বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জাতীয় পার্টি এমন একটি দল, যার পরিচয় সব সময়ই দ্বিচারিতা, সুযোগসন্ধানী মনোবৃত্তি এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে। এ দলের জন্মই হয়েছিল একটি সামরিক স্বৈরাচারের হাত ধরে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে স্থবির করে দেন এবং পরে নিজের বৈধতা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনিক শক্তি, ভারতীয় সমর্থন ও নির্বাচনী নাটকের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির জন্ম দেন। ১৯৮৬ সালের তথাকথিত নির্বাচনে তিনি রাষ্ট্রশক্তির জোরে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় বসান। সেসময় রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধীদের দমন করা হয়, দুর্নীতি ও অনাচারের মাধ্যমে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা হয়। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, বিরোধী আন্দোলন দমন-এসবই এরশাদের শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল। যদিও ১৯৯০ সালের গণআন্দোলনে পতন ঘটে, কিন্তু দল হিসেবে জাতীয় পার্টি কোনো দিনই গণতান্ত্রিক নীতি ও সংস্কৃতি গ্রহণ করেনি। বরং ক্ষমতাসীন সরকারের সহযোগী এবং প্রতিবেশি দেশের স্বার্থের রক্ষক হওয়াই তাদের দলীয় চরিত্র হয়ে ওঠে।

এরশাদের পতনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হয় তাতে জাতীয় পার্টি ৩০টিরও বেশি আসন পায়। সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দল হিসেবে তারা বিরোধী দলে এবং জোটেও ভূমিকা রাখার সুযোগ পায়। ১৯৯৪ সালে মাগুরায় বিতর্কিত উপনির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে তখন লিয়াজোঁ কমিটিতে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির নেতারাও ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এরশাদের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং জাতীয় পার্টির তৎকালীন মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দেয়। পরে আরও কয়েক দফা ভাঙনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি জাপা (এরশাদ), জাপা (নাজিউর), জাপা (কাজী জাফর), জাতীয় পার্টি (মতিন) প্রভৃতি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। দলটি এরপর থেকে আর কখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনিÑএর মূল কারণ হলো তাদের মধ্যে প্রকৃত রাজনৈতিক আদর্শ বা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ছিল না।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরে এলে জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা পেলেও একসাথে মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়। এটি কলূুিষত রাজনীতির একটি নিকৃষ্ট উদাহরণ, যেখানে বিরোধী দল একইসাথে সরকারের মন্ত্রী হয়। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের কাজ হলো সরকারের ভুলত্রুটি চিহ্নিত করা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। কিন্তু জাতীয় পার্টি বরং সরকারের সাফল্যের ঢাকঢোল পেটানোকে নিজেদের দায়িত্ব বানিয়ে ফেলে। আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসন, গুম, খুন, অর্থ পাচার, ব্যাংক দখল, প্রতিপক্ষ রাজনীতিবীদদের হত্যা, নির্বিচারে গণগ্রেফতারসহ কোনো অনিয়ম নিয়েই তারা সরব হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বিমানমন্ত্রী ছিলেন। দলের আরও কয়েকজন নেতাও ঐ মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের নির্বাচন ঘিরে এ দ্বিচারিতা আরও নগ্নভাবে প্রকাশ পায়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি বারবার ঘোষণা দিয়েছিল তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। এরশাদ নিজেও নাটকীয় ভঙ্গিতে ঘোষণা দেন, তিনি ভোটে যাচ্ছেন না। এমনকি হঠাৎ করে সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হয়ে পড়েন। দেশবাসী মনে করেছিল, জাতীয় পার্টি হয়তো একতরফা নির্বাচনে অংশ নেবে না। কিন্তু ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং ঢাকায় এসে আওয়ামী লীগকে একতরফা নির্বাচন আয়োজনের সবুজ সংকেত দেন এবং জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ দেন। এর ফলেই দেখা যায়, এরশাদ হাসপাতালে বন্দি অবস্থায় থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ভোটে অংশ নেয়। এভাবে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার প্রধান সহযোগী হয়ে ওঠে। জনগণের সঙ্গে এ প্রতারণা ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

