বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অপপ্রচার নতুন কিছু নয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রকাশিত সংবাদগুলোতে একপেশে প্রচারণা চালানো হয়। বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করা হয়। আরো দুঃখজনক বাস্তবতা হলো এসব প্রতিবেদন বা কলাম রচয়িতারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপশক্তির ফাঁদে পড়ে যান। কখনো তারা অর্থের কাছে বিক্রি হন আবার কখনো বা মিথ্যা তথ্যের বেড়াজালে আঁটকা পড়ে যান। প্রতিবেদনগুলো তাই বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ থাকে না।

এবারও ঠিক তাই ঘটিয়েছে ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’। বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান ঘটে চলেছে মর্মে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ব্যাপক প্রচারণা চালালেও এবার একই সুরে কথা বলেছে মার্কিন পত্রিকাটি। নিউইয়র্ক টাইমসের দক্ষিণ এশিয়ার ব্যুরো চিফ মুজিব মাশাল এবং সাইফ হাসনাতের যৌথ লেখনিতে কলামটি প্রকাশিত হয় ১ এপ্রিল। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, As Bangladesh Reinvents Itself, Islamist Hard-Liners See an Opening.. ‘অর্থাৎ বাংলাদেশ যখন নিজেকে পুনর্গঠন করছে তখন ইসলামী চরমপন্থিরা নতুন করে সামনে আসার পাঁয়তারা করছে।’

লেখাটি নিয়ে আলাপ করার আগে এর মূল লেখক মুজিব মাশাল নিয়ে দুটো কথা বলা দরকার। প্রতিবেদনের পাদটিকায় প্রদত্ত লেখক পরিচিতি থেকে জানা যায় যে, মুজিব মাশাল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি নয়াদিল্লিতে থেকে নিউইয়র্ক টাইমসের ব্যুরো চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজের পরিধি হলো ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ। অর্থাৎ পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বাকি অংশের দায়িত্বে আছেন মুজিব মাশাল। নিউইয়র্ক টাইমসের এ স্ট্র্যাটেজি অবশ্য ব্যতিক্রম কিছু নয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো সাধারণত তৃতীয় বিশ্বের এ অঞ্চলগুলোতে ভারতীয় অথবা একান্তই ভারত থেকে তেমন কাউকে না পেলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশের নাগরিককে এ ধরনের পদে পদায়ন করে। এতে তাদের দুটো ফায়দা থাকে। কম বেতন দিয়ে বড়ো পদের কাজ করিয়ে নেয়া যায়। কেননা, মার্কিন কোনো নাগরিককে এমন পদে দিতে হলে এর জন্য চড়া পারিশ্রমিক গুণতে হতো। আর দ্বিতীয় ফায়দাটি হলো, ব্যুরো চিফ ভারতীয় হলে এ অঞ্চলের যাবতীয় খবরাখবরগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক অংশীদার ভারতের অনুকূলেই পরিবেশন করা যায়। বাংলাদেশ নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের এবারের প্রতিবেদনেও এই ব্যাপারটিই ঘটেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের আলোচিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, “সাড়ে সতেরো কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে রাজনৈতিক শূন্যতা থেকে ধর্মীয় রক্ষণশীলতার একটি প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে। চরমপন্থিরা প্রথমে নারীদের শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের অবস্থান জানান দিতে শুরু করে। বাংলাদেশে স্বৈরাচারী শাসকের পতনের পর যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, সে সুযোগে এক শহরের ধর্মীয় মৌলবাদীরা ঘোষণা করেছে যে যুবতী নারীরা আর ফুটবল খেলতে পারবে না। অন্য একটি শহরে, তারা পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এমন এক ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে বাধ্য করেছে, যিনি প্রকাশ্যে এক নারীকে হয়রানি করেছিলেন শুধুমাত্র ভালোভাবে ওড়না পরিধান না করার কারণে। পরবর্তীতে সে ব্যক্তিকে ফুলের মালা পরিয়ে সম্মানিতও করা হয়েছে। এর কয়েকদিন পর, নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি দল (হিজবুত তাহরীর, উলাইয়াহ বাংলাদেশ) এক বিশাল মিছিল বের করে এবং সেখানে তারা ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবি তোলে। বাংলাদেশ যখন তার গণতন্ত্র পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে এবং সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের জন্য একটি নতুন ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে চাইছে, তখন দেশটির দীর্ঘদিনের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়ের নিচে লুকিয়ে থাকা উগ্র ইসলামপন্থা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।”

