২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনে অতিষ্ঠ মানুষ আওয়ামী লীগ এবং এর নেতৃবৃন্দকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উৎখাত করে। দীর্ঘ ১৬ বছরের শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের এমন ফ্যাসিস্ট ও বর্বরতম শাসন পৃথিবীর সভ্যসমাজে এক বিরল ঘটনা। গুম, মানুষ হত্যা, বিনা বিচারে আটক, জঙ্গী নাটক, সীমাহীন লুটপাট, লাগামহীন দলীয়করণ, সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস, শিক্ষাব্যবস্থাকে কবরদান, ধর্ম ও নৈতিক মূল্যবোধের মূলোৎপাটন, জাতির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ওপর হিন্দুত্ববাদ চাপিয়ে দেওয়া, উন্নয়নের বুলি আওড়িয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা, দেশকে প্রতিবেশী ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণতকরণসহ স্বৈরাচার হাসিনার হাজারও অপকর্মের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্টে একটি ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান সংঘটিত করে। অভ্যুত্থানের আগে ও পরের অনেক ষড়যন্ত্র, চড়াই-উৎরাই এবং ফ্যাসিস্ট শাসনামলের উচ্ছিষ্টভোগী ও সহযোগীদের চক্রান্ত ও বাধা অতিক্রম করে নোবেলজয়ী বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. ইউনূস এর নেতৃত্বে সরকার বিগত ৮ মাস যাবৎ দেশ পরিচালনা করছেন।

এ সরকারের কাছে দেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। অনেকগুলো এরই মধ্যে পূরণ হয়েছে। অনেকগুলো এখনও পূরণ হয়নি। তবে মোটা দাগে বলতে গেলে বাংলাদেশের মানুষ রাজনৈতিক হানাহানি, ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলা, দলীয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ছাত্র সংগঠনগুলোর তাণ্ডব, জবরদখল, ধর্ষণ, হত্যা, গুম, খুন, লুটতরাজের অবসান চেয়েছিল মানুষ। বিশেষ করে, জনপ্রত্যাশা ছিল যে, আইন-শৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদিও সরকার বারবারই বলেছেন এবং জনগণও অনুভব করেছে যে, স্বৈরাচারী হাসিনা এবং তার সহযোগীরা প্রতিমুহুর্তে ষড়যন্ত্র পরিচালনা করে যাচ্ছে এবং সরকারকে বিব্রত করার জন্য তারা সব ধরনের অপপ্রয়াস ও অপপ্রচার পরিচালনা করছে। দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির অশুভ পাঁয়তারা চলছে। কিন্তু এরপরও জনগণ এসব সংকট থেকে আশু পরিত্রাণ চায়।

সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জনগণকে খুশি ও সন্তুষ্ট রাখা। তবে একইসাথে জনগণেরও কিছু দায় আছে। কোনো সন্দেহ নেই যে, বাংলাদেশের মানুষের মাঝে বিগত বছরগুলোতে শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে। মানুষ উচ্চশিক্ষার দিকেও ঝুঁকেছে। মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়েছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে কিংবা চারপাশের ঘটে যাওয়া বাস্তবতায় এটিও প্রতীয়মাণ হয় যে, দেশের মানুষের নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ আশংকাজনকভাবে কমে গেছে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হয়েছেই তার প্রজ্ঞা, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের কারণে। তাই এসব ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো যদি হারিয়ে যায়, তাহলে শারীরিক আকৃতির দিক থেকে মানুষের অবয়বে থাকলেও তার কর্মকাণ্ড পাশবিক হয়ে যায়। যেমনটা সুরা আত তীনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, “আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি অতি উত্তম অবয়বে; তারপর তাকে নামিয়ে দিয়েছি নীচু থেকে নীচু স্তরে।”

