মুসফিকা আন্জুম নাবা
ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা:)-এর শাহাদতের পর উমাইয়া খিলাফতের গোড়াপত্তন হয়েছিল। স্পেন তথা হিসপানিয়ার আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা তখন অত্যন্ত শোচনীয়। পুরো ইউরোপ তখন আচ্ছন্ন ছিল অন্যায় অত্যাচার ও চরম দারিদ্র্যতায়। তখন সিডটা রাজা কাউন্ট জুলিয়ান মূসা বিন নুসাইরকে স্পেন আক্রমণের আহ্বান জানান। মূসা বিন নুসাইর ছিলেন সুদক্ষ সেনাপতি ও তাবেয়ী। তৎকালীন উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ বিন মালিকের অনুমতি নিয়ে মূসা সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদকে পাঠালেন স্পেন অভিযানের জন্য। তারিকের নেতৃত্বে ইউরোপের প্রতাপশালী ও অত্যাচারী শাসক রডারিককে পরাজিত করে স্পেন বিজয় করে মুসলিমরা। সে ঐতিহাসিক বিজয়ে প্রজা উৎপীড়ক রডারিকের ১ লাখ ২০ হাজার সৈন্যের বিপরীতে সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদের ১২ হাজার সৈন্য বিজয় অর্জন করে।
৭১১ খ্রিস্টাব্দে ‘ওয়াদি লাস্কের’ নামক স্থানে ভিসিগথ বাহিনীর সাথে যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী বিজয় লাভ করে। পরবর্তীতে তারিক বিন জিয়াদ আরো অগ্রসর হন এবং একের পর এক শহর বিজয় করতে থাকেন। সে ধারাবাহিকতায় কর্ডোভা সহ সমস্ত স্পেন মুসলমানদের করায়ত্ত হয়। মাত্র ৭শ’ সৈন্য নিয়ে কর্ডোভা বিজয় করা সম্ভব হয়। তাদের হৃদয়ে ছিল ঈমানী শক্তি। তা নাহলে এতো কম সংখ্যক সৈন্য-সামন্ত দিয়ে স্পেন জয় সম্ভব ছিল না। মুসলমানরা কখনোই সুবিশাল ভূখণ্ড কিংবা সম্পদ অন্বেষণের উদ্দেশ্যে বিজয় অভিযান পরিচালনা করেননি; বরং সকল মানুষকে এক আল্লাহর বিশ্বাসের প্রতি আহ্বান করা ও তাদের দ্বীন শিক্ষা দেয়াই ছিল অভিযানগুলোর প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, ‘তার কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হতে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত’। (হা-মীম সিজদাহ ৩৩)
মুসলিমদের ধর্মীয় উদারতা, সাম্য ও সহনশীলতায় মুগ্ধ হয়ে স্পেনবাসী দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। স্পেন বিজয়ের পর নতুন নাম হয় ‘আন্দালুসিয়া’। তখন স্পেনের রাজধানী ছিল গ্রানাডা এবং প্রধান শহর ছিল কর্ডোভা। পরে রাজধানী কর্ডোভায় স্থানান্তর করা হয়। ইউরোপ যখন মূর্খতা, কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসে নিমজ্জিত। এমনকি কিছু অঞ্চলের অধিবাসী আকার-ইঙ্গিতে পারস্পরিক ভাব বিনিময় করতো। লিখনরীতি তো দূরে থাক তাদের বাচনরীতিও ছিল না। তখন মুসলমানেরা আন্দালুসিয়ায় শিক্ষাকেন্দ্র, মসজিদ ও লাইব্রেরি স্থাপন করেছিল। মুসলমানদের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হলো জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা ও বিস্তারে। স্পেনবাসী জ্ঞান-বিজ্ঞান সভ্যতা ও সংস্কৃতির এক নতুন দিগন্তে পদার্পণ করেছিল মুসলিম শাসনামলে। গ্রানাডা গড়ে ওঠে মুসলিম সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। সে সময়ে কর্ডোভা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমগ্র ইউরোপ থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা আসতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হতে।
তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লোকেরা নিয়মিত গোসল করতেও অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। অথচ মুসলমানেরা রাস্তায় রাস্তায় গড়ে তুলেছিলেন হাম্মামখানা। সেখানে অজু-গোসলের ব্যবস্থার পাশাপাশি সুগন্ধি, প্রসাধন ও সাবানের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। এছাড়া পাবলিক গোসলখানা, সুরম্য প্রাসাদ এবং বিপুলসংখ্যক রাস্তাঘাট নির্মিত হয়। স্পেনের প্রতিটি জনপদকে গড়ে তোলা হয়েছিল দৃষ্টিনন্দন করে। জনপদের পাশাপাশি মসজিদের সুনিপূণ কারুকাজ যেমন : আলহামরা প্রাসাদ ও গ্রান্ড মসজিদ আজো বিশ্ববাসীর কাছে বিস্ময়কর ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলমানদের পদচারণা ছিল বিস্মিত হওয়ার মতো। এ সময় স্পেনীয় মুসলমানেরা সমগ্র ইউরোপের কাছে সভ্যতা ও সংস্কৃতির মডেল হিসেবে পরিচিত হয়। স্পেনের মুসলিম সভ্যতাকে ইউরোপীয়রা ‘মরু সভ্যতা’ ও কর্ডোভাকে আদর করে ‘রত্নখন্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
মুসলমানেরা যখন অপ্রতিরোধ্য রোম-পারস্যসহ সব পরাশক্তি যখন মুসলিম শাসনের অধীনে আসে, তখনই ইউরোপের খ্রিষ্টান সম্প্্রদায় নতুনভাবে জেগে উঠে ক্রুসেড চেতনায়। মুসলিমদের স্পেন বিজয় ও সভ্যতার উন্নতি খ্রিষ্টীয় শক্তি সুনজরে নেয়নি। স্পেনের ওপর তাদের নানামুখী আগ্রাসন ও সন্ত্রাস চলতে থাকে। ফলে স্পেনের নিরাপত্তা হয়ে পড়ে হুমকির সম্মুখীন। শুরু থেকেই মুসলমানদের অগ্রযাত্রা রোধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। তারা সমস্ত খ্রিষ্টান রাজন্য ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের কাছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক দেয়। এর মূলমন্ত্রই ছিল-মুসলমানদের অগ্রযাত্রা ঠেকানো। এর নাম দেয়া হয় ‘ক্রুসেড’ বা ধর্মযুদ্ধ। সমগ্র ইউরোপে ক্রুসেডের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয় খ্রিষ্টীয় শক্তি। নিজেদের বিভেদ ভুলে তারা মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। চলতে থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ক্রুসেডারদের তাণ্ডব। সে সময় খ্রিষ্টান গোয়েন্দারা ইসলাম ধর্ম শিখে আলেম লেবাসে বিভিন্ন মসজিদে ইমামতিও করেছে। তাদের কাজ ছিলো স্পেনের সমাজজীবনকে অস্থিতিশীল ও শতচ্ছিন্ন করে তোলা। যুগে যুগে মুসলিম শাসকদের অদূরদর্শী নেতৃত্ব, ভোগ বিলাসীতা, জনগণের অসচেতনতা ও অনৈক্যের ফলে বিশ্বে নানা দেশে মুসলিমদেরকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য। এ মাশুলেরই একটি হচ্ছে ঐতিহাসিক গ্রানাডা ট্র্যাজেডি, যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক বিভীষিকা ও দুঃসহ স্মৃতি।
তখন স্পেনের সুলতান হাসান। খ্রিষ্টানরা সুলতান হাসানের বিরুদ্ধে তার পুত্র আবু আব্দুল্লাহকে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে বিদ্রোহী করে তোলে। আব্দুল্লাহ ক্ষমতা গ্রহণের পরই শুরু হয় স্পেনের মুসলমানদের পতন। তার দুর্বল নেতৃত্ব ও নৈতিক অবস্থান এবং অভ্যন্তরীণ অনৈক্যের সুযোগ নেয় সম্মিলিত খ্রিষ্টীয়শক্তি। সে ষড়যন্ত্রকে মজবুত ভিত্তি দিতে অ্যারাগোনের শাসক ফার্দিনান্দ ও কাস্তালিয়ার রানী ইসাবেলা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। ফার্দিনান্দ নানা রকম কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্র শুরু