এবারের রোজার ঈদে জাতীয় ঈদগাহ’র ঈদের জামায়াতে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে গেছে। অন্তত বাংলাদেশে এরকম ঘটনা বেশ নজিরবিহীন। প্রথমত, দেশের প্রেসিডেন্ট সুস্থ শরীরে দেশে থাকার পরও জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে যাননি। অথচ সাধারণভাবে জাতীয় ঈদগাহে প্রেসিডেন্ট প্রধানতম আকর্ষণ হিসেবে উপস্থিত থাকেন। বিষয়টি আরো প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে এ কারণে যে, বাংলাদেশে ১৯৯১ সালের পর থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে নারীরাই অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাই ঈদগাহে প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি অনেকটা অপরিহার্য ছিল। কিন্তু এবার এ প্রথার ব্যত্যয় ঘটেছে। এবারের ঈদের জামায়াতে ঈদগাহে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস। তিনি সেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। নামাজে সমবেত হাজারো মানুষ তার হাতের একটু স্পর্শ পাওয়ার জন্য উন্মুখ ছিল। কিন্তু সব ছাপিয়ে যে বিষয়টি চোখে পড়েছে তাহলো, সবাই মোটামুটি একই সুরে এবং একই স্বরে বলে উঠেছিল, অন্তত ৫ বছর। অর্থাৎ তারা চান যে ড. মুহাম্মাদ ইউনূস অন্তত আরো ৫ বছর বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করুন।

যেখানে আমাদের দেশের সরকার প্রধানেরা ক্ষমতায় থাকার জন্য নানা ধরনের কূটচাল পরিচালনা করে থাকেন, দমন-পীড়ন চালিয়ে নিজেদের মসনদ ধরে রাখার চেষ্টা করেন, তিলকে তাল বানিয়ে সবকিছুকে অতিরঞ্জিত করেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়নের ধোঁয়াশা তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। সর্বোপরি মানুষের অসন্তোষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ক্ষমতা ধরে রাখেন, সেখানে জনগণই একটি সরকার প্রধানকে ক্ষমতায় থাকার জন্য অনুরোধ করছে- এটি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নিঃসন্দেহে একটি বিরল অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে আরো একবার যেন প্রমাণ হলো, আহামরি বাগাড়ম্বর না করেও কেবলমাত্র একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দেয়ার মাধ্যমেও মানুষকে জয় করে নেয়া যায়।

এ ঘটনার মধ্যদিয়ে আরো একটি বিষয়ও প্রমাণিত হয় তাহলো ইউনূস সরকারের সমর্থনে যথেষ্ট পরিমাণ জনমত রয়েছে। অনেক রাজনীতিবিদই নানা সময়ে ড. ইউনূসের সরকারের শক্তি ও বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাদের জন্য ঈদগাহের এ ঘটনায় বড়ো ধরনের বার্তা রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এরকম ঘটনা বেশ বিরল। ড. ইউনূস ঈদগাহে ঈদের নামাজপূর্ব বক্তব্যে নতুন বাংলাদেশ গঠনে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন, যত কষ্টই হোক না কেন, যতই বাধা আসুক না কেন, তিনি শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবেন।

তার কন্ঠে ও বডি ল্যাংগুয়েজের দৃঢ়তা সবাইকেই আশ্বস্ত করেছে। একথা ঠিক যে, ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হলেও পরবর্তীতে সে ঐক্য আর ধরে রাখা যায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়নে একে অপরের সাথে বিরোধে ও বিবাদে লিপ্ত হয়েছে। নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। দলীয় কর্মীরা অনলাইনে অন্য দলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে আছেন। এর মধ্যে যে বিষয়টি আরো পীড়া দিয়েছে তা হলো, প্রতিটি রাজনৈতিক দলই এবারের রমযানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল। আয়োজনগুলোতে কিছু দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন আবার কিছু দলের প্রতিনিধিরা এড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু প্রথাগতভাবে ইফতার মাহফিলের আয়োজন হলেও বাস্তবে দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব আগে থেকেই তৈরি হয়েছিল তা এ রমযান মাসে এসেও লাঘব করা যায়নি। বিষয়টি দু:খজনকই বলতে হবে।

এবারের রোজার ঈদের আরেকটি তাৎপর্যও ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় যে ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন তাদের অনুপস্থিতিতে তাদের পরিবারগুলোর জন্য এবারই প্রথম ঈদ। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশের জন্যেও এবারই প্রথম ঈদ। তাই এবারের ঈদে শহীদদের প্রতি দায়বদ্ধতা পূরণ করার একটি দায়ও ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের সবগুলো রাজনৈতিক দল এবারের ঈদে সেভাবে শহীদগণের পরিবারগুলোর সাথে থাকতে পারেনি। সবগুলো দল এ কাজটি করতে আগ্রহী ছিল বলেও মনে হয়নি; বরং কোনো কোনো দলের ক্ষেত্রে মনে হয়েছে, তারা জুলাই অভ্যুত্থান ও অভ্যুত্থানের শহীদদেরকে নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ধরে নিয়েছেন।

