বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গত এক বছরে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠছে বলে মনে হয়। প্রায় অর্ধশতাব্দির ভারতনির্ভর ও ভারত নিয়ন্ত্রিত কূটনীতি থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার পলিসির ক্ষেত্রে মোড় পরিবর্তনের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে সরকারি ও বেসরকারিভাবে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিবিড় হতে শুরু করেছে। চীন সরকার ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে ইতোমধ্যে মহাসচিব জনাব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল চীন সফর করে এসেছেন। আবার গত ১১ জুলাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির আট সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল চীন সরকার ও দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে চীন সফরে গেছেন এবং তারা ১৫ জুলাই দেশে ফিরবেন। ইসলাম ও কমিউনিজমের দুটি পরস্পর বিরোধী আদর্শ। কমিউনিজমকে খোদাদ্রোহী ব্যবস্থা হিসেবে অনেকেই মনে করেন। পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলামী আন্দোলন তথা ইকামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত একটি দল। এ অবস্থায় কমিউনিস্ট দেশের সাথে তাদের সখ্যতা অথবা বন্ধুত্বকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন। বিষয়টির নির্মোহ বিশ্লেষণ প্রয়োজন।

চীন বিশাল একটি দেশ এবং এর সভ্যতাও প্রাচীন। দেশটির আয়তন প্রায় ৯৬ লাখ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১৪১ কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৭২ কোটি ৯০ লাখ বাকি ৬৮ কোটি ৯০ লাখ মহিলা। ১৯৪৯ সালে চীনে মাও সেতুং-এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট বিপ্লব ঘটে। এর আগে দেশটি রাজা-বাদশাহদের শাসনাধীন ছিল। ১৯১২ সালে ছরহম Qing Dynasty (কিং রাজবংশ) পতনের পর ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত চিয়াং কাইসেকের নেতৃত্বাধীন কুওমিনটাং জাতীয়তাবাদী দল চীন শাসন করেন। কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় চিয়াংকাইসেক তাইওয়ান চলে যান। তাইওয়ানের আয়তন প্রায় ৩৪ হাজার বর্গকিলোমিটার; লোকসংখ্যা ২ কোটি ৩২ লাখ। ১৯৭১ পর্যন্ত তাইওয়ান চীন প্রজাতন্ত্রের নামে জাতিসংঘনিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ছিল। এ বছরই কমিউনিস্ট চীন অন্যতম বৃহৎ শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং তাইওয়ানের পরিবর্তে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও বৈধ সদস্যপদে আসীন হয়। তাইওয়ান চীনের একটি অংশ, আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বা তার আগে পাকিস্তান তাকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং এখনো দেয় না।

আমাদের পাসপোর্টে তার কার্যকারিতা সম্পর্কে লেখা থাকতো “ All Conutres of the World except Taiwan and Israil ” চীন ১৯৭১ সালে ভারতীয় নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন করতো না। তথাপিও স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর বাংলাদেশকে বিদেশী সেনামুক্ত হবার ব্যাপারে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার যখন জাতিসংঘের সদস্য পদের জন্য আবেদন করেন তখন চীন এ সদস্য পদের তীব্র বিরোধিতা করেন। তার যুক্তি ছিল, যে দেশের ভূখণ্ডে বিদেশী সেনারা অবস্থান করে সে দেশ স্বাধীন দেশের মর্যাদা নিয়ে জাতিসংঘের সদস্য হতে পারে না। এ অবস্থায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় বাহিনী প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের ১৫ মার্চ এ প্রত্যাহার সম্পন্ন করা হয় এবং ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ পায়।