নিউইয়র্ক টাইমসের ভাষ্যমতে, “রাজনৈতিক মহলের কর্মকর্তারা, যারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজে যুক্ত, তারা স্বীকার করেছেন যে নতুন সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা আর মূলনীতি হিসেবে থাকবে না। পত্রিকাটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, “বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানটি বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বেগজনক, যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক বহুমুখিতা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু এখন তারা দেখতে পাচ্ছে ধর্মীয় উগ্রবাদ বাড়ছে, যা নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। নিউইয়র্ক টাইমসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বর্তমানে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা অভিযোগ করছে যে, ইউনূস গণতান্ত্রিক সংস্কারের জটিলতায় আটকে পড়েছেন, সংঘাত এড়াতে চাইছেন এবং চরমপন্থিদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে কোনো সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন।”

প্রকৃতপক্ষে, শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভারতীয় পত্রপত্রিকা গত সাত মাস ধরে যেভাবে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে যাচ্ছে ঠিক সে অপপ্রচারগুলোই নয়াদিল্লিতে কর্মরত মুজিব মাশাল তার প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে যে কয়েকটি ঘটনার কথা বলা হয়েছে এগুলোর সবই বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং এগুলোর সাথে বাংলাদেশের প্রকৃত বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া আলোচিত ঘটনাগুলোর পরপরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইউনূস সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে সেগুলো পত্রিকাটি এড়িয়ে গেছে এবং তাৎক্ষণিক ঐ পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার জন্য ইউনূস সরকারের কোনো প্রশংসাও লেখনিতে ফুটে ওঠেনি।

বাংলাদেশের মানুষ বহু বছর আগে থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির স্থাপন করেছে এবং গত ৮ মাসে তা আরো স্পষ্ট হয়েছে। ভারতীয় প্রোপাগাণ্ডা মেশিন এবং তাদের এদেশীয় এজেন্টরা বহুবার উস্কানি দিয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরির প্রয়াস চালালেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী অত্যন্ত যোগ্যতা ও সহনশীলতার সাথে ধর্মীয় চরমপন্থার পথ এড়িয়ে গিয়েছে। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে, গত বছর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তিনটি বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব আনন্দঘন পন্থায় পালিত হয়েছে। আর এবার অনেক বছর পর বাংলাদেশের মানুষ একটি প্রাণবন্ত ও অংশগ্রহণমূলক ঈদ উদযাপন করতে পেরেছে। সারা দেশজুড়ে যেভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপিত হয়েছে, এমনটা বহুদিন এ জাতি প্রত্যক্ষ করেনি। জেলায় জেলায় ঈদের জামায়াত হয়েছে। ঈদ মিছিল হয়েছে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ঈদ র‌্যালি হয়েছে। সুলতানি আমলের ধারায় ঈদের সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াস ছিল।

যেহেতু ১ এপ্রিল প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে তাই হয়তো ঈদের বিষয়টি তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। কিন্তু গত অক্টোবরে হিন্দুদের দুর্গাপূজা, নভেম্বরে বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দান উৎসব এবং ডিসেম্বরে খ্রিস্টানদের ক্রিসমাস শান্তিপূর্ণ ও যথাযথ মর্যাদায় উদযাপিত হলেও নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে এর কোনোটাই উল্লেখ করা হয়নি। আরেকটি পরিতাপের বিষয় হলো, মুজিব মাশাল যে দেশে বসে কাজ করছেন সেখানে প্রকাশ্যে যেভাবে মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে এর ওপর তিনি কোনো প্রতিবেদন লিখেননি। অথচ ভারতেই সংখ্যালঘু মুসলিম জনগণকে ভারতের সন্তান নয় বলে গণ্য করা হয়। মুসলমানদের প্রাচীন মসজিদগুলোকে নিয়মিতভাবে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত গুঁড়িয়ে দেয়া মসজিদের সংখ্যা শতাধিক পার হয়েছে। গরুর গোশত রাখার ও খাওয়ার অভিযোগে মুসলিমদের খুন করা হচ্ছে। মুসলমানদের ‘শ্রীরাম’ বলে জয়ধ্বনি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। অতি সম্প্রতি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মাজার ধ্বংসেরও মহড়া হয়েছে। আর সর্বশেষ বিতর্কিত ওয়াক্ফ্ বিল প্রবর্তন করে মুসলিমদের ওয়াক্ফ্কৃত সম্পত্তির ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসে ওই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি বিভ্রান্তিকর ও একপক্ষীয়। ওই প্রতিবেদনটি শুধু রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতাকে সরলীকৃতভাবে তুলে ধরে না, বরং ১৮ কোটি মানুষের একটি জাতিকে অন্যায়ভাবে কলঙ্কিত করে। বাংলাদেশ গত বছর অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে, যা এই প্রতিবেদনে উপেক্ষিত হয়েছে। বরং কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তিকর ও পক্ষপাতদুষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা দেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে না।’

