৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে পলাশী ট্রাজেডি ও আমাদের স্বাধীনতার অসমসাহসী সিপাহসালার নবাব সিরাজউদ্দোলাকে নিয়ে ২৩ জুন তেমন কোন আয়োজন দেখা গেল না। অন্তত যেভাবে হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। আজ সে ব্যাপারেই কিছু লিখছি। আগামী ৩ জুলাই বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাহাদাত দিবস। সিরাজউদ্দৌলা আমাদের এক মহাউজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তিনি ছিলেন অগ্রসেনানী। কী স্বল্পকালীন দেশ শাসনে, কী হানাদার ইংরেজদের বিরুদ্ধে বীরত্বসূচক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে তিনি অমর হয়ে আছেন বাংলার জনগণের মাঝে। চিরসংগ্রামী এ বীর আমাদের তরুণ সমাজের অনুপ্রেরণার উৎস। সব লড়াইয়ে, যুদ্ধে তিনি হয়তো বিজয়ী হতে পারেননি, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্দমনীয় লড়াই-সংগ্রামে আর কুচক্রী ইংরেজ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে সাহসীকতাপূর্ণ ও বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ সংগ্রাম ও যুদ্ধে তিনি ছিলেন অকুতোভয়। পলাশী যুদ্ধের পর শত শত বছর অতিক্রান্ত হলেও তিনি এখনো রিচরস্মরণীয় সকলের কাছে। আমাদের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখার প্রশ্নে সিরাজ এখনো প্রাসঙ্গিক।

সিরাজ ইংরেজ বিতাড়নে যে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন পলাশীর সে অপয়া প্রান্তরে তার সেনাপতি কুচক্রী ষড়যন্ত্রী মীর জাফর আলী খান ও ইংরেজ শক্তির সহায়ক বেনিয়া গোষ্ঠী যদি বেঈমানী না করতো, হয়তো বাংলা তথা ভারতবর্ষের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ-শাসনের সূচনা হয়। সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খান-এর কাছ থেকে ২২ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। প্রধান সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে। সিরাজউদ্দৌলা কেন পরাজিত হয়েছিলেন এবং এর পরের প্রায় ২০০ বছরের বাংলার হাল কী হয়েছিল এ নিয়ে নানাভাবে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আখেরে এ কথা স্বীকার করতেই হচ্ছে বেনিয়া গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম ছিল সাচ্চা সংগ্রাম। তার জীবন দান বৃথা যায়নি, সময় লাগলেও ইতিহাস তাকে পুনরাবিষ্কার করেছে।

বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সর্বশেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজউদ্দৌলা। আপন লোকদের ষড়যন্ত্রে তার পতন হয় ২৩ জুন। এর মাঝে পার হয়ে গেছে ২৬৯ বছর। ইতিহাস বলছে, ১৭১৭ সালে মুর্শিদ-কুলি খানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় বাংলায় নবাবী আমলের। তার উপর মুঘল সাম্রাজ্যের নামমাত্র আধিপত্য ছিল। সকল ব্যবহারিক উদ্দেশ্যেই তিনি বাংলার নবাব ছিলেন। সে অর্থে তিনি প্রথম স্বাধীন নবাব এবং সে ধারাবাহিকতায় শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। ১৭১৭ সালের পর থেকে দিল্লীর কোন সম্রাট কর্তৃক বাংলায় কোন সুবাদার নিযুক্ত হয়নি। তখন মোগল বাদশাহরা কার্যত ছিলেন নামমাত্র দিল্লীর বাদশাহ। মুর্শিদ-কুলি খান থেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পর্যন্ত প্রায় সাতচল্লিশ বছর বাংলার সবাই ছিলেন স্বাধীন নবাব।