২০১৪ সালের নির্বাচন-পরবর্তী জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়। রওশন এরশাদ বিরোধী দলের নেতা হন, কিন্তু বিরোধী দলের প্রধান দায়িত্ব পালন করার বদলে তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের প্রশংসাই করেছেন বেশি। একদিকে বিরোধী দলের আসনে বসে, অন্যদিকে মš¿িসভায় অংশগ্রহণ-এমন দ্বিচারিতা কেবল জাতীয় পার্টির মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। তাদের এ ভূমিকা শুধু আওয়ামী লীগকেই টিকিয়ে রাখেনি, বরং সংসদকে প্রাণবন্ত দেখানোর নাটক তৈরি করেছে।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে বাংলাদেশের মানুষ চেনে “ভোট ডাকাতির নির্বাচন” হিসেবে। সারা দেশে নির্বাচনের আগের দিন রাতেই ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলা হয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের উদাসীনতা পুরো নির্বাচনটিকেই প্রহসণ বানিয়ে দেয়। অথচ জাতীয় পার্টি তাতেও অংশ নেয় এবং আওয়ামী লীগকে বৈধতা দেওয়ার কাজে আবারও সহযোগিতা করে। নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি আবার বিরোধী দলের আসনে বসে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা সরকারের সহযোগী হিসেবেই কাজ করে। রওশন এরশাদ প্রকাশ্যে বলেন, “আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্তুষ্ট”-এ বক্তব্যই প্রমাণ করে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক চরিত্র কতটা ভাড়াটে ও নির্লজ্জ।

২০২৪ সালের তথাকথিত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আবারও একই ভূমিকা পালন করে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সদস্য দলগুলো ছাড়া আর কোনো দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের নাটককে বৈধতা দেওয়ার জন্য নির্বাচনে যায়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়। ফলশ্রুতিতে একটি আমি ডামির নির্বাচন হয়। জাতীয় পার্টি শুরু থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়া নিয়ে নানা কথা বললেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যায়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ভারত সফরেও যান। ফিরে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে দেন, “ভারত সফরকালে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের অনেকের সাথেই তার কথা হয়েছে কিন্তু তিনি এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবেন না। এরপরই জাতীয় পার্টির ভারত কানেকশন স্পষ্ট হয়ে যায়। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয় যদিও নির্বাচনের পর মনোনয়নপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই পার্টির হাই কমান্ডের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ আনেন। সে থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত গেল ১৮ মাসে জাতীয় পার্টি আরো কয়েকবার ভাঙ্গন, বহিস্কার ও পাল্টা বহিস্কারের মধ্য দিয়েই অগ্রসর হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দলটি বরাবরই জনগণের প্রতিনিধি হয়ে নয়, বরং ক্ষমতার দোসর ও ভারতের খুশি অর্জনের মাধ্যম হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়। ফলে একের পর এক প্রহসণের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি হয়ে ওঠে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সহযোগী।

জাতীয় পার্টিতে নেতৃত্ব নিয়েও দ্বন্দ্ব আছে প্রকট। এরশাদের জীবদ্দশাতেই জাতীয় পার্টিতে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠে। একদিকে ছিলেন রওশন এরশাদ, অন্যদিকে জিএম কাদের। এরশাদের মৃত্যুর পর এ দ্বন্দ্ব আরও তীব্র আকার ধারণ করে। কে দলের চেয়ারম্যান হবেন, কে বিরোধী দলের নেতৃত্ব দেবেন-এসব নির্ধারিত হয়েছে আওয়ামী লীগের ইচ্ছা ও ভারতের ইঙ্গিতের ওপর ভিত্তি করে। কখনো রওশনকে ভারতের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে করে তাকে সামনে আনা হয়েছে, আবার কখনো জিএম কাদেরকে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে রক্ষা করা এবং জাতীয় পার্টিকে হাতের খেলনা হিসেবে ব্যবহার করা। জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা নিয়মিত দিল্লি সফর করেছেন, ভারতের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরশাদ থেকে শুরু করে জিএম কাদেরÑসবাই দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করাকে দল পরিচালনার মূল কৌশল বানিয়ে ফেলেছেন। এতে স্পষ্ট হয়েছে জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত ঢাকায় নয়, বরং দিল্লিতে নেওয়া হয়।

