বিশ্বজুড়ে টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে। গাজায় রমজান মাসেও চলছে নির্বিচারে নারী ও শিশুর হত্যা। সুদানে চলছে অসন্তোষ, উত্তেজনা আর টালমাটাল রাজনৈতিক বাস্তবতা। উত্তেজনা চলছে তিউনিশিয়াতেও। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ভাঙাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার আভাস মিলছে। এরকম একটি সময়ে বিশ্বমোড়ল তথা পশ্চিমা নেতৃত্বের ভূমিকা হওয়া উচিত ছিল এমন যাতে আগুনে পানি ঢেলে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করা যায়। কিন্তু তারা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করছে। উত্তেজনা প্রশমিত করার পরিবর্তে আরো বেশি বৃদ্ধি করছে। আর এ কাজগুলো তারা করছে নির্বিচারে জালেমদের সমর্থন দিয়ে, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে এবং সর্বোপরি যে কোনো বিষয়কে নিজেদের মতো করে একপেশে ব্যাখ্যা দেয়ার মধ্য দিয়ে।
দুর্বল দেশগুলোর মানুষগুলোর চিন্তা ও বিশ্বাসকে অগ্রাহ্য করে পরাশক্তিগুলো নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের নীল নকশা সাজিয়েছে। মিডিয়াগুলোকে নিজেদের বয়াণ প্রচারেই সিদ্ধহস্ত করে রেখেছে পশ্চিমারা। তাদের মতো করেই কাউকে হিরো আর কাউকে ভিলেন বানিয়ে রাখা হচ্ছে। স্বার্থ ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার খায়েশে দ্বিপাক্ষিক সমস্যাকে আঞ্চলিক সমস্যায় রূপ দিয়েছে। ঔপনিবেশিকতার পতন ঘটলেও নানা দেশে পাপেট সরকার জিইয়ে রেখে পশ্চিমারা নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে। আবার মধ্যপ্রাচ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে পশ্চিমারা সরাসরি না থাকতে পারলেও তাদের প্রক্সি হিসেবে ইসরাইলকে টিকিয়ে রেখেছে এবং জায়নবাদী এ দেশটিকে সর্বতোভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে।
পশ্চিমাদের এমন একপেশে ও একচোখা নীতির অসহায় ভিকটিম হলো দুর্বল রাষ্ট্রগুলো; আরও সুনির্দিষ্টভাবে বললে মুসলিম দেশগুলো। ফিলিস্তিন হোক, কিংবা সুদান অথবা আমাদের জন্মভূমি প্রিয় বাংলাদেশ-সবার ক্ষেত্রেই এ নির্মম সত্যটুকু প্রযোজ্য। অতিসম্প্রতি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ‘ইসলামি খেলাফত’ নিয়ে মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যও এরই আরেকটি দৃষ্টান্ত। তিন দিনের ভারত সফরে এসে ভারতের সংবাদভিত্তিক চ্যানেল এনডিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশকে নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তুলসী বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে খুব লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, ক্যাথলিক ও অন্যদের ওপর যে ধর্মীয় নির্যাতন, হত্যা ও অত্যাচার চালানো হচ্ছে সেটা আমেরিকার সরকার তথা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের জন্য খুব বড় একটা উদ্বেগের জায়গা।” সে রাতেই এ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ওই বিবৃতিতে তুলসীর এ মন্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ এবং ‘বাংলাদেশের সুনাম ও ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসাথে অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করেছে, “গ্যাবার্ডের মন্তব্য সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি” বরং “পুরো জাতিকে মোটা দাগে ও অযৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে’”।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের উত্থানে মিথ গ্যাবার্ডের মন্তব্য এ দেশের অতীত রেকর্ডকে অনুসরণ করে না। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে যেভাবে জঙ্গি কর্মকা-, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান তৈরি করেছে, এ সংক্রান্ত তথ্যউপাত্তের সাথে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্য যে মেলে না। তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশের সমাজ ও মানুষ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখেন না, এ সাক্ষাৎকারে সেটাই প্রতিভাত হয়েছে।
পশ্চিমাদের একটি বড়ো বিভ্রান্তি হলো, তারা কিছু কিছু দেশকে বাড়তি স্ট্যাটাস দিয়ে রেখেছে। এ দেশগুলো পরষ্পর একই সুতোয় গাঁথা এবং এ দেশগুলোর জন্য অনেক অন্যায়ও বৈধ হয়ে যায়। এরকমই তিনটি দেশের যন্ত্রণা এ মুহূর্তে পুরো বিশ্ব সহ্য করছে। এ দেশ তিনটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও ভারত। এ রাষ্ট্রগুলো নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাত দিয়ে যে কোনো অন্যায় করতে পারে, স্বাধীন কোনো দেশে আগ্রাসন চালাতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি মনে করে, পৃথিবীর কোনো স্থানে বা দেশে তার নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে মার্কিন নীতি নির্ধারকেরা সেখানে অসামরিক ও সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু এ একই কাজ অন্য কোনো দেশ করলে তার বিরুদ্ধে আবার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র করলে খোদ জাতিসংঘও যেন হাত-পা বাধা অসাড় কর্তৃপক্ষে পরিণত হয়ে যায়।
একই অবস্থা চলছে ইসরাইলকে কেন্দ্র করেই। ইসরাইলের ওপর আক্রমন করতে পারে কিংবা ইসরাইলের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে- এমন একটি যুক্তিতে ইসরাইল পুরো গাজা উপত্যাকাকে মৃত্যুপরীতে পরিণত করেছে। নির্বিচারে শিশু ও নারীদের হত্যা করছে। খাবারহীন ও বিদ্যুতহীনভাবে সেখানকার মানুষকে হত্যা করছে। আর হোয়াইট হাউজ আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে যে, ইসরাইল সঠিক কাজ করছে এবং আমেরিকার সাথে আলাপ করেই ইসরাইল এসব হামলা ও অভিযান পরিচালনা করছে। কল্পনা করা যায়, কী ভীষণ পক্ষপাতদুষ্টু আচরণ করে যাচ্ছে আমেরিকা!
