিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলো যে কোনো দলই এ সনদ সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে পারেনি, আবার সম্পূর্ণ বর্জনও করতে পারেনি। যেমন বিএনপি। তারা জুলাই সনদকে নীতিগতভাবে গ্রহণ করতে সম্মত হলেও সেটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে চায়নি, সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করতে রাজি নয়। আবার এনসিপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন সহ কয়েকটি দল মনে করে যে কমিশন প্রস্তাবিত সনদ অসম্পূর্ণ। মৌলিক কতগুলো বিষয় প্রস্তাবিত সনদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হয়নি। জামায়াতে ইসলামী আরো মৌলিক প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলেছে যে, সাংবিধানিক স্বীকৃতি না দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার কোনো বাস্তব মূল্য নেই। যে কোনো সময় যে কোনো সরকার একটি নির্বাহী আদেশে সে সনদ বাতিল করতে পারে। তাই এটিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যদি সেটি না করা হয় তাহলে তারা আইন আদালতে আশ্রয় নেবেন।

এনসিপির প্রশ্নগুলি আরো মৌলিক। তারা মনে করে যে বর্তমান সংবিধান মুজিববাদী সংবিধান। এ সংবিধানে সংশোধনীর অবকাশ খুব কম। সে জন্য তারা নতুন সংবিধান রচনার পক্ষপাতি। নতুন সংবিধান রচনা করতে গেলে নির্বাচন ঠিকই করতে হবে , কিন্তু সেটি পার্লামেন্ট নির্বাচন নয়, গণপরিষদ নির্বাচন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ড. আলী রিয়াজ সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অথবা ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়ার আগে ডেইলি স্টারে একাধিক নিবন্ধ লিখেছেন এবং একাধিক ফোরামে বক্তৃতা করেছেন। সেসব জায়গায় তিনি অত্যন্ত জোরালো ভাবে সংবিধান জবৎিরঃব করা বা পুনর্লিখনের দাবি তুলেছিলেন। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় এখনো তিনি মনে করেন যে, বর্তমান সংবিধানে ৫৪টি অনুচ্ছেদকে সংশোধনের ঊর্ধ্বে রাখা হয়েছে এবং এসব জায়গায় হাত দেয়াকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংবিধানের কোন কোন জায়গায় আপনি সংশোধনী আনবেন? আলী রিয়াজ ঠিকই বলেছেন। তবে সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং এনসিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তার পক্ষে সংবিধান পুনর্লিখনের পক্ষে রিজিড অবস্থা গ্রহণ করা আর সম্ভব নয়। কিন্তু এনসিপি তো অবস্থান পরিবর্তন করছে না। এখানে অনেকেই একটি বিষয়কে তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। জুলাই সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র কিন্তু এক নয়। জুলাই সনদ নিয়ে যদি কোনো সমাধানে আসা যায়ও তাহলেও জুলাই ঘোষণা নিয়ে বিরোধ রয়েই গেলো। সম্ভবত সে কারণেই এনসিপি আজ ৩রা অগাস্ট থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান গ্রহন করছে। ইতোপূর্বে তারা ঘোষণা করেছে যে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়েই তারা শহীদ মিনার ছাড়বে, তার আগে ছাড়বে না। এটি ড. ইউনূসের ওপর এক ধরনের চাপ। এ চাপের উদ্দেশ্য হলো জুলাই ডিক্লারেশন বা জুলাই ঘোষণাপত্র সম্পর্কেও তিনি যেনো একটি সমাধান দেন। এ ধরনের জটিল অবস্থার মধ্যে নির্বাচনের সময়সীমা দিলে সেই নির্বাচন আদৌ হবে কিনা সেব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়। আর যদি নির্বাচনী কার্যক্রম চলতে থাকে তাহলে সংঘাতের আশঙ্কা থেকে যায়। সম্ভবত সে জন্যই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন যে, আগামী ৪/৫টি দিন খুব ক্রুশিয়াল।

