মমতাজ উদ্দিন আহমদ

৭ ফেব্রুয়ারি, ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দ। মাতামুহুরীর তীর তখনো শীতের কুয়াশায় ঢাকা। প্রকৃতির নিস্তব্ধতা এতটাই গভীর যে, যেন সময় থমকে আছে। পূবাকাশে সূর্য সবেমাত্র তার ক্ষীণ রক্তিম আভা ছড়াচ্ছে পাহাড়ের ফাঁক গলে, কিন্তু তার তীব্রতা তখনো মাটিকে উষ্ণ করতে পারেনি। চারদিক জুড়ে ঘন সবুজাভ অরণ্য, জনমানবের চিহ্ন নেই। কুয়াশার চাদরে মোড়া নদীর পাড় এক অলৌকিক নির্জনতা নিয়ে শুয়ে আছে। ধীরে ধীরে সূর্য তার লুকোচুরি শেষ করে পাহাড়ের বুক চিরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আর তার সোনালী আলোয় কুয়াশার বুক ফুঁড়ে দৃশ্যমান হচ্ছে অনন্ত অরণ্যানী।

এ নীরবতা ভেঙে নদীর পাড়ে এসে থামল এক যুদ্ধ-ক্লান্ত সৈন্যদল। তাদের চোখে-মুখে দীর্ঘ যাত্রার ছাপ স্পষ্ট, তবুও এক অদ্ভুত দৃঢ়তা তাদের চালচলনে। এ দলের মাঝে একজন সুঠামদেহী পুরুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। তার প্রতিটি পদক্ষেপে এক অদম্য সংকল্প যেন প্রতিধ্বনি হচ্ছিল। তাদের সাথে ছিল একদল চাকমা নৃগোষ্ঠীর মানুষ-নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশু-কিশোর সকলেই যেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথিক।

এরা ছিল সুবেহ বাংলার পরাক্রমশালী সুবেদার শাহ সুজার সৈন্যদল। ভাগ্যচক্রের কী নির্মম পরিহাস! একসময় যিনি সুবেহ বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা ছিলেন, আরাকানের রাজার নিমন্ত্রণেই তিনি সস্ত্রীক পাড়ি দিয়েছিলেন সমুদ্রপথে, বিশ্বাস করেছিলেন এক ভিনদেশী শাসকের কপট আশ্বাসে। এ সেনাদল তারই নির্দেশে রামুর পার্বত্যভূমিতে অবস্থান করছিল, যখন সুজার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। আরাকান রাজার বিশ্বাসঘাতকতা ও হঠকারিতায় শাহ সুজা সস্ত্রীক নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন।

আরাকানের রাজার আমন্ত্রণে যখন বাংলার সুবেদার শাহ সুজা সস্ত্রীক আরাকানে যাত্রা করেছিলেন, তখন হয়তো তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি যে তার জন্য কী নির্মম পরিণতি অপেক্ষা করছে। বিশ্বাসঘাতকতা আর লোভের বিষাক্ত ছোবল তার রাজকীয় জীবন কেড়ে নেবে, যা ছিল কল্পনারও অতীত।

আরাকান অধিপতি রাজা সুধর্ম্মা, যিনি একসময় সুজাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নিজের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলেন। নিষ্ঠুরতার সকল সীমা অতিক্রম করে তিনি শাহ সুজা, তাঁর প্রিয়তমা পত্নী পরিবাণু বেগম এবং তাঁদের এক কন্যাকে নির্দয়ভাবে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে হত্যা করলেন। মগরাজা সুজার অপরিমেয় ধন-ভাণ্ডার লুণ্ঠন করে নিজের কোষাগার পূর্ণ করলেন। কিন্তু এখানেই তার পাশবিকতার শেষ হয়নি। শাহ সুজার এক কন্যাকে বলপূর্বক অন্তঃপুরে বন্দী করা হয়েছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, এ কন্যাকে নিয়েই সম্ভু শাহ সুজার সাথে আরাকানাধিপতির মনোমালিন্যের উৎপত্তি হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত এই ভয়াবহ পরিণতির জন্ম দেয়।

জগজ্জয়ী মোগল সম্রাট শাহজাহানের পৌত্রী হয়েও সে রাজকন্যাকে কত বড় দুঃখের সম্মুখীন হতে হয়েছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তাঁকে ‘নাপ্পী’ খেতে, ‘কালো থামী’ পরতে এবং কানে সোনার ‘নাধং’ ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। মোগলদের রাজকীয় জীবনের জাঁকজমক আর আভিজাত্য ছেড়ে এক বন্দিনী রাজকন্যার জীবন তাঁর জন্য ছিল এক চরম অপমান ও বেদনা। এটা যে তাঁর পক্ষে কত বড় দুঃখের কথা ছিল, তা কেবল অনুভব করা যায়, বলে শেষ করা যায় না।