সিরাজের আসল নাম মীর্জা মুহাম্মদ। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল নানা নবাব আলীবর্দীর মৃত্যুর পর তিনি হন নবাব। তেইশ বছরের টগবগে যুবক যখন বাংলা বিহার উড়িষ্যা সুবা’র নবাবের তখত-এ বসেন তখন উপাধিসহ তাঁর নাম হয় নবাব মনসুর- উল-মূলক সিরাজদ্দৌলা শাহকুলী খান মীর্জা মুহাম্মদ হায়বত জঙ্গ বাহাদুর। সেদিনের সে ছোট্ট মীর্জা মুহাম্মদ ইতিহাসে নবাব সিরাজউদদৌলা নামেই সমধিক পরিচিতি লাভ করেন। ১৭৫৬ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশী ট্রাজেডি পর্যন্ত, তার শাসনামল সর্বসাকুল্যে মাত্র চৌদ্দ মাসের জন্য। ঘরে বাইরে শত্রুতার কারণে কোন সময়ের জন্যও অনুকূল ছিল না নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাসনামল। প্রিয় দৌহিত্র সিরাজ নবাবী পেয়েছিলেন দূরদর্শী নবাব আলীবর্দী খানের উত্তরাধিকারী হিসেবে। তরুণ সিরাজ সর্বক্ষণের জন্য আলীবর্দীর সহযোগী ছিলেন বর্গী দমনের কঠিন সময়গুলোতে, এদেশের সাধারণ মানুষের প্রিয়পাত্র হয়েছিলেন এ অসীম সাহসিকতার জন্য। পরবর্তীতে নবাব হিসেবে আলীবর্দীর উত্তরাধিকারী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন তিনি।

নবাব হওয়ার পর ঘরেবাইরে সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধাচরণের শেষ ছিল না, সে কথা আগেই বলেছি। যে কোন মূল্যে এদেশ থেকে বহিঃশত্রু ইংরেজদের উৎখাত করবার ব্রত গ্রহণ করেছিলেন সিরাজ নবাবী লাভের প্রথম দিন থেকেই। তার আপন লোকেরা, বিরুদ্ধবাদীরা অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরানোর উদ্দেশ্যে তরুণ নবাব সিরাজের বিরুদ্ধে রটিয়েছে কুৎসা। অথচ সত্যিকারের জাতীয় স্বার্থের প্রতিনিধি ছিলেন সিরাজ। বাংলার স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক বলতে তাঁকেই বোঝায়। তিনি তাই বাংলায় আজও প্রাসঙ্গিক ও প্রাতঃস্মরণীয়।

নবাব সিরাজউদদৌলাই দেশপ্রেমের একজন সত্যিকারের সার্থক প্রতিকৃতি এ কথা এখন সর্বজনবিদিত। এ দেশের মাটির সঙ্গে বেঈমানি করেননি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। তাই বিদেশি বেনিয়াদের গ্রাস থেকে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে কার্পণ্য করেননি। ইচ্ছা করলে ব্রিটিশ বেনিয়াদের বাণিজ্যে তিনি কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে, মুখ বুঁজে ঔদ্ধত্য সহ্য করে নবাবী আগলে থেকে যেতে পারতেন আমৃত্যু। কিন্তু তা তিনি করেন নি।