চীনারা অত্যন্ত পরিশ্রমী জাতি এবং বুদ্ধিমান। তাদের কাছে অনেক কিছুই শিক্ষণীয় আছে। একটি প্রবাদ আছে, “হেকমতে চীন, হুজুতে বাঙ্গাল।” অর্থাৎ হেকমতে তথা জ্ঞান-বিজ্ঞানে চীনারা অগ্রগামী, আবেগপ্রসূত বিশৃঙ্খলায় বাঙ্গালীরা। অবশ্য আল্লামা ইকবাল মুসলিম জাতি হিসেবে আমাদের সম্পর্কে ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “হিকমত হুই হামারে উল্লু বন রহে হাম; জিয়াফত হুই হামারে ভুখছে মররাহি হাম। বিদ্যা শিক্ষার জন্য প্রয়োজনে রাসূল (সা.) চীন যাবার যে নির্দেশনা দিয়েছেন সে চীনের তাৎপর্য যেমনি দূরদূরান্ত এলাকাকে বোঝানো হয়েছে তেমনি তৎকালীন সময়ের প্রাচীন সভ্যতা ও বিদ্যার পাদপিঠ চীনকেও বুঝানো হয়েছে। এখন চীনের আদর্শ প্রসঙ্গে আসি। আধুনিক চীন একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্র। লেনিন ও কার্ল মার্কসের আদর্শে উদ্বুদ্ধ একটি নাস্তিক ও খোদাদ্রোহী আদর্শের উপর ভিত্তি করে এর উৎপত্তি। মূলত, পুঁজিবাদী শোষণের প্রতিবাদ হিসেবে এর উত্থান। কার্ল মার্কসের প্রধান কনসেপ্ট ছিল পুঁজিবাদের সমালোচনা ও উচ্ছেদ, ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, শ্রেণি সংগ্রাম এবং একটি শ্রেণিহীন, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার ধারণা। তিনি মনে করতেন যে পুঁজিবাদী সমাজে সর্বহারা শ্রমিক শ্রেণি সব বুর্জোয়া শ্রেণি কর্তৃক শোষিত হয়। তার তত্ত্ব অনুযায়ী সমাজের মূল চালিকাশক্তি হলো বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব বা সংগ্রাম। তার বর্ণিত দুটি প্রধান শ্রেণি হচ্ছে বুর্জোয়া বা ধনিক শ্রেণি এবং সর্বহারা বা শ্রমিক শ্রেণি। এদের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বার্থের সংঘাতই শ্রেণি সংগ্রাম উসকে দেয়।

কার্ল মার্কসও দাম্ভিক মতবাদের আরেক প্রবক্তা এঙ্গেলস সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শ্রেণি সংগ্রাম যে বৈপ্লবিক ভূমিকা গ্রহণ করে সমাজ বিকাশের ধারার সাথে তার সম্পর্কের অপরিহার্যতার কথা তুলে ধরেছেন। ধনীদের বৈভব লুণ্ঠন ও সর্বহারার মধ্যে তা বিতরণ হচ্ছে তাদের মতবাদের মূল কথা। তাদের দৃষ্টিতে ধর্ম এবং আল্লাহর উপর আস্থা হচ্ছে আফিমের মতো। অন্যতম কমিউনিস্ট পণ্ডিত লেনিনের মতে, “ An ideal Communist has no other objective but to wage a relentten war against God, the areh eaemy of men . অর্থাৎ মানুষের প্রধানতম শত্রু খোদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া একজন আদর্শ কমিউনিস্টের আর কোন আদর্শ থাকতে পারে না।