এবারের ঈদে সবচেয়ে সক্রিয়ভাবে শহীদ পরিবারের সাথে ছিলেন জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা। জামায়াতের আমীর চাঁদ রাত থেকে শুরু করে ঈদের দিন ও পরের দিন ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ৩২টি শহীদ পরিবারের কাছে গিয়েছেন। ছাত্রশিবিরের নেতারাও সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগতভাবে শহীদদের পরিবারগুলোর সান্নিধ্যে সময় কাটিয়েছেন। অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠা জাতীয় নাগরিক কমিটি বা এনসিপির নেতৃবৃন্দও শহীদগণের পরিবারের সাথে সময় অতিবাহিত করেছেন। তারা জুরাইন কবরস্থানে গিয়ে জিয়ারত করেছেন। দেশের বিভিন্নস্থানে ঈদ পালনকারী এনসিপির নেতারাও স্থানীয় পর্যায়ে শহীদগণের বাসায় গিয়েছেন। এর বাইরে এবি পার্টিসহ আরো দু’একটি বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও ফোরামের সদস্যদেরকেও শহীদদের খোঁজ নিতে দেখা গেছে।

শহীদদের পরিবারের সান্নিধ্যে কাটানোর কথা এত স্পষ্ট করে বলছি কেননা শহীদদের প্রতি একটি দায়বদ্ধতা এর ভেতর দিয়ে প্রকাশিত হয়। শহীদদের পরিবারের কাছে যারা যাবেন, কিংবা যারা বিধবা, এতিম সন্তান কিংবা অসহায় বাবা-মায়ের চোখের দিকে তাকাবেন, তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন- তারা কখনোই এ মানুষগুলোর প্রতি দায়িত্ব ভুলে যেতে পারবেন না। শহীদদের পরিবারগুলোর প্রথম এবং সবচেয়ে বড়ো আকুতি হলো এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার পাওয়া। তাদের মূল চাওয়া হলো- তাদের আপনজনকে যে বা যারা পাশবিকভাবে হত্যা করেছে তাদেরকে যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হয়। এমতাবস্থায়, জুলাই অভ্যুত্থানের পটভূমিতে দায়িত্ব নেয়া অন্তর্বর্তী সরকার এবং নতুন বাংলাদেশে স্বস্তিতে বসবাসকারী সব নাগরিকেরই প্রধান দায় হলো জুলাই-আগষ্টের খুনীদের বিচার নিশ্চিত করা।

এখানে আরেকটি বাস্তবতাও স্মরণে রাখা জরুরি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে দাবিগুলো উঠেছিল কিংবা দেয়ালে দেয়ালে যে গ্রাফিতিগুলো আঁকা হয়েছিল সেগুলোর কোনোটাতেই শুধুমাত্র নির্বাচনের কথা ছিল না; বরং তাদের আরো অনেক দাবি ও চিন্তাধারা অংকনগুলোতে উপস্থাপিত হয়েছিল। মোটা দাগে যদি বলা যায়, আন্দোলনে ত্যাগ স্বীকারকারী অগণিত মানুষের প্রধান দাবি ছিল দেশ যেন ফ্যাসিবাদমুক্ত হয় এবং ভবিষ্যতে অন্য কোনো দল বা সরকার যেন আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিস্ট দানবে পরিণত না হয়। এ বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রস্তাবনা হলো, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সংকুচিত করা, দু’মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন না করা, জনগণের সম্মানজনক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, গণতন্ত্রকে সংহত করা, বিদেশি পরাশক্তির প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত রাখা, বিভিন্ন বাহিনীর সংস্কার করা, গুম খুনের বন্ধ নিশ্চিত করা, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করা, নির্বাচনে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব হ্রাস করা প্রভৃতি।

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক সব দলই সংস্কারগুলো করতে আগ্রহী ছিল। তখন তাদের প্রতি বিপ্লবের নায়কদের প্রতি এক ধরনের কৃতজ্ঞতাও ছিল। কিন্তু যতদিন গেছে সে মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। দেশের ও শহীদদের প্রতি দায়বদ্ধতার স্থলে জায়গা করে নিয়েছে দলীয় সংকীর্ণ মানসিকতা ও দলীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রবণতা। ফলে দলগুলো সংস্কারের বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, অভ্যুত্থানের নায়কদের হেয় করা, সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করা এবং সর্বোপরি সংস্কারের জন্য ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেট নিয়ে প্রশ্ন তোলা- সবটাই এখন দৃশ্যমান। টেলিভিশনে টকশোগুলোতে কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর সভা সমাবেশে রাজনীতিবিদদের আন্তরিতার অভাবটি এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই ভুলে যেতে বসেছেন যে, একটানা সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী আমলে তারা কতটা নিগৃহীত অবস্থায় ছিলেন এবং ছাত্ররা এ অভ্যুত্থান না ঘটালে হয়তো আরো লম্বা সময় তাদেরকে এভাবেই থাকতে হতো।