করে। অন্যদিকে গৃহযুদ্ধের ফলে মুসলমানদের শক্তি কমতে থাকলে স্পেনের বিভিন্ন শহর পতন হতে থাকে। ১২৯১ সালের নভেম্বরে শুরু হয় গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। ফার্দিনান্দের নির্দেশে মুসলমানদের উপর নৃশংস ও বর্বর হত্যাযজ্ঞ, লুণ্ঠন ও ধর্ষণ এবং শস্যক্ষেত্র জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আগুনে পোড়ানো হয় শহরের খাদ্য সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র ভৈগা উপত্যকা। অচিরেই গোটা শহরে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সমৃদ্ধ গ্রামগুলো ধ্বংস করা হয়। গবাদিপশু তুলে নিয়ে যায় খ্রিষ্টান সৈন্যরা। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেক মুসলিম বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ করেন। বিদ্রোহী এসব লোককে হত্যা করা হয়।
অবশেষে খ্রিষ্টান বাহিনী গ্রানাডা অবরোধ করে। ফার্দিনান্দ আবু আব্দুল্লাহকে আশ্বস্ত করেন তারা যদি বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। দুর্বল শাসক ও তার সভাসদরা ফার্দিনান্দের সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে ১৪৯২ সালে ‘ক্যাপিচুলেশন অব গ্রানাডা’ চুক্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দালুসিয়ায় মুসলিম শাসনের অবসান ঘটে। গ্রানাডা দখলের পর ফার্ডিনান্দ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে মুসলিমদের জোরপূর্বক খ্রীস্ট-ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে শুরু করে এবং ধর্মান্তরিত না হলে মৃত্যুদণ্ড, বহিষ্কার, কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ইত্যাদি আরোপ করা হয়। তাদের মসজিদবদ্ধ করে পুড়িয়ে মারা হয়। তাদের ভাষা, পোশাক, রীতিনীতি নিষিদ্ধ হয়, গোসল নিষিদ্ধ করা হয়; শুক্রবার জুমুআর দিন তাদের গৃহসমূহ খুলে রাখতে বাধ্য করা হয়। ফজরের সময় যারা নামাজ পড়তে উঠত বা যে সকল ঘরে সে সময় বাতি দেখা যেতো, নামাজ পড়ার অভিযোগে তাদের করুণ মৃত্যু নিশ্চিত করা হতো। এভাবেই একটি সাজানো বাগান নিঃশেষ হয়ে যায়। চিরকালের জন্য স্পেনে আযান নিষিদ্ধ করা হয়। যা আজও অব্যাহত। এভাবেই ৮০০ বছরের সোনালী অধ্যায়ের পতন হয়। ইতিহাসের নিকৃষ্টতম প্রতারণা, নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও নারকীয় হত্যা চালানো হয় গ্রানাডায়। নির্মম গণহত্যার পরও যেসব মুসলমান স্পেনে থেকে গিয়েছিলো, ফার্দিনান্দ পুত্র তৃতীয় ফিলিপ তাদের সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় সমুদ্রপথে নির্বাসিত করে। বিপুলসংখ্যক মানুষ সমুদ্রের গহিন অতলে হারিয়ে যান চিরদিনের জন্য। তাদের মধ্যে খুব অল্প লোকই জীবিত ছিলেন।
এভাবেই আন্দালুসিয়া গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। যেখানে মুসলিম সেনাপতি তারেক ও মূসার বীরত্বগাথায় মুসলমানেরা স্পেনে ইসলামের বিজয় নিশান ওড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেখানে মুসলিম আন্দালুসিয়া আধুনিক স্পেনের জন্ম দিয়ে ইতিহাসের দুঃখ হয়ে বেঁচে আছে। সেসব সুবিখ্যাত স্থাপনা কেবল ঐতিহাসিক নির্দশন ও ধ্বংসাবশেষ রুপে টিকে আছে ও আধুনিক স্পেনের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মুসলিম-অমুসলিমদের নয়ন জুড়াচ্ছে। ফরাসি নৃবিজ্ঞানী রবার্ট ব্রিফল্ট তার রচিত দঞযব Making of Humanity’ গ্রন্থে মুসলমানদের এ প্রবেশকে ‘অন্ধকার কক্ষের দরজা দিয়ে সূর্যের আলোর প্রবেশ’ বলে অভিহিত করেছেন। তার বক্তব্য হলো- ‘স্পেনে মুসলমানদের আগমনে শুধু স্পেন নয়, বরং গোটা ইউরোপ মুক্তির পথ পেয়েছিল এজ অব ডার্কনেস তথা হাজার বছরের অন্ধকার থেকে।