ষাটের দশকে কার্লমাক্স ও লেনিন হেগেল-এঞ্জেলের আদর্শ মাওসেতুং হয়ে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ল্যাটিন আমেরিকা ও পূর্ব ইউরোপের অনেকগুলো দেশ কমিউনিজম/ সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেই শুধু সন্তুষ্ট থাকেনি, উন্নয়নশীল ও উন্নয়নকামী দেশগুলোতেও এই আদর্শ রফতানি করে। জার্মানী দু’ভাগ হয়ে যায়। পূর্ব জার্মানী ও পশ্চিম জার্মানী। মাঝখানে বিশাল দেয়াল উঠে- বার্লিন ওয়াল। আমাদের দেশেও কমিউনিজম ও সমাজতন্ত্রের দু’টি ভার্সানের ঢেউ লাগে। একটি চীনপন্থী বা মাওবাদী আরেকটি রুশপন্থী বা লেনিনপন্থী। পঞ্চাশের দশকের শেষ ভাগ থেকে আমাদের দেশের বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষক-সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এ বামপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ে। ওয়ালি বা মুজাফফরপন্থী ন্যাশানল আওয়ামী পার্টি ও ভাসানীপন্থী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও তাদের ছাত্র সংগঠন যথাক্রমে মতিয়া চৌধুরী ও মেনন খানের নেতৃত্বাধীন ছাত্র ইউনিয়ন তাদের প্রতিনিধিত্ব করেছে। তৎকালীন সময়ে ইসলামী ছাত্র সংগঠন ও জামায়াতকে এরা এদেশে প্রধান শত্রু মনে করতো। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল নেতা আবদুল মালেককে এদের পরিকল্পনায়ই নিহত হতে আমরা দেখেছি। পশ্চিম বাংলার নক্সালী আন্দোলন, বাংলাদেশে মাওবাদী সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা চারু মজুমদার, তোহা-মতিনের গোপন দলসমূহের ধ্বংসাত্মক তৎপরতা মানুষ এখনো ভুলেনি। ১৯১৭ সালে জ¦ারের শাসনের অবসান ঘটিয়ে রুশ বিপ্লব হয়। এ বিপ্লবের দু’টি অংশ একটি মেনশেভিক আরেকটি বলশেভিক। এ বিপ্লবে ত্রিশ লক্ষেরও বেশি লোককে হত্যা করা হয়। ১৯৪৯ সালে চীন দেশে মাওসেতুং এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট বিপ্লব হয়। দু’টি বিপ্লবই ছিল একদলীয় তথা সমগ্রতাবাদী প্রকৃতির। এখানে কোথাও ভিন্ন মতাবলম্বীদের স্থান ছিল না। দু’টি দেশই সম্পত্তি ও উৎপাদনের উপায় উপকরণগুলোর উপর থেকে ব্যক্তি মালিকানা উৎখাত, ধর্মের উচ্ছেদ এবং ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তারা মসিজিদ, মন্দির, গীর্জা প্রভৃতি বন্ধ করে দিয়েছিল। বিবাহ প্রথাও ছিল নিষিদ্ধ। চীনে এক সন্তান পদ্ধতি চালু করা হয়। বিয়ে করতে হলে সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন হতো। যেসব মা এক সন্তানের বেশি সন্তান ধারণ করতেন এবং ধরা পড়তেন তাদের বাধ্যতামূলক এবরশান করতে হতো, তা পেটের সন্তানের বয়স যত বেশিই হোক না কেন। যুক্তরাজ্যের লাফবুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দুই চীনা সহপাঠি সিমেং টাং এবং লিউ শাও টিম-এর কাছ থেকে এই তথ্যগুলো আমার সংগ্রহ করা। এছাড়াও ১৯৯৩ সালে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ফাও) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার আঞ্চলিক দফতরের উদ্যোগে চীনে আয়োজিত ১৫ দিনব্যাপী একটি শিক্ষা সফরে আমি অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছি এবং তাদের সমাজ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রত্যক্ষ করেছি।

বলাবাহুল্য, ইতোমধ্যে ১৯৯১ সালের ২৬ শে ডিসেম্বর সোভিয়েত রাশিয়ার পতন ঘটে, তাদের ৭০ বছরের সমাজতান্ত্রিক ও কমিউনিস্টিক পরীক্ষার অবসান ঘটে এবং ইউনিয়নভুক্ত রাজ্যগুলো একে একে স্বাধীনতা লাভ করে। এটা ছিল তাদের অভ্যন্তরীণ স্থবিরতা, অর্থনৈতিক সংকট, চেরনোবিলের পারমাণবিক বিপর্যয়, আফগান যুদ্ধে পরাজয় এবং অদূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফসল। এ পতন তাদের মধ্যে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়। তারা