বড়ো বড়ো রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাকর্মীকেই এখন আবার প্রথাগত অপকর্মে জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের সাথেও সম্পৃক্ততার অভিযোগ মিলছে। এসবই দেশের মানুষকে নতুন করে শংকায় ফেলছে। আবারও কি ভিন্ন কোনো মোড়কে ফ্যাসিবাদ ফিরতে যাচ্ছে কিনা সে ভয়ও তাদেরকে পেয়ে বসছে। কারণ, রাজনীতিবিদরা যখন সংস্কারের বিষয়ে আগ্রহ দেখান না, কিংবা প্রস্তাবিত সংস্কারের ব্যাপারে আপত্তি দিয়ে বসেন, অথবা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস করতে অনীহা দেখান তখন আবারও ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তনের পথ আপনাতেই সুগম হয়ে যায়। বিশেষ করে, বিএনপির মতো বড়ো দলের পক্ষ থেকে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে আপত্তি এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণে অনাগ্রহ দৃশ্যমান হওয়ায় জনমনে নানা ধরনের সংশয় ও আশংকার জন্ম হয়েছে।

এমনটা হতে দেয়া যাবে না। কারণ দু’হাজারের বেশি মানুষের শাহাদাত এবং দশ হাজারের বেশি মানুষের আহত হওয়ার বিনিময়ে আমাদের দেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। অনেক আহত ব্যক্তি এখনো হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। রক্তের দাগ শুকোয়নি এখনো। এমতাবস্থায় জুলাই বিপ্লবের চেতনার একদম বিপরীতে অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই; বরং শহীদদের প্রতি দায়বদ্ধতা বারবারই সুনিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সবগুলো দলকে নিয়মিতভাবে শহীদদের পরিবারের সান্নিধ্যে যাওয়ার চেষ্টা করা আবশ্যক। শহীদেরা কোনো দলের নয়। তারা দেশের সম্পদ। যে কেউ তাদের কাছে যেতে পারেন। কিন্তু শহীদদের এড়িয়ে যাওয়ার কৌশলটি দেশের মানুষের কাছে কূটকৌশল বলেই বিবেচিত হবে। কিছুদিনের মধ্যে আসছে কুরবানির ঈদ। এবারের রোজার ঈদে যে দলগুলো শহীদ পরিবারগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারেননি, আমরা আশা করি আগামী ঈদে তারা সে কাজটি সুসম্পন্ন করবেন। কারণ, জুলাই বিপ্লব, বিপ্লবের চেতনা ও শহীদদের পাশ কাটিয়ে কোনো রাজনীতি নতুন বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

শহীদ পরিবারগুলোর প্রত্যাশা অনুযায়ী বিচার এবং জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার আলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরই নির্বাচন করলে তাতে মানুষ সন্তুষ্ট হবে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবেন। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। গুরুত্বপূর্ণ সব সংস্কারই হয়তো অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। তবে নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য যতগুলো সংস্কারের প্রয়োজন হয় তা এ সরকারকে নিশ্চিত করতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী আমলের সেটাপে নির্বাচন করা হলে তাতে জনগণের আস্থা ফিরবে না এবং তারা সে নির্বাচনে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ পাবেন না। তাই যদি জনগণকে আস্থায় নিতেই হয়, তাহলে ভোটকেন্দ্রে ভোটার ফিরিয়ে আনার মতো সংস্কারগুলো করতেই হবে।

মনে রাখতে হবে, তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। সে করুণ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি কেউ দেখতে চায় না। তবে ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে নেয়ার বিষয়টি এত সহজও নয়। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা থেকে শুরু করে একটি প্রভাবমুক্ত নির্বাচন আয়োজন করার জন্য যা যা করা অত্যবশ্যকীয়; এর কোনোটাতেই ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। জনগণের সাথে বহুবার প্রতারণা করা হয়েছে। রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক সরকারের প্রতিশ্রুতিতে জনগণ অনেকবারই প্রবঞ্চিত হয়েছে। এমন ঘটনা আবারও ঘটুক, এত বড়ো একটি বিপ্লবের পর তা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। আমরা আশা করবো, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনা সমুন্নত রাখার চেষ্টা করবেন। দেশকে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাখবেন। আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবেন। দেশের মানুষকে পুনরায় নির্বাচনের প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করবেন। এ মুহূর্তে সবার আগে দরকার ফ্যাসিস্ট সরকারের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার। এরপর প্রয়োজনীয় সংস্কার আর এরপরই আমরা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চাই।