DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

কলাম

আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা

এক অনিবার্য বাস্তবতায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক রাজনীতির প্রেক্ষাপট পাল্টাতে শুরু করেছে। মূলত, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আধিপত্যবাদী মনোভাবের ভারতের সম্পর্কের বড় ধরনের অবনতির প্রেক্ষাপটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

Default Image - DS

সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা

এক অনিবার্য বাস্তবতায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক রাজনীতির প্রেক্ষাপট পাল্টাতে শুরু করেছে। মূলত, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আধিপত্যবাদী মনোভাবের ভারতের সম্পর্কের বড় ধরনের অবনতির প্রেক্ষাপটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রতিবেশী সকল দেশেই নিজেদের আজ্ঞাবাহী সরকার প্রতিষ্ঠায় সব সময় তৎপর থেকেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে সফল হলেও তাদের ব্যর্থতার পাল্লাও নেহাত কম নয়। সে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায় শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটান থেকে তাদের পাততাড়ি গুটিয়ে নিতে হয়েছে। এসব দেশে ভারত বিরোধীরা এখন রীতিমত ক্ষমতায়।

ব্যতিক্রম ছিল শুধুই বাংলাদেশ। ভারত বিগত প্রায় ১৬ বছর এদেশে একটি আজ্ঞাবাহী ও পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল। যারা সব সময় জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে ভারতের স্বার্থে কাজ করেছে। এমনকি দেশটিকে খুশী করতে দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিতেও কসুর করেনি। সঙ্গত কারণেই আওয়ামী-বাকশালী সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা হারায় এবং দলনেতা ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী ভারত কখনোই বাংলাদেশের জনগণের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেনি বরং তারা এদেশে একটি আজ্ঞাবাহী সরকারকে ক্ষমতায় রাখার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী-বাকশালীরা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটি তা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়নি বরং দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানাবিধ শঠতার আশ্রয় নিয়েছে। তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধুঁয়া তুলে বিপ্লবী সরকারকে সাম্প্রদায়িক ও ব্যর্থ প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশীদের জন্য ভারতীয় ভিসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশটি বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করলেও ফল হয়েছে বিপরীত। বাংলাদেশী পর্যটক না থাকায় দেশটির পশ্চিম বাংলার অর্থনীতি ইতোমধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ওপর এর তেমন কোন নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায় নি।

বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ভারতের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনে আন্তরিকতা দেখালেও দেশটির নেতিবাচক ও আধিপত্যবাদী মনোভাবের কারণে তা সম্ভব হয়নি বরং তারা নতুন সরকারকে বিব্রত করার জন্য দেশের সীমান্ত পরিস্থিতিকে অস্থির ও অশান্ত করে তুলেছে। নানা ছলছুতায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং পতিতদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। পলাতক শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনার জন্য ফেরৎ চাওয়া হলেও ভারত সরকার বাংলাদেশের সে আবেদনের ক্ষেত্রে বরাবরই উদাসীন থেকেছে। ফলে বিষয়টি দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চায় না বরং তারা পতিতদের ক্ষমতায় পুনর্বাসনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মূলত, ভারতের দাদাগিরি ও অনমনীয় মনোভাবের কারণে আমাদের নতুন সরকার অনেকটা নড়েচড়ে বসেছে। তারা নতুন মিত্রের সন্ধানে এখন বেশ তৎপর। ভারত বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক সীমিতকরণের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্র সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ নতুন তৎপরতা শুরু করেছে। সে তৎপরতার অংশ হিসাবেই ইতোমধ্যেই চীন ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এতে ইতিবাচক ফলও পাওয়া যাচ্ছে। আর ভারতীয় প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সম্প্রতি চীন সফর করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দু’দেশের সম্পর্ক গভীর করতে মনোযোগ দিচ্ছে চীন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর তার সূচনা বলে মনে করা হচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনে সর্বোচ্চ স্তরের সফরে আগ্রহী বেইজিং। তাই দু’দেশের সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিতে আগামী মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বেইজিং সফরে নিতে চায় চীন। আগামী ২৭ ও ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় বাও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দিতে ইতোমধ্যে ড. ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন। এশিয়াসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে বেসরকারি ও অলাভজনক সংস্থার এ ফোরামে বিভিন্ন দেশের নেতা, শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও শিক্ষাবিদেরা অংশ নিয়ে থাকেন। তবে সে সময়ে স্বাধীনতা দিবসে প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় নানা অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য চার্টার ফ্লাইটও পাঠাতে প্রস্তুত চীন। যা প্রধান উপদেষ্টার জন্য এক বিরল সম্মান। কূটনীতিকরা মনে করছেন, চীন যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় নেয়া সম্ভব হবে; যা আঞ্চলিক রাজনীতির প্রভাব বলয় বদলের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।