ভুলগুলো শুধরিয়ে ব্যক্তি মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে বার্টার সিস্টেমের পরিবর্তে সামগ্রিক বাজার অর্থনীতি চালু করার পাশাপাশি ধর্ম চর্চা, ধর্মীয় শিক্ষা প্রভৃতির উপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে। বলাবহুল্য, তৎকালীন পাকিস্তান সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর সাথে বার্টার পদ্ধতিতে বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্য Trading Corporation Pakistan (Tcp) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা এখন টিসিবি। চীনও ডেং-এর নেতৃত্বে তাদের সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার সাধন করে। তারা মাওবাদ থেকে ফিরে এসে একটি হাইব্রিড অর্থনীতির মহাসড়কে এনে দরিদ্র চীনকে শুধু পারমাণবিক শক্তি না একটি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে। চীনের উৎপাদিত যন্ত্রপাতি, শিল্প ও কৃষি পণ্য দামে সস্তা ও গুণাগুণে আকর্ষণীয় Large Scal Produting-এর মাধ্যমে তারা এ সাফল্য অর্জন করেছে। আমাদের দেশের সেচখাতে ব্যবহৃত বেশির ভাগ শক্তিচালিত পাম্প অগভীর ও গভীর নলকূপের ইঞ্জিন চীনের তৈরি। তাদের প্রযুক্তিও সহজ, সস্তা এবং হস্তান্তরযোগ্য। কম্যুন প্রথা বিলোপ করে Elementary Cooperative Society সমূহ সক্রিয় করার মাধ্যমে তারা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার করেছে। তাদের দৃষ্টিতে ধর্ম এখন আফিম নয়। নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার তারা ফিরিয়ে দিয়েছে। চীন সফরকালে আমি বেইজিং-এর কেন্দ্রস্থলে হোটেল নভোটল এবং কূটনৈতিক এলাকা সন্নিহিত অঞ্চলে বিশাল ইসলামী কমপ্লেক্স ও মারকাজে তেজারতে ইসলামী ব্যাংকের হেড কোয়ার্টারও সফর করেছি। ২০২০-২১ সালের কোভিডের দুর্যোগের সময় চীনা প্রেসিডেন্টকে মুসলমানদের মসজিদসমূহে আল্লাহর রহমত কামনায় জনগণকে উজ্জীবিত করতে ইমামদের অনুরোধ করতে দেখা গেছে। ঐ সময়ে হাত ধোয়া প্রথা চালু করতে তিনি মুসলমানদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় অজু করার পদ্ধতি দেখে অভিভূত হয়েছেন। অভ্যন্তরীণভাবে চীনারা ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের এক দশকে যারা ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও অবাস্তবনীতি অনুসরণ করে দেশের ক্ষতি করেছেন তাদের চিহ্নিত করে ‘চার কুচক্রী’ বলে আখ্যায়িত করে শাস্তি প্রদান করেছেন। এ কুচক্রীর মধ্যে মাওসেতুং এর চতুর্থ স্ত্রী জিয়ানা কিনা (ziana Qina) ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। দেশটিতে এখন ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে, পারিবারিক ব্যবস্থা বিশেষ করে বিয়ে সাদী প্রতিস্থাপিত হয়েছে। চীনারা নিজেদের ভুল নিজেরা স্বীকার ও সংশোধন করতে জানে। তারা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের বন্ধু হতে পারে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাসহ আন্তর্জাতিক নদীসমূহের ন্যায্য হিসসা প্রাপ্তী এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অর্থনৈতিক লেনদেনে আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধুর ভূমিকা পালন করতে পারে। আমার বিশ্বাস জামায়াত প্রতিনিধিদের চীন সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জোরদার করতে সহায়তা করবে।