কয়েকটি ঘটনা দিয়ে আজকের আলোচনা শুরু করতে চাই। ভারতীয় সেনাবাহিনী পরিচালিত দিল্লীর ইন্টারন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্রাটিজিকেল স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ একটি পুরাতন ও খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটিকে ভারত তো বটেই বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা, মূল্যায়ন, দিকদর্শন প্রদান এবং থিংক ট্যাংক তৈরির কেন্দ্রও বলা হয়। ড. শ্রুতি পাট্রানায়েক এ প্রতিষ্ঠানেরই একজন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো। গত প্রায় এক যুগ ধরেই তার সাথে আমার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। মাধ্যম ছিলেন মরহুম শাহ আবদুল হান্নান। তিনি ড. শ্রুতিকে আম্মা বলে সম্বোধন করতেন। শ্রুতি আমাকে ভাই বলে ডাকেন। প্রতিবছরই তিনি সভা সমিতিতে যোগদান উপলক্ষ্যে কমপক্ষ্যে দু’বার বাংলাদেশ সফর করেন এবং আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ঢাকায় এসেছিলেন এবং আমার সাথে আমার অফিসে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী আলোচনায় কাটিয়ে ছিলেন। তার আলোচনায় পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অনেক কুকীর্তি ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের গতিধারা এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্যপূণ সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্বও উঠে আসে, বাংলাদেশ জামায়াতের নীতিনির্ধারক হিসেবে আমার কোন ভূমিকা না থাকলেও সাংবাদিক হিসেবে তিনি আমার কাছ থেকে অনেক কিছুই জানতে চেষ্টা করেছেন এবং যাবার আগে জামায়াতকে বাংলাদেশের ভেতরে বাইরে কিছু কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন কর্তৃক সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে ঘৃণার চোখে দেখার বিষয়টি জানাতে ভুলেননি। ভারতীয় দূতাবাস থেকে শেষ বিদায় নেয়ার আগে তিনি আমার জন্য একটি বই পাঠিয়েছেন। বইটি হচ্ছে মহিউদ্দিন আহমদের লেখা “জামায়াতে ইসলামীর উত্থান বিপর্যয় ও পুনরুত্থান” অনন্যা প্রকাশনী বইটি ছাপিয়েছে। মহিউদ্দিনের বইটি অনেক অসত্য ও বিষাক্ত তথ্যে ভরা এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডসহ একাত্তর সালে অনেক অপকর্মের জন্য (এমনকি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য) জামায়াতকে দোষারোপ করে এ দেশের মুসলমানদের স্মৃতিভ্রষ্টতার জন্য দায়ী করে জামায়াতের পুনরুত্থানের সহায়ক ভূমিকা পালনের দোষে দুষ্ট করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ঘটনাটি হচ্ছে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট সংক্রান্ত। ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ মালয়েশিয়ান ফেডারেল পার্লামেন্টের সরকারি দলের একজন সিনেটর বাংলাদেশে সম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিস্তৃতি ও হিন্দুদের উপর মুসলমানদের অমানবিক অত্যাচার সংক্রান্ত এক প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন এবং পার্লামেন্টে আলোচনা শেষে এজন্য তারা একটি নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। ব্যাপারটি দুঃখজনক। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম একজন প্রাজ্ঞ ও ইসলামী বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের ব্যক্তিত্ব। ’৬০ এর দশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ছাত্র ইসলামী আন্দোলনের যে দুইজন নেতাকে আমরা রোল মডেল বিবেচনা করতাম তার মধ্যে একজন ছিলেন জনাব আনোয়ার ইব্রাহিম। আরেকজন ফিলিপাইনের মিন্দানাও এর নূর মিসৌরী। নূর মিসৌরী ছিটকে পড়েছেন, কিন্তু আনোয়ার ইব্রাহিম অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হয়ে মালয়েশিয়ার ক্ষমতায়। তার পার্লামেন্টে বাংলাদেশের নিন্দা করে প্রস্তাব পাস বিস্ময়কর, যেখানে ঘটনার সত্যতা নেই তা ভারত অনুপ্রাণিত ও পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা তার লুটেরা অর্থপুষ্ট-দুনিয়াব্যাপী অপপ্রচারের অংশ।