এমন মর্মন্তুদ সংবাদ যখন সেনাপতি ফতে খা-এর কানে পৌঁছাল, তখন রামুর নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে পূর্ব দিকের গহীন অরণ্যের পথে তিনি দলবলসহ ঢুকে পড়লেন। তাঁর কাঁধে তখন শুধু সৈন্যদের প্রাণ রক্ষার দায় নয়, বরং শাহ সুজার পতনের পর মোগলদের হারানো সম্মান রক্ষার এক অলিখিত ভার। সে বিপদসঙ্কুল যাত্রায় তাদের সঙ্গী হয়েছিল একদল নিরুপায় চাকমা পরিবার, যারা এর আগে থেকে রামুর চাকমার কুলে আশ্রয় নিয়েছিল অথবা ভাগ্যচক্রে এ বিপর্যয়ের সহযাত্রী হয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে দুর্গম অরণ্য, খাড়া ঝিরি ও খরস্রোতা খাল পাড়ি দিয়ে তারা যেন এক নতুন দিগন্তে উপনীত হলো।

মাতামুহুরী নদীর এ সুরম্য তীরের সৌন্দর্য, প্রকৃতির ছায়াঘেরা পরিবেশ তাদের ক্লান্ত মনে এক অপ্রত্যাশিত আনন্দানুভূতি নিয়ে এল। চারদিকের দৃশ্য ছিল সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ঘন সবুজাভ অরণ্য আর নীল আকাশের নিচে এক পাহাড় তখনও কুয়াশার আবছা বাষ্পীয় কণার আড়ালে ঢাকা। পশ্চিমে কুয়াশায় আবছা রূপালী রেখার মতো মাইলের পর মাইল চলে গেছে উত্তর-দক্ষিণমুখী এক দীর্ঘকায় পাহাড়ের সারি। তার দু’ধারে নিবিড় অরণ্যরেখা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। আর সুদূর পূর্ব দিকেও একই রকম উত্তর-দক্ষিণমুখী পাহাড়ের সারি যেন প্রকৃতির বিশালতা ঘোষণা করছিল।

এ নিবিড় ঘন বনরাজিকে আরও কাছ থেকে দেখলে বোঝা যায় তার রহস্যময়তা। নদীর তীরের সুবিশাল গর্জন গাছগুলি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, শীতের আদ্রতায় তাদের পত্র-পল্লব কিছুটা ম্রিয়মাণ হলেও, শাখাগুলি যেন নীল দিগন্তের দিকে উড়াল দিতে চাইছে। গাঢ় সবুজ থেকে ফিকে হওয়া পাতাগুলিতে কুয়াশার কণাগুলো সূর্যের আলোয় হীরার মতো জ্বলছিল, আগন্তুকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল অবিরত। গাছের ডালে ডালে শালিক ও বুলবুলির ওড়াউড়ি এ ভয়ঙ্কর নীরবতার মাঝে যেন প্রকৃতির নিজস্ব সুর বাজাচ্ছিল। ঝিঁঝির ঝঙ্কার, পাখির কাকলি আর বন্য পশুর কোলাহল এই অরণ্যকে যেন জীবন্ত করে তুলেছিল।

এ অপার সৌন্দর্যের মাঝে দাঁড়িয়ে, আগন্তুক দলের দলনেতা সেনাপতি ফতে খান ঘোষণা করলেন, “আমরা এ নদীর পাড়েই বসতি গড়ব!” তাঁর কথায় মোগল সৈন্যবাহিনী ও চাকমা নারী-পুরুষ একে অপরের দিকে তাকাল। তাদের চোখে ছিল বিস্ময়, ক্লান্তি এবং এক নতুন ভোরের স্বপ্ন- এক নতুন জীবনের অঙ্গীকার।

এ দলের প্রধান ছিলেন সেনাপতি ফতে খান। মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে তিনি ছিলেন এক কিংবদন্তী সেনাপতি। যদিও ইতিহাসের পাতায় তাঁর নামের উল্লেখ সীমিত, কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর বীরত্ব, অদম্য শৃঙ্খলা ও রণকৌশলের জন্য তিনি সম্রাটের অনুগতদের মাঝে অমর হয়ে উঠেছিলেন।

