গত সপ্তাহের কলামে ‘যে দলের জন্মই আজন্ম পাপ’ শীর্ষক নিবন্ধটি প্রকাশিত হবার পর পাঠক-পাঠিকাদের তরফ থেকে অভূতপূর্ব কিছু প্রতিক্রিয়া আমি পেয়েছি। শেখ হাসিনার গত ১৭ বছরের শাসন, শোষণ ও নির্যাতন ছাড়া নতুন প্রজন্মের যারা তার পিতার শাসনামল ও আওয়ামী আমলের দুঃশাসন ও অনাচার দেখেননি তাদের প্রায় সকলেই একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে আমাকে আওয়ামী রাজনীতির স্বরূপ সম্পর্কিত আরো কিছু আলোকপাতের অনুরোধ করেছেন। আমি তাদের উৎকণ্ঠা ও ইতিহাস জানার আগ্রহকে শ্রদ্ধা জানাই।

আবার জুলাই বিপ্লবের পরিবর্তনের পর নতুন বাংলাদেশে ইসলামী দলগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে অব্যাহত অগ্রগতি লাভ করে। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য কিছু রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতানেত্রীরা বাহ্যিকভাবে জামায়াতের আদর্শিক নিষ্ঠা, শৃঙ্খলার অনুশীলন, সততা, জনসম্পদ উন্নয়নের প্রক্রিয়া প্রভৃতি প্রশংসা করলেও ভিতরে ভিতরে তারা অন্তর্জ¦ালায় ভুগছেন এবং দলটি যাতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে না পারে তার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারা দলটির আকিদা-বিশ্বাসকে অনেকেই এখনো খোলামনে গ্রহণ করতে পারেননি যদিও তাদের ঘোষিত আকিদার কোন অংশটি কুরআন সুন্নাহর পরিপন্থী সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা তাদের অনেকেরই নেই। আবার ইসলামের মৌলিক এবাদতের প্রতি তাদের নিষ্ঠা এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শরীয়া অনুশীলনের ব্যাপারে তাদের সংকল্পকে কিছু কিছু দল মৌলবাদ আখ্যায়িত করে মানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর রয়েছেন। তাদের পেছনে ভারতসহ ইসলাম বিরোধী দেশ বিদেশের শক্তিগুলোর সমর্থন রয়েছে। কিছু কিছু দলের মধ্যে অতি গোঁড়া ও নারী বিদ্বেষী রয়েছেন যারা আধুনিকতাকে হারাম মনে করেন এবং নারীদের মসজিদে নামাজ তো দূরের কথা, আশে পাশে হাঁটাও জঘন্য পাপ বলে মনে করেন। একজন ব্যক্তি বেনামাজী তাকে নামাজী বানাবার উদ্যোগ নেই কিন্তু আরেক ব্যক্তি মাথায় টুপি না দিয়ে নামাজ পড়লে তিনি ঘৃণিত হয়ে যান অথচ নামাজের ফরজ-ওয়াজেব ও সুন্নাতের মধ্যে টুপির স্থান আছে কী নেই সে সম্পর্কে অনেকে খোঁজ রাখেন না। আমি টুপির গুরুত্ব অস্বীকার করছি না। টুপি অবশ্যই পরা উচিত। ড. শহিদুল্লাহ বলতেন টুপি এবং দাড়ি আমার বেশ কয়েকটি পরিচয় বহন করে। এক নম্বর, আমি মুসলমান, দুই আমি সাবালক এবং পুরুষ। মেয়েদের দাড়ি গজায় না, আর গজায় না নাবালক ছেলেদের। বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপ-মহাদেশে আলেম-ওলামাসহ আমরা কিছু মুসলমান আছি যারা মেয়েরা জনপদে ও মসজিদে শালিন চলাফেরা করলেও তাদের অবজ্ঞার চোখে দেখি, দু’টি উদাহরণ দেই। ২০০৫ সালে আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার হজ¦ করার সুযোগ হয়েছিল। একদিন অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে খানায়ে কাবার উন্মুক্ত চত্বরে আমাকে জোহরের নামাজ পড়তে হয়েছিল। আমার ডানপাশে ছিলেন একজন ভারতীয় হাজী। তার ডান পাশে একজন মহিলা হাজী এসে দাঁড়ালেন। ভদ্রলোক এ মহিলার উপস্থিতিকে এক মারাত্মক অপরাধ গণ্য করলে এবং গজ গজ করে এমন আচরণ দেখালেন যেন পারলে তাকে গলা টিপে মেরে ফেলেন।