এ পার্লামেন্টেরই একজন সিনেটর আবদুল হাদি আওয়াদের নেতৃত্বাধীন ইসলামিক পার্টির একজন নেতা। আমল মালয়েশিয়া ও আইএফআরডির সভাপতি জনাব হোসাইন ইসমাইল প্রস্তাবটি পছন্দ করেননি। তিনি হোয়াটসঅ্যাপে আমার কাছে বিষয়টির সত্যতা জানতে চান। প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করে তাকে আমি একটি রিপোর্ট প্রদান করি এবং কিভাবে জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে হিন্দুুদের মন্দির ও বাড়িঘর সহায়সম্পত্তি জামায়াত নেতাকর্মীরা পাহারা দিয়েছে, দেশব্যাপী সফর করে গ্রামেগঞ্জে অমুসলমান নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন, অনুভূতি ফিরিয়ে এনেছেন সে সম্পর্কে বর্ণনা দেই। এ সংক্রান্ত আমার একটি রিপোর্ট ২৩ ডিসেম্বর মালয় মেইল পত্রিকা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আমাদের বিলাসী হাইকমিশনার রাষ্ট্রদূত ও তার বাহিনী পলিটিকেল ও ইকোনমিক এটাচিরা কী করেন? তারা কি এখনো শেখ হাসিনার দালালী করে বেড়াচ্ছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মেহেরবানি করে শুধু মালয়েশিয়া নয় সকল দেশে কর্মরত বাংলাদেশর দূতাবাসগুলোর খবর নিতে পারেন।

প্রতিবেশী মায়ানমারের বৌদ্ধভিক্ষু ও জান্তা সরকারের সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত ও উৎখাতকৃত প্রায় ১৫ লক্ষ শরণার্থী বাংলাদেশের বিভিন্ন শিবিরে অবস্থান করছে। তারা আন্তঃকোন্দল ও নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। নিজেদের ক্যাম্পে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে শত শত পরিবার, নারী-শিশুর দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে। আবার নতুন শরণার্থীও আশ্রয় পাবার আশায় বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তাদের নিজ দেশে ফেরত নেয়ার একাধিক চুক্তি হলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে আরাকান আর্মি নামক মগদের একটি সশস্ত্র বাহিনী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখল করে নিয়েছে। রাজ্যের সতেরটি জেলার সবগুলোই এখন তাদের দখলে। জান্তা সরকারের অনেক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ বরাবর তাদের প্রায় ১৮০ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত এলাকা এখন তাদের কব্জায়, লক্ষণটি শুভ নয়।

ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সলিডারিট ফ্রন্টের প্রবীণ নেতা। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে তিনি রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে মায়ানমারের অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই-এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তিনি এখন চট্টগ্রামে। রোহিঙ্গা আর্মির পরিচয়, তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও শক্তিমত্তা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বললাম। প্রথমত. তিনি কথা বলতে রাজী হননি। কারণ তিনি গোয়েন্দাদের ভয় পান। পরে যা বললেন তা শুনে আঁতকে উঠলাম। তিনি বললেন, এ বাহিনী মায়ানমার, ভারত, বাংলাদেশ, থাইলান্ড ও নেপালের পার্বত্য অঞ্চলসমূহের মগ জনগোষ্ঠী দ্বারা গঠিত। তাদের লক্ষ্য কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা এবং ফেনী পর্যন্ত এলাকা দখল করে এ বিস্তৃত এলাকাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা একটা রাষ্ট্র বানানো। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী তাদের পেছনে প্রধান শক্তি হিসেবে ভারত কাজ করছে এবং বিষয়টি তিনি ও তার সহযোগীরা বছর দুয়েক আগে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারকে জানিয়েছিলেন। ফলে তাকে গোয়েন্দা বাহিনীর হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। বর্তমান সরকার ও আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

এদিকে ভারতীয় সীমান্তে বিএসএফ যুদ্ধের উন্মাদনা সৃষ্টি করছে বলে পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। তারা নোম্যান্স ল্যান্ডে কোথাও কাঁটাতারের বেড়া আবার কোথাও পরিখা খনন করছে। বিএসএফ বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা করার ঘটনা অব্যাহত রেখেছে। তিন দিকের সীমান্তই এখন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, দক্ষিণ সীমান্তে বঙ্গোপসগার এখানো অনুকূলে আছে তবে বিরূপ আবহাওয়া কখন আমাদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা বলা মুশকিল। এ সর্বাঙ্গীন চ্যালেঞ্জ ও বিপদ মোকাবেলার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের। কিস্তু জাতীয় ঐক্য কোথায়? চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মওজুতদারী ও নানা অপরাধে লিপ্ত কোন কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী কর্তৃক পতিত ফ্যাসিবাদীদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া, আলেম ওলামা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলকর্তৃক সংশোধনের অনুরোধকে তারা তীব্র ভাষায় গালাগাল করছেন, বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এবং উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাখাওয়াত স্পষ্ট ভাষায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, লুটপাট ও অনৈতিক কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন।