ফতে খান ছিলেন দীর্ঘদেহী, প্রায় ছয় ফুট দু’ইঞ্চি উচ্চতার এক বলিষ্ঠ পুরুষ। তাঁর কাঁধ ছিল প্রশস্ত এবং শরীরের গঠন ছিল সুদৃঢ়, যেন প্রস্তর খোদাই করে গড়া। মুখমণ্ডলে ছিল ঘন কুচকুচে কালো দাড়ি, যা মোঘল রাজকীয় সেনাদের রীতিতে অত্যন্ত পরিপাটি করে ছাঁটা। তাঁর কপাল ছিল চওড়া ও মসৃণ, যা তাঁকে এক প্রজ্ঞাবান ও আত্মবিশ্বাসী রূপ দিত। চোখ দুটি ছিল গভীর ও তীক্ষè; যেন যুদ্ধের আগুনে পুড়ে যাওয়া দুটি কাঠকয়লা- একদৃষ্টিতে তাকালে নবীন সৈন্যেরও বুক কেঁপে উঠত। তাঁর পরিধানে ছিল ময়ূরকণ্ঠী রঙের জমকালো রেশমি জামা, তার উপর পরতেন ধাতব জরির বর্ম যা সূক্ষ্মভাবে সোনা ও রুপার সুতোয় খচিত ছিল। তাঁর কোমরে ঝুলানো ছিল বাঁকা ধারালো তলোয়ার, যার নাম ছিল “আসিফ” ফারসি ভাষায় “শক্তির প্রতীক”। তাঁর পাগড়ি ছিল গাঢ় লাল রড়ের, সামনের অংশে বসানো ছিল একটি পান্না খচিত ব্রোচ, যা ছিল তাঁর শাহজাদার কাছ থেকে পাওয়া এক অমূল্য উপহার।

ফতে খানের চলাফেরা ছিল মেপে মেপে, অথচ আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ। তাঁর পদক্ষেপ ছিল নীরব, তবু তাঁর উপস্থিতি কারো অজানা থাকত না। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক অভিজ্ঞ বাঘ— নির্ভীক, সুশৃঙ্খল এবং কৌশলী। তাঁর গলার স্বর ছিল গম্ভীর, অথচ মার্জিত। কেবল যুদ্ধের সময় নয়, কূটনীতিতেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। এ জন্যই তিনি সম্রাটের দূত হয়ে বারবার রাজ্যসীমা পার হয়েছেন। ইতিহাস হয়তো তাঁর নাম বিস্মৃত হলেও, তাঁর অবয়ব আর কীর্তি আজও মোগল সাম্রাজ্যের সৈনিকগাঁথায় কিংবদন্তি হয়ে আছে।

ফতে খান এক বিশাল গর্জন গাছের মগডালে উঠে বসলেন। সেখান থেকে তিনি দেখছিলেন আলো ঝলমলে গভীর বনরাজি আর উঁচু-নীচু পার্বত্য-ভূমি। নদীটি প্রশস্ত ছিল না, কিন্তু তার স্বচ্ছ জল বয়ে চলেছিল অবিরাম। নদীর ওপারে কোনো জনপদ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল না; জনপ্রাণী-শব্দশূণ্য এই বনভূমি যেন এক নতুন সূচনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল। ততক্ষণে সঙ্গীয় সৈন্যদল ও চাকমা জাতির লোকেরা ক্ষুধা নিবারণের জন্য নদীর তীরে রান্নায় লেগে গেল। সূর্যের তেজ ক্রমশ বাড়ছে। স্বচ্ছ মেঘশূণ্য আকাশের পটভূমি যেন নিচের সবুজাভ অরণ্যের বুকে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাচ্ছিল। বয়স্কদের রান্নার অবসরে শিশু-কিশোররা কলরব মেতে উঠল। মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে আশেপাশের বন্য জীব-জন্তুরা নিরাপদ স্থানে সরে যেতে লাগল।

দলের চাকমা জাতির ছোট ছোট শিশুদের বয়স ছিল এক থেকে দশ বছরের মধ্যে। এ দলটিই ছিল আলীকদমকে কেন্দ্র করে চাকমা জাতির প্রথম আগমনের সাক্ষী।