আরেকটি ঘটনা, একটি জাতীয় গবেষণা ও প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রধান হিসাবে আমি কর্মরত থাকাকালে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রশিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, হোস্টেলসমূহ, ডাইনিং হল ও সম্মেলন কক্ষ, মসজিদ ও আবাসিক ভবনসমূহে চলাচলের সুবিধাকে সামনে রেখে আমরা Link Coridor নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই। একদিন রাত এগারোটার সময় মসজিদের ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে এলাকার ৭/৮ জন লোক আমার বাংলোতে তসরীফ এনে আমার সাক্ষাৎ প্রার্থনা করলেন। আমি ড্রয়িং রুমে তাদের অভ্যর্থনা জানালাম এবং কী খেদমত করতে পারি জানতে চাইলাম। ইমাম সাহেব ছিলেন একজন হাফেজ। তিনিই সাহস করে কথা পাড়লেন। বললেন, হুজুর আপনারা যে লিংক করিডোরটা করছেন সেটা যাতে মসজিদকে বাদ দিয়ে করা হয় সেজন্য আমরা একটা আবেদন নিয়ে এসেছি। কারণ এখানে করিডোর হলে অনেক মহিলা কর্মকর্তা এবং ট্রেইনিরা এ পথ দিয়ে হাটবে এতে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হবে। তাদের বললাম ঠিক আছে, ভাল প্রশ্নই তুলেছেন। মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হোক একজন মুসলমান হিসেবে এটা আমারও কাম্য নয়। এখন আমার একটা প্রশ্নের জবাব দিন। ক্যাম্পাসে তো অনেক কুকুর আছে দেখেছি। এরা যদি মসজিদ সন্নিহিত করিডোর দিয়ে হাঁটে তাহলে কী মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হবে না? যদি না হয় তাহলে মহিলারা হাঁটলে হবে কেন? এমন কী মহিলারা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারবে না এ ধরনের দু’একটি হাদিস আমাকে কি দেখাতে পারেন? হাফেজ সাব চুপ হয়ে গেলেন এবং তারা সাথীরা সালাম দিয়ে চলে গেলেন। আসলে এটা হচ্ছে অজ্ঞতা প্রসূত একটা Attitude, ইসলামী শরিয়ার সাথে যার কোন সম্পর্ক নেই অথচ এমন ছোটখাট বিষয়গুলো আমাদের মধ্যে মারাত্মক কোন্দল বাধিয়ে দেয়।

সম্প্রতি মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কয়েকজন দূত ও কর্মকর্তা জামায়াত আমীরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য জামায়াত অফিসে এসেছিলেন। আসার আগে তারা জামায়াতের মহিলা শাখার নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এবং এ প্রেক্ষিতে মার্কিন দূতাবাসের অনুরোধ অনুযায়ী মহিলা জামায়াতের কয়েকজন সুশিক্ষিত ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী নেত্রী দূতাবাসের মহিলা কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনা জানান এবং তাদের সাথে কথাবার্তা বলেন। শরিয়া অনুযায়ী পর্দা ও হিজাবের চাহিদা বজায় রেখেই তারা এ কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও গণযোগাযোগ ও সামাজিক মাধ্যামে এ নিয়ে কিছু কিছু তথাকথিত আলেম ও রাজনীতিককে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে দেখা গেছে।