বিএনপি একটি বড় দল। বেগম জিয়া অসুস্থ ও লণ্ডনে চিকিৎসাধীন। ঐক্য ও সংযম এবং শিষ্টাচারের পক্ষে তারেক জিয়ার ভূমিকা প্রশংসনীয়। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যে আমি স্তম্ভিত হয়েছি। তিনি বলেছেন যে, কুরআনে রাজনীতি নেই। আজ থেকে প্রায় সত্তর বছর আগে পাকিস্তানের খ্যাতিমান আইনজীবী জনাব এ কে ব্রোহি পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী ছিলেন। তখন পাকিস্তানের সংবিধানের মূলনীতি নিয়ে বিতর্ক চলছিল। আলেম উলেমাদের নেতৃত্বে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ইসলামী সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আইনমন্ত্রী জনাব ব্রোহি করাচী বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ঘোষণা করলেন যে, কুরআনে সংবিধানের কোনও দিকদর্শন নেই। কেউ যদি বের করে দিতে পারেন, তাকে তিনি পুরস্কৃত করবেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুর রহীম তার এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন এবং বললেন যে, পুরস্কারের তার দরকার নেই ব্রোহি সাবকে শুধু কিছু পড়াশোনা করতে হবে এবং তাকে মাওলানা মওদূদী প্রণীত IslamicLaw and Constitution সহ কুরআন-হাদিস সমৃদ্ধ বেশ কিছু সাহিত্য স্বয়ং তার হাতে পৌঁছিয়ে দিয়ে সেগুলো অধ্যয়নের অনুরোধ করলেন। তিনি নিষ্ঠার সাথে সেগুলো অধ্যয়ন করলেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে ধারণা পাল্টাতে বাধ্য হলেন। শেষ জীবনে ব্রোহি সাহেব ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ সেবকে পরিণত হয়েছিলেন। মির্জা আলমগীর মেহেরবানী করে কুরআন, হাদিস, ইসলামী সাহিত্য এবং রাসূল (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদীনের জীবনী ও কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত পুস্তকাদি পাঠ করলে কুরআনের রাজনীতির সন্ধান অবশ্যই পাবেন, কার্ল মার্কস ও লেনিন হেগেলের বইপত্রে এটা পাবেন না। বিএনপি নিজেকে ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতিনিধি বলে দাবি করে। দলটির প্রতিষ্ঠাতা সংবিধানের মূলনীতিতে ইসলামী ধারা সংযোজন করেছিলেন। এখন তার সেক্রেটারি জেনারেলের বেফাঁস উক্তি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিকে নষ্ট করবে।

এখন জামায়াত প্রসঙ্গে দু’টি কথা। জামায়াত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার কর্তৃক সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত দল এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অনন্য ভূমিকা পালনকারী একটি দল। দলটির আমীর তার আচার-আচরণ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, শিষ্টাচার ও দলমত ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে আপন করে নেয়ার কারিশমা প্রদর্শন করে দেশে বিদেশে, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে নন্দিত হয়েছেন এবং এতে করে দেশব্যাপী জামায়াতের পক্ষে একটি গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত ক্ষমতার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়; তথাপি সুকৃতির প্রতিষ্ঠা ও দুষ্কৃতির উচ্ছেদের জন্য সৎ, যোগ্য ও ধর্মভীরু ব্যক্তিরা সরকার গঠন করা দরকার। এ প্রেক্ষিতে জামায়াতের পক্ষে সৃষ্ট এ গণজোয়ারকে ফলপ্রসূভাবে কাজে লাগানো দরকার।

দার্শনিক পণ্ডিত এমারসনের একটি উদ্ধৃতি এখানে প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়। তিনি বলেছেন, “There’s a tide in the affairs of man which taken at the flood leads on to fortune. But once omitted all the rest of life is bound in shallows and miseries ” তার এই কথাটি ব্যক্তির জীবনে যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি দল ও রাষ্ট্রের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ। সুযোগ সব সময় আসে না, যখন আসে তখন তাকে কাজে লাগানো সকলেরই কর্তব্য।

ভারতীয় জেনারেল ফিল্ড মার্শাল মানেকশ’র একটি মন্তব্যও এখানে উল্লেখ করতে চাই। তিনি বলেছেন, যদি বাংলাদেশকে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করা হয় তাহলে ভারতের আশ্চর্য হবার কিছু নেই। যেদিন আমার সৈনিকরা বাংলাদেশকে মুক্ত করে সেদিনই আমি এই কথা উপলব্ধি করি। বাংলাদেশীদের কখনোই ভারতের প্রতি তেমন ভালবাসা ছিল না। আমি জানতাম ভারতের প্রতি তাদের ভালবাসা অস্থায়ী। অনুপ্রেরণা লাভের জন্য ভারতের দিকে না তাকিয়ে তারা মক্কা ও পাকিস্তানের দিকে দৃষ্টিপাত করবে। আমাদেরকে সত্যাশ্রয়ী হতে হবে। বাংলাদেশের প্রতি আমরা সঠিক আচরণ করিনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের সব রকমের সাহায্য করা উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদরা তা করেননি। তারা বেনিয়ার মতো আচরণ করেছেন। (ফিল্ড মার্শাল মানেকশ’, ভারতের অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান, স্টেটসম্যান, ১৯ এপ্রিল, ১৯৮৮)

জামায়াত সম্পর্কে আগামী সংখ্যায় আরো বিস্তারিত আলোচনা করার আশা রাখি।