সর্বশেষ জাতীয় রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি আরো একবার র্ভিলেনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় গত শুক্রবার। রাজধানীর কাকরাইলে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টির দাবি, মিছিল নিয়ে এসে জাপার ওপর হামলা করেছেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। আর গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের দাবি, তাঁরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় জাপার লোকজনই তাঁদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। মূলত আওয়ামী লীগের দোসরদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ সেদিন বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দেয়। নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে দলটির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নাইটেঙ্গেল মোড়া যাওয়ার পথে জাতীয় পার্টির কার্যালয় পার হওয়ার সময় পেছন থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে ৩০০-৪০০ লোক ছিল। গণঅধিকার পরিষদ বলছে, জাতীয় পার্টি ছাড়াও সেখানে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা ছিল। এই ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদের ১০-১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের অনেককে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

এরপর সেদিনই রাত সোয়া ৮টার দিকে দ্বিতীয় দফায় জাপা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন গণ অধিকার পরিষদের নেতারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্বিতীয় দফায় জাপা নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। সেনাবাহিনী এসে জাপা নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের ঘটনাস্থল ছাড়তে ১০ মিনিট সময় দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ না করায় সেখানে ব্যাপক লাঠিচার্জ করা হয়। এতে সংগঠনটির আহ্বায়ক নুরুল হক নুর গুরুতর আহত হলে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদসহ কিছু রাজনৈতিক দলের দাবি, ফ্যাসিবাদী শাসনকে বৈধতা দেয়ার ক্ষেত্রে জাপা সহযোগীর ভূমিকায় ছিল। তাই আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাপারও কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ শাসন করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী দলের দমন-পীড়ন, ভোটারবিহীন নির্বাচন, দুর্নীতি, ভারতীয় আধিপত্যÑসব কিছুরই সাক্ষী থেকেছে বাংলাদেশ। অথচ জাতীয় পার্টি কখনো কার্যকরভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। একদিকে বিরোধী দলের মর্যাদা ভোগ করেছে, অন্যদিকে ক্ষমতার ভাগীদার হয়েছে। ফলে জনগণের কাছে জাতীয় পার্টি হয়ে উঠেছে প্রতারণার প্রতীক, যাদের কাছে আদর্শ নয়, কেবল ক্ষমতাই সব।

জাতীয় পার্টির ইতিহাস এক কথায় দ্বিচারিতা, ভাঙন ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণার ইতিহাস। জন্ম থেকেই তারা জনগণের স্বার্থের পরিবর্তে শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসভায় যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনে অংশ নেওয়াÑসবকিছুই প্রমাণ করে জাতীয় পার্টি প্রকৃত বিরোধী দল নয়, বরং আওয়ামী লীগের বি-টিম। এ কারণে জুলাই বিপ্লবের পর জাতীয় পার্টিকেও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কার্যক্রমে কিংবা আলোচনায় বা সংলাপে দাওয়াত দেয়া হয়নি। জুলাই যোদ্ধাদের জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থানও ছিল। তবে বিশ্লেষকদের ধারনা, আওয়ামী লীগ আবারও নতুন করে জাতীয় পার্টিকে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। জুলাই যোদ্ধাদের দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করার কারণে আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে আর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। তারা নানা ধরনের কৌশলে বিশেষ করে পুরনো মিত্রদের ওপর ভর করে রাজনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টিকে তারা ফিরে আসার নতুন বাহণ হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে বলেই অনেকে মনে করছেন।