তৎকালীন সুবেহ বাংলার পাশে অবস্থিত আরাকান রাজ্যের অধীন পার্বত্য ভূমির ইতিহাস যুটা বৈচিত্র্যপূর্ণ, ততটাই রহস্যঘেরা। এ অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ জাতিগোষ্ঠী হলো চাকমা। তাদের আগমন, বিস্তার এবং বসতির ইতিহাস এক দীর্ঘ সময়ের সামাজিক-ভৌগোলিক পরিবর্তনের সাক্ষ্য বহন করে। ইতিহাসবিদদের মতে, চাকমা জাতির প্রথম আগমন ঘটেছিল আজকের বান্দরবান জেলার এক প্রাচীন ও জনপদখ্যাত অঞ্চল-আলীকদম বা বর্তমান আলীকদমে। ধারণা করা হয়, সুদূর অতীতে চাকমারা তাদের আদি নিবাস আরাকান থেকে রাজনৈতিক সংঘাত, পরিবেশগত পরিবর্তন বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক বা সামাজিক কারণে স্থানান্তরিত হয়ে এই অঞ্চলে এসে প্রথম বসতি স্থাপন করে।

আলীকদমের ভূপ্রকৃতি-উঁচু পাহাড়, নদীখাত, গভীর জঙ্গল ও কৌশলগণ অবস্থান- চাকমা বসতির জন্য ছিল বিশেষভাবে উপযোগী। এখানকার পাহাড়ি পথ, অফুরন্ত পানি সম্পদ ও উর্বর ভূমি তাদের জীবিকা ও সংস্কৃতিকে বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এমনকি চাকমা জাতির প্রাচীন লোকশিল্প, ধর্মীয় বিশ্বাস ও ভাষার সঙ্গে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও লোকজ সংস্কৃতির গভীর সংযোগ রয়েছে।

চাকমাদের আলীকদমে আগমন শুধু একটি ভৌগোলিক স্থানান্তর ছিল না, এটি ছিল একটি জাতির ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ের সূচনা। সেই অধ্যায় আজও বিভিন্ন মৌখিক ইতিহাস, কিংবদন্তি, স্থাননাম ও লোকসংস্কৃতিতে জীবন্ত হয়ে আছে। অতএব, বুর্তমানে আলীকদমকে শুধু একটি স্থান হিসেবে নয়, চাকমা জাতির সাংস্কৃতিক শিকড় ও স্মৃতির পটভূমি হিসেবে মূল্যায়ন করা জরুরি।

ইতিহাসের ধূলিধূসর পথ বেয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা প্রায়শই এমন সব বাঁকে পৌঁছে যাই, যেখানে প্রকৃত তথ্য ও লোককথা মিলেমিশে এক অবিনশ্বর কাহিনির জন্ম দেয়। এ লেখাটিও ঠিক তেমনই-এখানে ইতিহাসের খণ্ডচিত্র ও লোকজ বিশ্বাসের ফাঁকে ফাঁকে কল্পনার রঙে আঁকা হয়েছে একটি বিস্ময়কর যাত্রাপথ। এ কাহিনিতে ব্যবহৃত চরিত্র, স্থাননাম, ঘটনার বিন্যাস অনেকাংশেই ঐতিহাসিক সত্যের ছায়া বহন করলেও, এটি মূলত এক সাহিত্যিক পুনর্গঠন-যেখানে কবিতা, কল্পনা ও কালের প্রতিধ্বনি মিলেমিশে তৈরি করেছে এক অনন্য ঐতিহাসিক কল্প-জগৎ। অনেকটা রাহুল সাংকৃত্যায়নের “ভোলগা থেকে গঙ্গা”-র মতো করে, এই লেখাও এক ধরনের কাল-অতিক্রমী অন্বেষণ। কিন্তু এটি কোনো নির্ভুল ইতিহাস নয়। বরং ইতিহাসের অতল গহ্বর থেকে তুলে আনা কিছু পারম্পরিক ইঙ্গিত ও সামান্য তথ্যের উপর ভর করে নির্মিত এক সাহিত্যিক সৃজন, যার উদ্দেশ্য সত্যের অনুসন্ধান নয়, বরং কল্পনার ভাষায় অতীতকে অনুভব করা। সুতরাং, ইতিহাসের কঠোর পরিমাপকাঠি দিয়ে এ লেখার ধারাবাহিকতা যাচাই না করাই শ্রেয়। বরং পাঠক যেন এই কাহিনীর অন্তর্লুকায়িত কাব্যিকতা, বর্ণনামূলক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক সম্ভাবনার দিকে দৃষ্টি দেন-এটাই আমার প্রত্যাশা।

লেখক : সাংবাদিক।