বাংলাদেশের বাস্তবতা নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যাবলীর একদমই বিপরীত। এর একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো ‘যুব উৎসব ২০২৫’, যেখানে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে প্রায় ২৭ লাখ মেয়ে ৩,০০০ খেলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিল। বিভিন্ন অঞ্চল, প্রান্তিক সম্প্রদায় এবং আদিবাসী যুবসমাজের ব্যাপক অংশগ্রহণ বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে নারী ও মেয়েদের স্বতঃস্ফূর্ত ও গতিশীল সম্পৃক্ততার প্রতিফলন। প্রতিবেদনে একটি ফুটবল খেলা বিরোধিতার মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হলেও অন্য আরো ২,৯৯৯টি ইভেন্টের সাফল্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে; অথচ ইভেন্টগুলোতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী অংশ নিয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘চরমপন্থি শক্তির বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোরভাবে প্রতিরোধ করেননি মর্মে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে যে দাবি করা হয়েছে তা কেবল মিথ্যাই নয়, বরং এটি নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ড. ইউনূস সারাজীবন যেভাবে কাজ করেছেন তার প্রতিও বড়ো ধরনের অসম্মানও বটে। ব্যক্তি জীবনে ড. ইউনূস দুই কন্যার পিতা। তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া নেপথ্যে অন্যতম কারণ ছিল, তার গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে বহু সংখ্যক নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে, তারা স্বনির্ভর হয়েছেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হলো, ইসলামপন্থি বলয়ের অনেকেই একটি সময়ে বিভিন্ন কারণে ইউনুস সাহেবের সমালোচনা করলেও আজকের সময়ে এসে ভারতীয় মিডিয়া কিংবা নিউইয়র্ক টাইমসও ড. ইউনূসকে কট্টরপন্থী ইসলামিক মৌলবাদী বানিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি।

নিউইয়র্ক টাইমসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ধর্মীয় সহিংসতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশের মতো একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মীয় সহিংসতার মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই এ তফাৎটি বুঝতে ভুল করেন। প্রকৃত সত্য হলো, শেখ হাসিনা দিল্লি পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের কিছু জায়গায় সংঘটিত সংঘর্ষকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যদিও এই সংঘাতগুলোর বেশিরভাগই ছিল রাজনৈতিক। আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য পুরো পরিস্থিতিকে একটি সাম্প্রদায়িক সংঘাত হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছে। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদকও আওয়ামী লীগের সে দুরভিসন্ধিমূলক প্রচারণার ফাঁদে পড়েছেন যা সত্যিই দুঃখজনক।

ড. ইউনূসের সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া বানানোর পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। ব্যাংকগুলোকে শূন্য করে ফেলেছিল। সেখানে গত ৮ মাসে ব্যাংকিং খাত গতিশীল রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে। গত সপ্তাহে ড. ইউনূসের চীন সফরের সময় চীন সরকার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশকে ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ, বিনিয়োগ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ঢাকায় চলতি সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের সম্মেলন হতে যাচ্ছে যেখানে ৫০টি দেশের ২,৩০০ জনের বেশি অংশগ্রহণকারী অংশ নেবেন। এরকম একটি সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক টাইমসের আলোচিত প্রতিবেদনটি যে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী মহলের অপপ্রচারেরই একটি অংশ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।