কথাগুলো বললাম এ জন্য যে, দেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে একটি বিপ্লব হয়েছে এবং এ বিপ্লব ফ্যাসিবাদী শক্তিকে উৎত্থাত করে বাংলাদেশেকে নতুনভাবে স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদের সুযোগ করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা তারা স্বাধীনতা উত্তরকালে প্রায় ছয় দশক ধরে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির শাসন দেখেছেÑকিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। এবার তারা জামায়াতের নেতৃত্বে ইসলামীপন্থী দলসমূহকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে ভাগ্য পরীক্ষা করতে চায়। নিঃসন্দেহে এটি একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে ইসলামের দুশমন প্রতিবেশী দেশ ও পাশ্চাত্য শক্তিগুলোর প্রলোভন থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের দৃঢ়তা ও যোগ্যতা প্রদর্শনের বিষয়।

আমার সামনে মিশরের ইখওয়ানুল মুসনিলেমীন ও ঐ দেশটির অবিসংবাদিত নেতা ড. মুরসীর একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে। মিশরের গণঅভ্যূত্থান পরবর্তী নির্বাচনে সেই দেশের মানুষ নিরংকুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতায় ড. মুরসীকে বিজয়ী করেছিলেন। কিন্তু ইসলামী দলগুলোর সাথে তার শাসনপদ্ধতি ও শরিয়া আইন কার্যকর করণের তাৎক্ষণিকতা ও গতি-প্রকৃতি নিয়ে বিরোধ বাঁধ। এটা মুখ্যত ছিল Style of Administration নিয়ে। এ সামান্য বিষয়টি অসামান্য হয়ে ওঠে। আননূর পার্টি কেন মুরসী কট্টর সালাফি শরিয়া আইন চালু করছেন না তা নিয়ে তারা প্রবল বিরোধিতা শুরু করেন। অন্যদিকে National Salvation front নামক আরেকটি দল মুরসীর বিরুদ্ধে মিশরকে মৌলবাদী রাষ্ট্র বানানোর অভিযোগ তোলেন। সালাফি আননূর পার্টি কখনো হোসনি মোবারকের বিরোধিতা করেনি, তাদের জন্মই বিপ্লবের পরে। তারা আগে দাওয়াতি কাজের মধ্যে সীমিত ছিল এবং বেশ জনসমর্থনও ছিলা। অন্যদিকে National Salvation front আরো লিবারেল লোক ও সোসালিস্টদের সম্মিলিত প্লাটফরম ছিল। তারা মূলত শহরের মধ্যবিত্ত এলিট শ্রেণীর মিডল ক্লাস প্লাটফরম ছিল। তারা প্রচার করতে থাকে যে ইসলামপন্থীরা সর্বত্র নাক গলাচ্ছে এবং এমন অজুহাতে ড. মুরসীর প্রবল বিরোধিতা শুরু করে। খৃষ্টান গীর্জাগুলো এবং শিয়াদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে তার দায় ইখওয়ানের উপর চাপানো হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদের উত্থান প্রভৃতি অভিযোগ তোলা হয়। আননূর পাটি মুরসীকে মুরতাদ ঘোষণা করে এবং তার বিরোধিতার গতিকে তীব্র করে তেলো। এ সুযোগটা নেয় লিবারেলরা। তারা ইসরাইলের সহায়তায় সেনা বাহিনীকে দিয়ে মুরসীকে উৎত্থাত করে। এভাবে মিশরের ইতিহাসের সবচেয়ে নির্যাতিত শাসকগোষ্ঠীর চক্ষুশুল ও আপামর জনতার নন্দিত ইসলামী দল ও বিপুল ভোটে নির্বাচিত ইসলামী দল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের শিকারে পরিণত হয় এবং ড. মুসরী তারই হাতে নিয়োগপ্রাপ্ত সেনা প্রধান জেনারেল স্বৈরাচারি সিসির কারা আদালতে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় সাফাই বক্তব্য দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মিশরের ঘটনাবলী থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। শেখ হাসিনা অবশ্য এ থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্য তার মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরকে মিশর পাঠিয়েছিলেন। তিনি সে দেশ থেকে বেশ কয়েকটি সবক নিয়ে বাংলাদেশে প্রয়োগের ব্যবস্থা করেছিলেন। তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, কোটি কোটি জনতার সমর্থন ও আশির্বাদপুষ্ট একটি গণঅভ্যুত্থানকে কিভাবে সেনাশক্তি দিয়ে ধূলিসাৎ করে দেয়া যায়। দুই. সেনাবাহিনীকে ঠিকাদারী ব্যবসা ও অর্থকরী কাজে নিয়োগ দিয়ে তাদের পেশাদারিত্ব ধ্বংস করা। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা অবশ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে গণবিরোধী কাজে ব্যবহারে সফল হতে পারেননি। ফলে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়ে তাকে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছিল।