শুধু তাই নয়; ইসরাইলী ও ফিলিস্তিনীদের মধ্যকার চলমান সংঘাতে বন্দীদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়ায় বড়ো ধরনের প্রতারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গাজায় জিম্মি ইসরাইলীদের বিষয়ে বৈশ্বিক গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে প্রচার করে, তাদের ব্যাপারে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়, এবং তাদের মুক্তির জন্য জরুরি ভিত্তিতে আবেদন জানানো হয়। অন্যদিকে, হাজার হাজার ফিলিস্তিনী বন্দী- যাদের মধ্যে শিশু, সাংবাদিক এবং চিকিৎসা কর্মীরাও রয়েছেন; তারা কোনো ধরনের অভিযোগ গঠনের আগেই আটক হন, নির্যাতনের শিকার হন, এমনকি ইসরাইলী হেফাজতে নিহতও হন, অথচ পশ্চিমা বিশ্ব এসব ব্যাপারে নির্বিকার থাকে। এমন স্পষ্ট দ্বৈত নীতি কোনো দুর্ঘটনা নয়; বরং একটি পরিকল্পিত পক্ষপাত, যা ইসরাইলী আধিপত্যকে আরও শক্তিশালী করে এবং ফিলিস্তিনীদের দুর্ভোগ ও হয়রানির পথ আরো প্রশস্ত করে দেয়।
ইসরাইলী জিম্মিদের ব্যাপারে পশ্চিমাদের ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া একদমই উল্টো। ইসরাইলী কোনো সৈন্য বন্দী হওয়া মাত্রই পশ্চিমারা তার মুক্তির দাবি তোলে। কিন্তু যখন এক ফিলিস্তিনী বন্দী ঠাণ্ডা, অন্ধকার সেলে ৮৬ দিন অনাহারে থেকে মারা যায়, তখন বিশ্ব দেখেও না দেখার অভিনয় করে। ইসরাইলী ও ফিলিস্তিনী বন্দীদের মুক্তির রাজনীতিতেও বেশ বড়ো ধরনের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। নানা সময়ই ইসরাইলী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা হয়। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনী বন্দীদের শুধুমাত্র কঠোর রাজনৈতিক ছাড়ের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়। আর এ মুক্তিও দেয়া হয় ব্যাপক পরিসরের গণহত্যা, সামরিক আগ্রাসন ও দমন-পীড়নের পর। প্রতিটি বন্দী বিনিময়ের আগে চলে গণগ্রেফতার, বোমা হামলা এবং ফিলিস্তিনী সম্প্রদায়ের ওপর নির্মম দমন অভিযান। পশ্চিমা বিশ্ব কখনোই ইসরাইলের কাছে অবৈধভাবে আটক ফিলিস্তিনীদের মুক্তির দাবি জানায় না, যদিও এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ফিলিস্তিনী বন্দীদের মুক্তি কোনো কূটনৈতিক বিষয় নয় বরং এটি এমন এক মুক্তিপণ, যা রক্ত দিয়ে পরিশোধ করতে হয়। এই বৈষম্যকে আরও জোরদার করে তুলছে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর একপেশে বর্ণনা। ইসরাইলী বন্দীদের বলা হয় “জিম্মি” বা “অপহৃত সৈনিক। এমনটা বলা হয় যাতে এই জিম্মিদে প্রতি যা সহানুভূতি তৈরি হয়। পক্ষান্তরে ফিলিস্তিনী বন্দীদেরকে এমনকী যদি তারা শিশু বা মানবিক সহায়তা কর্মীও হয় তারপরও তাদের “সন্ত্রাসী” বা “নিরাপত্তা হুমকি” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এ ভাষার অপব্যবহার ইচ্ছাকৃত। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ফিলিস্তিনীদের প্রতিরোধের যে কোনো প্রচেষ্টাকে অপরাধ বা সন্ত্রাস হিসেবে চিত্রায়িত করা যায় এবং রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে তাদের স্বীকৃতি কেড়ে নেওয়া যায়। এ অপপ্রচারের টার্গেটও পরিস্কার। এর লক্ষ্যগুলো ফিলিস্তিনীদেরকে সবসময়ই অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা, দখলদার অপশক্তির ভিকটিম হিসেবে নয়। ইসরাইলী বন্দীরা পশ্চিমা গণমাধ্যমে সর্বদা মনোযোগের কেন্দ্রে থাকে। মিডিয়াগুলো নিয়মিতভাবে জিম্মিদের পরিবারগুলোর সাক্ষাৎকার নেয়, বিশ্ব নেতারাও তাদের সাথে দেখা করেন। অথচ ফিলিস্তিনী বন্দীরা আরও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হলেও তাদের নাম পর্যন্ত উল্লেখ করা হয় না। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত একাধিকবার ইসরাইলের জিম্মিদের পরিবারদের সাথে দেখা করেছেন কিন্তু একটি বারও ফিলিস্তিনী ভিকটিমদের সাথে কথা বলার এমনকী গাজার বাস্তচ্যুত মানুষগুলোর সাথে কথা বলার প্রয়োজনবোধ করেননি। এমন একপেশে মনোভাব কেবল পক্ষপাতদুষ্ট আচরণই নয় বরং ফিলিস্তিনী অস্তিত্বের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধেরই অংশ।
তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশের সাথেও ঠিক একই রকমের বৈষম্যমূলক আচরণ করলেন। তিনি ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষাদগোর করেছেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ এনেছেন। অথচ এ ভারতেই সংখ্যালঘু মুসলিম জনগণকে ভারতের সন্তান নয় বলে গণ্য করা হয়। মুসলমানদের শতাধিক প্রাচীন মসজিদগুলো সেখানে নিয়মিতভাবে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গরুর গোশত রাখার অভিযোগে মুসলিমদের খুন করা হচ্ছে। মুসলমানদের বাধ্য করা হচ্ছে ‘শ্রীরাম’ বলে জয়ধ্বনি করতে। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মাজার ধ্বংসেরও মহড়া হয়েছে সম্প্রতি। গত সপ্তাহে, মহারাষ্ট্রের এক বিজেপি সংসদ সদস্য মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর খননের দাবি করেন। প্রায় ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, যারা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা ভিএইচপি নামক উগ্র ডানপন্থী সংগঠনের সদস্য, তারা গত সপ্তাহে নাগপুরে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। তারা আওরঙ্গজেবের কবর ভেঙে ফেলার দাবি তুলেছে কারণ তাদের মতে, তিনি হিন্দুদের প্রতি বৈষম্য করতেন এবং তার শাসনামলে অর্থাৎ ১৬৫৮ থেকে ১৭০৭ পর্যন্ত সময়ে হিন্দু উপাসনালয়ে ব্যাপক আক্রমন চালানো হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের মধ্যে, বিশেষত মুসলিম দোকানদাররা পুলিশকে প্রতিবাদ থামানোর অনুরোধ করেন, বিশেষত রমজান মাসে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও দাবি জানান। এসময় তথ্য ছড়িয়ে যায় যে, পাওয়া পুতুলটি যে সবুজ কাপড়ে মোড়ানো ছিল, তাতে কুরআনের আয়াত লেখা ছিল, যা মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। ওই রাতে, মুসলিমরা ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পরপরই ভিএইচপি সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা রুজু করতে দাবি জানিয়ে একটি পাল্টা প্রতিবাদে অংশ নেন। এর পরপরই পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে এবং ক্রুদ্ধ জনতা পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এসব ঘটনার কোনোটাই তুলসী গ্যাবার্ডের বিবেচনায় এলো না।
পশ্চিমারা যদি এমন নির্লজ্জভাবেই জুলুমবাজদের পক্ষ নেয়া অব্যাহত রাখে এবং মজলুমদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের ওপর নির্মমতা চালু রাখে, তাহলে সাময়িকভাবে হয়তো তাদের কিছুটা অর্জন হবে। তবে এভাবে বিশ্বে শান্তি আসবে না। বরং পশ্চিমাদের একচোখা নীতির বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে ক্ষোভ ও অসন্তোষের জন্ম হবে। প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পরাশক্তিগুলোর যে শাসন কাঠামো ছিল বর্তমানে তা নেই। নিকট অতীতে ভাবাও যেত না যে, ঔপনিবেশিকতার পতন ঘটবে; কিন্তু ঘটে গেছে। বর্তমান বিশ্বের যে আমেরিকা নির্ভর গ্লোবাল অর্ডার, একটি সময়ে এরও হয়তো পতন ঘটে যাবে। একপেশে আচরণ, অপপ্রচার ও জালেমদের পক্ষ নিয়ে পশ্চিমা সভ্যতার শেষরক্ষা হবে না। বরং প্রথমে তারা মানুষের মন থেকে মুছে যাবে; যা এরই মধ্যে ঘটে গেছে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমাদের বিপর্যয়ের পালা। এমনটা হয়তো খুব শীঘ্রই হবে না। কিন্তু পশ্চিমা মোড়লেরা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পেয়ে যে ভয়াবহ অন্যায় করে যাচ্ছেন, তার খেসারত তাদেরকে দিতে হবে এবং প্রবলভাবেই দিতে হবে।