নৈতিকতা বা মূল্যবোধের অবক্ষয় সংক্রান্ত সংকটকে অনেকেই অনুভব করলেও এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তেমন কোনো কার্যকর তৎপরতা এখনো সব মহলে দৃশ্যমান হচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয়সহ নানাবিধ স্তরে যত অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে এর একটি বড়ো অংশই হচ্ছে কেবলমাত্র নৈতিক স্খলন ও মূল্যবোধের অবক্ষয়জনিত কারণে। নৈতিকতাহীন মানুষের ছোড়া বিষাক্ত তীরে পরিবার ও সমাজ কাঠামো প্রতিনিয়তই জর্জরিত হচ্ছে। উন্নত মূল্যবোধে বেড়ে ওঠা কিছু মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, স্বজন কেন্দ্রিক ক্ষমতায়ন, দলান্ধ সুবিধা দান, বাহ্যিক চাকচিক্যের প্রতি আকর্ষণ এবং অপরের সাথে তুলনা করার মানসিকতা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র বড়ো ধরনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

কোনো সন্দেহ নেই, একজন ব্যক্তি যখন নৈতিক ও মূল্যবোধের জায়গা থেকে শূন্যতায় পড়ে যায় তখন সে সংস্কৃতিক বিকলাঙ্গে ও আধ্যাত্মিক দেউলিয়ায় পরিণত হয়। লজ্জা, মানবিকতা, আদব-আখলাক বা শিষ্টাচারের কিছুই তার ভেতর আর দৃশ্যমান থাকে না। ব্যক্তি তখন আত্ম অহমিকায় মশগুল হয়ে যায় এবং নিজেকে ছাড়া আর কারো বিষয় সে বিবেচনাই করতে চায় না। নিজেকে সে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের দায় থেকে মুক্ত হিসেবে বিবেচনা করে। কোনো ধরনের সামাজিক শৃংখল, পারিবারিক শৃংখলা ও নৈতিকতার নির্দেশনাকে সে পাত্তা দেয় না।

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ বিগত সাড়ে ১৫ বছরের আমলে রাজনৈতিকভাবে যেসব সংকট তৈরি করেছে, বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চালু করেছে এবং নিরীহ মানুষকে হয়রানির যে সিলসিলা চালু করেছে সেগুলো নিয়ে অনেক সময়ই আলোচনা হয়। কিন্তু সমাজের দিকে তাকালে যে করুণ চিত্রটি ফুটে ওঠে তাতে এমনটা বলাই যায় যে, আওয়ামী লীগ তার ফ্যাসিবাদী আমলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মন, মগজ, চিন্তাধারা ও অনুশীলন থেকে নৈতিকতাকে তুলে নিয়েছে। একটি উল্লেখযোগ্য মানুষকে স্বার্থপর, দলান্ধ ও লোভী দানবে পরিণত করে দিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যেমন দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে যেমন হিমশিম খাচ্ছে; এ আশংকাও ব্যক্ত করাই যায় যে, আগামীতে যে দলীয় সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবে, তাদের পক্ষেও দেশ শাসন করা খুব একটা সহজ হবে না।

আমাদের সমাজ কতটা পঁচে গেছে তার সর্বশেষ উদাহরণ হলো ৯ বছরের শিশু আছিয়ার হৃদয়বিদারক ও নৃশংস ধর্ষণের ঘটনা। শিশুটি গিয়েছিল তার বোনের বাসায়। তার বোনের ওপর ভগ্নিপতি ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ি প্রায়ই নির্যাতন করতো। আছিয়া যেদিন যায়, সেদিনও তার বোনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আছিয়ার মা। আছিয়া বোনের ওপর হওয়া এমন নির্মমতা সহ্য করতে পারেনি। সে হুমকি দিয়েছিল বাড়ি গিয়ে সে সবাইকে জানিয়ে দেবে যে, শ্বশুড়বাড়িতে তার বোনের ওপর কীভাবে নির্যাতন করা হয়।