ফরমায়েসী ঐতিহাসিকগণ ইংরেজদের আনুকূল্য লাভের আশায় নবাব সিরাজদ্দৌলার ব্যক্তিগত জীবন ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বানোয়াট গল্প সৃষ্টি করে তা প্রচারের অপচেষ্টা করে গেছেন এবং সেসব বিকৃত ইতিহাসের ধারা তাদের বইপত্রে আজও রয়েছে। কিন্তু এক সময় সত্যিটা সামনে আসে। ইতিহাসকার ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিটিশ শাসনামলে তার বিরুদ্ধে লিখিত হয়েছে অনেক মিথ্যা ও অলিক কাহিনী। সে আমলে যারাই যা কিছু লিখেছেন তা সবই নবাব সিরাজকে বিরোধিতা করে তাকে অসম্মান করে লেখা। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ‘সিরাজউদ্দৌলা’ গ্রন্থটিতে ইংরেজ ও তাদের অনুগত ঐতিহাসিকদের সব ষড়যন্ত্র ছিন্ন করার চেষ্টা করেছিলেন। সততার সঙ্গে নির্মোহ সাহসী বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি বহুল প্রচারিত এ গ্রন্থে। তিনি লিখেছেন-’ সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ১৪ মাস ১৪ দিন রাজত্ব করলেও শাসক হিসেবে তাঁর যোগ্যতা কোনো দিক দিয়ে কম ছিল না। একাধারে তিনি ছিলেন ‘নিখাদ দেশপ্রেমিক’, ‘অসীম সাহসী যোদ্ধা’, ‘সব বিপদে পরম ধৈর্যশীল’, ‘কঠোর নীতিবাদী’, ‘নিষ্ঠাবান’ এবং ‘যে কোনো পরিণামের ঝুঁকি নিয়েও ওয়াদা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব’। বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, কিছু সাম্প্রদায়িক ও উদ্দেশ্যমূলক ইতিহাসকার ব্যতীত সকল সৎ, যোগ্য এবং প্রজ্ঞাবান ঐতিহাসিক একবাক্যে বলেছেন যে, বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সকল ষড়যন্ত্র আর বিদ্বেষের জাল জগৎশেঠসহ নানা কুচক্রীর মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়েছিল। তারা নবাব পদে সিরাজকে সহ্য করতে পারেনি এবং নিজেদের বশংবদ একজনকে নবাব বানাতে বদ্ধপরিকর হয়। এরাই পুরো ষড়যন্ত্রটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে এবং ইংরেজ ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে দূতিয়ালী ও সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে এবং অবশেষে ঔপনিবেশিক ইংরেজ ও স্থানীয় ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে সম্পাদিত হয় বাংলার স্বাধীনতা-বিনাশী গোপন চুক্তি। আর এভাবেই পদদলিত হয় বাংলার স্বাধীনতা।

বিদ্রোহী শওকত জং এবং ষড়যন্ত্রের ইন্ধনদাতা ইংরেজদের পতন ঘটিয়ে কলকাতা বিজয় শেষে সিরাজ যখন রাজধানী মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন, তখন চক্রান্তের নতুন খেলা শুরু হয়। জগৎশেঠ মীর জাফরকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, ইংরেজদের সাহায্য ছাড়া সিরাজকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করা যাবে না। অতএব জগৎশেঠের দুতিয়ালীতে মীর জাফর ও ইংরেজদের মধ্যে নৈকট্য বৃদ্ধি পায় এবং ষড়যন্ত্রের গভীর জাল বিস্তৃতি লাভ করে।

পলাশী যুদ্ধে সে দিন কি ঘটেছিল? ১৭৫৭ সালের ১২ জুন কলকাতার ইংরেজ সৈন্যরা চন্দননগরের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়। সেখানে দুর্গ রক্ষার জন্য অল্প কিছু সৈন্য রেখে তারা ১৩ জন অবশিষ্ট সৈন্য নিয়ে যুদ্ধযাত্রা শুরু করে। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের পথে হুগলী, কাটোয়ার দুর্গ, অগ্রদ্বীপ ও পলাশীতে নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ ইংরেজদের পথ রোধ করে নি। ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা বুঝতে পারেন, তার সেনাপতিরাও এই ষড়যন্ত্রে শামিল।

বিদ্রোহের আভাস পেয়ে সিরাজ মীর জাফরকে বন্দি করার চিন্তা পরিত্যাগ করেন। তিনি মীর জাফরকে ক্ষমা করে তাকে শপথ নিতে বলেন। মীর জাফর পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে অঙ্গীকার করেন যে, তিনি শরীরের একবিন্দু রক্ত থাকতেও বাংলার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন হতে দেবেন না। গৃহবিবাদের মীমাংসা করে নবাব রায় দুর্লভ, ইয়ার লতিফ, মীর জাফর, মীর মদন, মোহনলাল ও ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রেঁকে সৈন্য চালানোর দায়িত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধযাত্রা করেন।