॥ দুই ॥

রাজনৈতিক ময়দানে শেখ হাসিনা ও দোসররা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের পুনঃতৎপর হওয়া ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা অথবা গত প্রায় দু’ দশক ধরে তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা হত্যা, গুম, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, ক্ষমতার অপব্যবহার, লাখ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ-দুর্নীতি ও বিদেশে পাচার, ধর্মীয় ও নৈতিক ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রীয় সংবিধানের প্রশাসনিক, আইন ও বিচারিক কাঠামোসহ গুরুত্বপূর্ণ অংগ ও প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস করা, নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং দেশকে প্রতিবেশী একটি দেশের করদরাজ্যে পরিণত করার অপচেষ্টা প্রভৃতি কারণে তার দলকে নিষিদ্ধ করার দাবিও শক্তিশালী হচ্ছে। এসব দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দলটির জন্মকেই আজন্ম পাপ বলে অভিহিত করা হয়েছিল। পাঠকরা প্রশ্ন তুলেছেন, শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের আমলেও কি দুঃশাসন, দুর্নীতি ছিল? রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তনের যে দাবি উঠেছে তার যৌক্তিকতা কী? এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন, কথাটি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা ও তাদের নায়ক এবং দলের প্রশ্ন। ১৯৫৮ সালে ফিডেল ক্যাস্ট্রো কিউবাকে স্বাধীন করেন। তিন চার দশকেরও বেশি সময় দেশ শাসন করেন এবং তিনি তার দলের একচ্ছত্র কর্তৃত্বে ছিলেন। মাও সেতুং ১৯৪৯ সালে চীনের স্বাধীনতা আনেন এবং সে দেশে কম্যুনিস্ট বিপ্লব সাধন করেন এবং আমৃত্যু সে দেশের রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৩ সালে হুয়ারী বুমেডিন ও বেন বেল্লার নেতৃত্বে আলজেরিয়া স্বাধীন হয় এবং তারা ও তাদের দল তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করেন। পক্ষান্তরে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতাচ্যুতই হলো না, শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার শিকারও হতে হলো। যারা শেখকে হত্যা করলেন তারা তারই দলের লোক। যেখানে ফিডেল ক্যাস্ট্রো, মাও সেতুং ও হুয়ারী বুমেডীন ও তার দল জনসমর্থন নিয়ে বিপ্লবোত্তর সময়ে দশকের পর দশক ধরে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন বা আছেন। সেখানে সশস্ত্র সংগ্রাম ও অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা নিয়ে শেখ মুজিব কেন এত শিগগির ক্ষমতাচ্যুত হলেন এবং এমনকি তার মৃত্যুতে কেউ ইন্না লিল্লাহ পড়লো না বা সামান্য আফসোসও করলো না? আগামী সংখ্যায় ইনশাআল্লাহ নির্মোহভাবে এর কারণগুলো আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করবো।