তবে আজও মুসলমান ও ইসলামের বিরুদ্ধে ইহুদি-খ্রিষ্টবাদী ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। মুসলিম আন্দালুসের পতনের পাঁচশ বছর পূর্তিতে মাদ্রিদে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে ও সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় একচ্ছত্র খ্রিষ্টান বিশ্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নানা অজুহাতে মুসলিম দেশে দেশে ঘটেই চলছে একের পর একই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চলছে। ফিলিস্তিন, চীন, ভারতের আসাম, মিয়ানমার, কাশ্মিরসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে। স্পেনের ইতিহাসের সাথে বর্তমান ফিলিস্তিন ইস্যুর অনেকটাই সামঞ্জস্য রয়েছে। ইতিহাসের আদিলগ্ন থেকে ফিলিস্তিনের উপর নজর ছিল ইহুদিদের। তাই ইহুদি গোষ্ঠী বিভিন্ন সময় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার নীলনকশা করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে জুলুম, নির্যাতন, হত্যা ইত্যাদি যেন প্রতিদিনের রুটিন হয়ে দাড়িয়েছে। পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বনী ইসরাইলের ১নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র সে সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি, তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’। বর্ণিত আয়াত থেকে বুঝা যায়, ফিলিস্তিন মুসলিমদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। অসংখ্য নবী রাসুলের সে বরকতময় ভূমি থেকে মুসলিমরাই আজ বিতাড়িত হচ্ছে। মিরাজের স্মৃতিবিজড়িত আল-আক্বসা আজ ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণাধীন।
ইহুদিরা ফিলিস্তিনিদের হত্যা, বিতাড়ন, নির্মম অত্যাচার করছে, ঠিক যেমন স্পেনের মুসলিমদের উপর হয়েছিল। কারণ একটাই ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করে ইহুদি রাষ্টের পরিকল্পনা যা আন্দালুসেরই পুনরাবৃত্তি। কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ইহুদি তাণ্ডবে নারী-পুরুষ ও শিশুরা প্রাণ হারিয়েছে। ইসরাইল বাহিনী ফিলিস্তিনিদের নির্মম নৃশংস মর্মান্তিকভাবে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। বোমা হামলায় ধ্বংস গাজা উপত্যকা। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে হাজার হাজার পরিবার। শহরগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনরা আজ নিজেদের ভূমিতেই অনিরাপদ জীবন যাপন করছে। ফিলিস্তিনের প্রতি হওয়া বর্বরতা আমাদের হৃদয় নাড়িয়ে দেয়। এ মজলুম মানুষগুলোর পাশে সকলকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে যার যার অবস্থান থেকে তাদের মুক্তির জন্য কাজ করে যেতে পারি। আর সে সাথে ইতিহাসের কালো অধ্যায় থেকে শিক্ষা ও উপদেশ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘তুমি (তাদেরকে) এসব শোনাতে থাক যাতে তারা চিন্তা করে।’ (আরাফ ১৭৬)
লেখিকা : শিক্ষার্থী, জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজ, জয়পুরহাট।