শুধু অন্তর্বর্তী সরকার নয় বরং বাংলাদেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলগুলোও ভারতীয় প্রভাব বলয়ের বাইরে গিয়ে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বেইজিং পক্ষও বেশ ইতিবাচক বলে মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। সে ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজের কর্মী, শিক্ষাবিদ এবং সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ১০ দিনের চীন সফরে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতি ঘটছে। বেইজিং কর্তৃক শুরু হওয়া এ ‘শুভেচ্ছা সফর’-এর লক্ষ্য হলো ঢাকা এবং নয়াদিল্লীর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় দু’দেশের মধ্যে (চীন-ঢাকা) সম্পর্ক জোরদার করা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একজন প্রবীণ নেতা আব্দুল মঈন খান বিবিসিকে বলেছেন, এটি মূলত একটি শুভেচ্ছা সফর। যার উদ্যোগ নিয়েছে বেইজিং। এ সফর তাৎপর্যপূর্ণ কারণ চীন এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী একটি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। যা আঞ্চলিক রাজনীতিতে প্রভাবের ভারসাম্য সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মি. খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি চীনা সরকারি কর্মকর্তা এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বর্ষীয়ান সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিনিধিদলের এ সফর এমন এক সময়ে সংঘটিত হচ্ছে যখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে। আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন এবং দিল্লী তাকে প্রত্যর্পণের জন্য ঢাকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য হাসিনার সরকার সমালোচিত হয়েছিল, এতে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন। চীন বাংলাদেশী নেতা, কর্মী এবং প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করছে, যার মধ্যে ইসলামিক দলগুলোর সদস্যরাও রয়েছেন। এ সপ্তাহের সফরটি জানুয়ারিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের মধ্যে একটি বৈঠকের পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিএনপির এটি দ্বিতীয়বারের মতো চীন সফর। যা বাংলাদেশে তার অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বেইজিংয়ের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, চীনের কূটনৈতিক প্রসার এ অঞ্চলে তার প্রভাব বিস্তারের আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত করে। প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ চীনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করে। দু’দেশের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যার মধ্যে প্রধানত চীনা রপ্তানি অন্তর্ভুক্ত। বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, গত ছয় মাস ধরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ভারতের সীমিত যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বিএনপি প্রতিবাদ জানিয়েছে, যার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দিল্লী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেছেন যে, তারা (বাংলাদেশ) আমাদের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়’ তা নির্ভর করছে বাংলাদেশের উপর। ঢাকা ও দিল্লীর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে, বাংলাদেশ চীনের আরও কাছে চলে যেতে পারে। চীনা বিশ্লেষক ঝো বো বিবিসিকে বলেছেন, ভারতের মতো সমগ্র উপমহাদেশকে দিল্লীর প্রভাব বলয়ের অধীনে বিবেচনা করা ঠিক হবে না। এ মনোভাব ভারতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মূলত, বাস্তবতা সেদিকেই মোড় নিচ্ছে।

এসব ঘটনার মাঝে বাংলাদেশ আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা সম্ভবত এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে। নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতকে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং অর্থ পাচারের অভিযোগের মুখোমুখি হতে হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রথমবারের মতো চীন সরকারের আমন্ত্রণে সাত দিনের সফরে দেশটি সফর করেছেন জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামী দলের প্রতিনিধিরা। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। এ সফরে বেশ কিছু ইসলামী দলের প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছিলেন। যা ছিলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ সফর। বাংলাদেশ সরকার এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক সফর বাংলাদেশের সাথে চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনন্য উচ্চতার কথাই স্মরণ করে দেয়। যা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারত শুধু আমাদেরই নিকট প্রতিবেশী নয় বরং দেশটির চারপাশেই রয়েছে অনেক ছোট ছোট এবং অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্র। চীন ও পাকিস্তান ছাড়া ভারতীয় সামরিক শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মত ভারতের আর কোন প্রতিবেশী নেই। কিন্তু ভারত কোন প্রতিবেশীর সাথেই সমতারভিত্তিতে ইনসাফপূর্ণ আচরণ করেনি। ফলে সকল প্রতিবেশীর সাথেই দেশটির তিক্ততা নতুন কিছু নয়। আর ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিপরীতে বাংলাদেশসহ নিকট প্রতিবেশীরা চীনমুখী নীতি গ্রহণ করতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক চীন সফর সেদিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করে। যা আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।