এটিই হলো আছিয়ার ওপর আক্রোশের মূল কারণ। অভিযোগ উঠেছে, শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ করেছে তারই বোনের শ্বশুর। সাথে সহযোগী ছিল তার ভগ্নিপতি ও বোনের শাশুড়িসহ অনেকেই। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আছিয়ার মৃত্যুর পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, এ ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিচার শুরু হবে সাত দিনের মধ্যে। আছিয়ার পোস্টমর্টেম তারা পেয়েছেন। ডিএনএ স্যাম্পল কালেকশন করা হয়ে গেছে। পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়ার কথা আছে। এরই মধ্যে ১২-১৩ জনের ১৬১ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নেয়া হয়েছে। সরকার আশা করছেন, তারা আগামী সাত দিনের মধ্যে বিচার কাজ শুরু করতে পারবেন।

বিচার হয়তো সত্যিই হবে। কিন্তু তাতে কি আছিয়ার মতো শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে? এটি কি কেবলই সরকারের দায়? মানুষ হিসেবে যদি আমরা বর্বর মানসিকতা লালন করা অব্যহত রাখি তাহলে আছিয়াদের মতো শিশুদের হয়রানি ও নিপীড়ন কখনোই বন্ধ হবে? আমার খুব অবাক লাগে এ বিষয়টি ভাবলে যে, মানুষ হিসেবে কতটা নীচ ও হীণ প্রকৃতির হলে একজন পরিণত মানুষের মনে একটি শিশুকে ধর্ষণ করার চিন্তা জাগ্রত হতে পারে? তারপর আবার সে শিশুটি যদি হয় নিজেরই পুত্রবধূর ছোট বোন! কোনো আইন আদালত দিয়ে এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না যদি না সংশ্লিষ্ট মানুষের মধ্যে এই পাশবিকতা ও বিকৃত চিন্তাগুলোর অস্তিত্ব রয়ে যায়। আছিয়ার ঘটনা আরো একবার প্রমাণ করে দিলো যে, পিতামাতা ছাড়া শিশু সন্তানেরা বিশেষ করে নারী শিশুরা কারো হাতেই নিরাপদ নয়। আপনজন হওয়ার কারণেই যেন কারো ওপর অযাচিত আস্থা রাখা না হয়।

আছিয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়া সমাজের সকল মহলে হবে এটিই স্বাভাবিক। তবে যে বিষয়টি নিতান্তই দুঃখজনক তাহলো এ প্রতিক্রিয়ার মাঝেও রাজনৈতিক হিসেব-নিকেষ চলে এসেছে। অনেকেই এ ঘটনার মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা ও আওয়ামী লীগের আমলের সফলতা দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সহযোগীরা সরকার নিয়ে নানা ধরনের ট্রল করছে। এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। অথচ পরিবারের অভ্যন্তরে এই ধরনের হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেলে তার দায় অভিভাবকসহ দায়িত্বশীল মহলের। ঘরের ভেতরে শিশুর নিরাপত্তা বাইরের কেউ দিয়ে যেতে পারবে না। অভিভাবককেই তা নিশ্চিত করতে হবে। তাই এর মাঝে রাজনীতি টেনে আনা অমূলক। যদি রাজনীতি আনতেই হয়, তাহলে একটি দায় বিগত রাজনৈতিক সরকার অর্থাৎ আওয়ামী লীগের ওপর দেয়া যায়। আর তাহলো, ধর্মশিক্ষাকে বিলুপ্তপ্রায় করার দায়।