নির্বাচন বাঞ্চাল তথা দেশে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ভারত এবং আওয়ামী লীগ মরিয়া হয়ে উঠেছে। এসম্পর্কে আমরা দৈনিক সংগ্রামের তরফ থেকে একাধিকবার সতর্কবানী উচ্চারণ করেছি। এখন আর সে ষড়যন্ত্র জ¦ল্পনা কল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ১লা অগাস্ট একাধিক পত্র পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যে, গোপন বৈঠক নিয়ে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এক মেজরকে সেনা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আইএসপিআরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। একই বিষয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। গত ৮ জুলাই বসুন্ধরা সংলগ্ন কে.বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তারা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোজকজন এনে ঢাকায় সমবেত হবেন। তারা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তারা বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে এসব ষড়যন্ত্রই করছিলেন।

মামলা তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ‘তারা প্রিয় স্বদেশ’, ‘এফ ৭১ গেরিলা’, ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম’, ‘প্রজন্ম ৭১’, ‘শেখ হাসিনা’সহ বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের সদস্য। একটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে জানতে পেরেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ওই গোপন সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১২ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার একটি বাসা থেকে যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে ভাটারা থানা-পুলিশ। ওই দিন একই এলাকার একটি বাসা থেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী শামীমা নাসরিনকে (শম্পা) গ্রেফতার করা হয়। তাঁর স্বামী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। দুজনকে গ্রেফতারের পর ১৩ জুলাই ভাটারা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, সোহেল রানা ও শম্পাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য যাচাই করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বৈঠকে অংশ নেয়া মেজর সাদিকুল হক ওরফে মেজর সাদিককে হেফাজতে নেয়া হয়। মেজর সাদিক নামের একজন সেনা অফিসার আওয়ামী লীগের লোকজনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে-এমন সংবাদের বিষয়ে গত ৩১ জুলাই সেনা সদরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকেরা। জবাবে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেজর সাদিকের বিষয়ে আমরা অবগত। তাঁর বিষয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বলতে পারবো।’ ঐ ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, এ রকম ঘটনা জানার পরে সেনাবাহিনীর হেফাজতেই তিনি আছেন। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সেনাবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদে বরগুনার যুবলীগ নেতা সোহেল রানা এবং গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীমা নাসরিন বলেছেন, মেজর সাদিকের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংগঠিত করে বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ভাটারা থানা এলাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই-ব্লকের ৭ নম্বর রোডের কে.বি কনভেনশন সেন্টারের দ্বিতীয় তলা ভাড়া নেয়া হয়। মেজর সাদিক সেদিন সরকার উৎখাতে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন।

ঐ কনভেনশন সেন্টারের ব্যবস্থাপক মুজাহিদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ডিবি সূত্র জানিয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনি পরিকল্পিতভাবে সারা দিন কনভেনশন হলের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ রেখেছিলেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, সেখানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীসহ সমবেতদের নাশকতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আরও অন্তত চারটি প্রশিক্ষণ হয়েছিল। তবে সবগুলো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিডিও ফুটেজ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

ঐ একই প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজিম উদ দৌলা বলেন যে, গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতৃবৃন্দের জীবননাশের হুমকি ছিলো। সেজন্য তাদেরকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যেই সেনাবাহিনীকে বলপ্রয়োগ করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে জীবন বাঁচানোই ছিলো মূখ্য উদ্দেশ্য, বলপ্রয়োগ নয়।

এখন একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ স্লোগান দিচ্ছে, “স্বাধীন করো স্বাধীন করো / গোপালগঞ্জ গোপালগঞ্জ”। এই ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয়েছে। গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ শহরে এবং উপকন্ঠে মাঝে মাঝে ঝটিকা মিছিল করছে এবং এ স্লোগান দিচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। এ জটিল পরিস্থিতিতে ভারতীয় আধিপত্যবাদ মোকাবেলা এবং আওয়ামী ফ্যাসিজমের প্রত্যাবর্তনের হুমকিকে মাথায় রেখে অন্তর্বতী সরকার এবং বড় বড় পলিটিক্যাল পার্টিকে তাদের নীতি নির্ধারণ করতে হবে এবং পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি ফর্মুলেট করতে হবে।