২৩ জুন সকাল থেকেই পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজরা মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। ১৭৫৭ সালের ২২ জুন মধ্যরাতে রবার্ট ক্লাইভ কলকাতা থেকে তার বাহিনী নিয়ে পলাশী মৌজার লক্ষবাগ নামে আম্রকাননে এসে তাঁবু গাড়েন। বাগানটির উত্তর-পশ্চিম দিকে গঙ্গা নদী। এর উত্তর-পূর্ব দিকে দু’বর্গমাইলব্যাপী আম্রকানন। বেলা আটটার সময় হঠাৎ করেই মীর মদন ইংরেজ বাহিনীকে আক্রমণ করেন। তার প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ক্লাইভ তার সেনাবাহিনী নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নেন। ক্লাইভ কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন। মীর মদন ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। কিন্তু মীর জাফর, ইয়ার লতিফ খান ও রায় দুর্লভ যেখানে সৈন্য সমাবেশ করেছিলেন সেখানেই নিস্পৃহভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন। তাদের সামান্য সহায়তা পেলেও হয়ত মীর মদন ইংরেজদের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করতে পারতেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে সিরাজউদ্দৌলার গোলাবারুদ ভিজে যায়। তবুও সাহসী মীর মদন এবং অপর সেনাপতি মোহনলাল ইংরেজদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গোলার আঘাতে মীর মদন মারাত্মকভাবে আহত হন ও মারা যান। নবে সিং হাজারী ও বাহাদুর খান প্রমুখ গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধানও একইসাথে মৃত্যুবরণ করেন।

গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান নিহত হওয়ার পর সিরাজউদ্দৌলা মীর জাফর ও রায় দুর্লভকে তাদের অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে তীব্র বেগে অগ্রসর হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু উভয় সেনাপতি তার নির্দেশ অমান্য করেন। বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল নবাবকে পরামর্শ দেন যুদ্ধবিরতি ঘটলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী কিন্তু সিরাজ মীর জাফর প্রমুখের পরামর্শে পশ্চাৎপসরণের সিদ্ধান্ত নেন। বিকেল পাঁচটায় সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী নির্দেশনার অভাবে এবং ইংরেজ বাহিনীর গোলন্দাজি অগ্রসরতার মুখে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।

দেখা যাচ্ছে ষড়যন্ত্রীরা জাল বিস্তার করে এবং সিপাহসালার মীরজাফর প্রমুখ যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে থেকে নবাবের সঙ্গে বেঈমানী করে হেলায় বাংলার স্বাধীনতা হারাতে দিয়েছেন। কিন্তু ইতিহাস তাদের কাউকেই ক্ষমা করেনি। এ অপকর্মে যারা যুক্ত ছিল মীরজাফর থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই ফল ভোগ করেছে। আজ মীরজাফরের নাম মানুষ ঘৃণাভরে উচ্চারণ করে। ঘৃণাভরে উচ্চারণ করে জগৎশেঠ, উমি চাঁদ, ঘসেটি বেগমসহ সকল কুচর্ক্রীর নাম। তাদের সকলকেই অপমৃত্যুর স্বাদ নিতে হয়েছে।

অন্যদিকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা এখন ইতিহাসের এক মহান চরিত্র। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি একজন আদর্শ পুরুষ। সে কারণে তিনি আজও প্রাসঙ্গিক। সমকালকে ছাড়িয়ে তিনি মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হতে থাকবেন অনন্তকাল। ২৩ জুন পলাশী দিবস আর ৩ জুলাই সিরাজের শাহাদাত বার্ষিকী প্রতি বছর আমাদের সে কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।