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে ধর্মশিক্ষাকে অনেকটাই অপাংক্তেয় করে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণী থেকে নৈতিকতা শিক্ষা নেওয়ার মতো কাহিনীগুলো বাদ দিয়ে আবোল তাবোল কিছু বিষয় জুড়ে দেয়া হয়েছে। শারীরিক শিক্ষার নামে শিশুদেরকে যৌন শিক্ষায় অভ্যস্ত করা হয়েছে। প্র্যাকটিকাল শিক্ষার নামে পরীক্ষা পদ্ধতি বাদ দিয়ে শিশুদের নিয়মিত পড়াশুনা করার মানসিকতাই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এলজিবিটি ও পুরুষ-নারীর রূপান্তর ইস্যুতে খুবই বিব্রতকর কিছু বিষয় জুড়ে দেয়া হয়েছে। হিন্দুরীতির প্রভাবে অনেকগুলো বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। পাঠকের স্মরণে থাকার কথা, এগুলো নিয়ে আওয়ামী আমলে মাঝে মাঝেই আন্দোলন হয়েছে, মানুষও তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, পত্রিকাগুলোতে সমালোচনামূলক কলাম লেখা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এর কোনো কিছুই আমলে না নিয়ে বরং তার বিজাতীয় সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার এজেন্ডা অব্যহত রেখেছে। এর খেসারত কেবল আমরা দিতে শুরু করেছি এবং আগামী অনেক বছর এ খেসারত দিয়ে যেতে হবে। কেননা গণমানুষের বড়ো একটি অংশ ধর্মীয় অনুভূতি ও অনুশীলন থেকে দীর্ঘসময় দূরে থাকায় মানবিক মূল্যবোধ লালন করার ক্ষেত্রে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা অতিক্রম করা খুব সহজ হবে না। অনেকগুলো প্রজন্মই বিজাতীয় শিক্ষা পদ্ধতির ভিকটিম হয়ে গেছে।

আবার কারো ভেতর যদি ধর্মীয় চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি শক্তিশালী অবস্থানে না থাকে তাহলে ধর্ম হয়ে যায় কেবলই আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। মানুষ তখন প্রকৃত ধর্ম অনুশীলনের চেয়ে লেবাস ধারনে বেশি আগ্রহী হয়ে যায়। এতে দুটো ক্ষতি হয়। প্রথমত, সমাজের মানুষের কাছে বাহ্যত তিনি একজন ধর্মানুরাগী হওয়ার পরও তার আচরণে সে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিফলিত না হলে সমাজের একটি অংশ ধর্ম নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। আর দ্বিতীয়ত যারা সেক্যুলার, তারা এ লেবাসধারী ব্যক্তিগুলোর সীমাবদ্ধতাগুলো সামনে নিয়ে এসে ধর্মকে সেকেলে, ও প্রগতির অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ পায়।

তাই ইসলামকে নিছক ধর্মীয় আচারাদি হিসেবে নয়, বরং মননে ও চেতনায় লালন করা জরুরি। ইসলামের যে নির্যাস, মানবিক যে চেতনা, সবাইকে নিয়ে চলার মতো যে অংশীদারিত্বমূলক বৈশিষ্ট্য সেগুলোকে বড়ো পরিসরে তুলে ধরার জন্য প্রয়াস থাকা দরকার। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ অনেক রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এখনও বহু মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসায় এবং অসুস্থতায় দিন অতিবাহিত করছেন। যাদের রক্তের ওপর দিয়ে এ অভ্যুত্থান, তাদের ঋণ যদি পরিশোধ করতেই হয় তাহলে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। ইসলামপন্থী রাজনীতিবিদেরা মানবিক বাংলাদেশের কথা বলছেন। কিন্তু যেভাবে কাজ করলে কিংবা যে কৌশল অবলম্বন করলে দেশটি মানবিক হয়ে উঠবে, তা অনুশীলনের ক্ষেত্রে আমাদের যথেষ্ট দুর্বলতা ও ঘাটতি রয়েছে। ধর্ম ও নৈতিকতাকে অগ্রাহ্য করে কখনোই মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

আছিয়ার মর্মান্তিক পরিণতি আমাদের চোখ, মন ও হৃদয়কে উন্মুক্ত করে দিক। আমরা সত্যকে ধারণ ও অনুধাবন করতে উজ্জীবিত ও উৎসাহিত হই। আর কোনো শিশুর পরিণতি যেন আছিয়ার মতো না হয়। আমাদের সবার ঘরেই অসংখ্য আছিয়া আছে; আমরা যেন তাদের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ রেখে যেতে পারি। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের দায়িত্বশীল ও ন্যায়নিষ্ঠ আচরণ কাম্য।